বাবুগঞ্জ উপজেলার একটি আমন ধানখেত

বরিশাল জেলায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৬৯৫ হেক্টর বেশি জমিতে রোপা-আমনের আবাদ হয়েছে। একইসঙ্গে গত বছর নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৩৫ হেক্টর জমিতে বেশি আবাদ হয়। আর এ বছর গত বছরের তুলনায় ১৬০ হেক্টর জমিতে বেশি আবাদ হয়েছে বলে জানিয়েছে বরিশাল কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর খামার বাড়ির উপপরিচালকের কার্যালয়।

অপরিকল্পিতভাবে ফসলি জমিতে ভবন নির্মাণ, কারখানা প্রতিষ্ঠা ও ফসলি জমি কিনে প্লট বানিয়ে বিক্রির ফলে দিনদিন যে হারে কৃষি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে সেই সময়ে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি আবাদের বিষয়টি ইতিবাচক বলছে কৃষি অধিদফতর। আর চলতি মৌসুমে প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে রোপা-আমন চাষে লাভবান হবেন কৃষক।

চাষও ভালো হয়েছে উল্লেখ করে বাবুগঞ্জ উপজেলার চাঁদপাশা ইউনিয়নের ঘটকেরচর গ্রামের কৃষক বাবুল হাওলাদার বলেন, আমি ২০ শতক জমিতে আমন ধান চাষ করেছি। সার, বীজ, কীটনাশক, ক্ষেত প্রস্তুত ও বিবিধ খরচ মিলিয়ে প্রায় ৪ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। আশা করছি ৯/১০ মণ ধান তুলতে পারব। বর্তমানে বাজারে প্রতি মণ ধান সর্বোচ্চ ১ হাজার টাকায় বিক্রি হয়। দুর্যোগের কবলে না পড়লে আশা করছি ভালো ফলন ঘরে তুলতে পারব।

প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে রোপা-আমন চাষে লাভবান হবেন কৃষক

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের শরৎকালীন (২০২১-২২) ফসল উৎপাদনের প্রতিবেদনে জানা গেছে,  রোপা-আমনের মধ্যে দুটি জাত রয়েছে। এরমধ্যে একটি উচ্চ ফলনশীল (উফশী), অপরটি স্থানীয় জাতের আমন ধান। বরিশালের ১০টি উপজেলায় রোপা-আমন আবাদের মোট লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ১ লাখ ২৪ হাজার ১৫০ হেক্টর।

আবাদ হয়েছে ১ লাখ ২৪ হাজার ৮৪৫ হেক্টর। যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৬৯৫ হেক্টর বেশি। ২০২০-২১ অর্থ বছরে মোট লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ১ লাখ ২৪ হাজার ৬৫০ হেক্টর। বিপরীতে মোট আবাদ হয় ১ লাখ ২৪ হাজার ৬৮৫ হেক্টর।

বাবুগঞ্জ উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা শাহ মো. আরিফুল ইসলাম বলেন, কর্মকর্তাদের নির্দেশনা মোতাবেক আমরা কৃষকের যেন কোনো সমস্যা না হয় এজন্য সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রক্ষা করে চলছি। আমরা কৃষকদের মাত্রাতিরিক্ত সার, কীটনাশক প্রয়োগে নিষেধ ও সচেতন করছি। বিপরীতে আলোক ফাঁদ পদ্ধতিতে পোকামাকড় দমনে উদ্বুদ্ধ করছি।

যদিও বাৎসরিক ফসল উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা কৃষকদের সঙ্গে আলোচনা করে ঠিক করা হয় না বলে স্বীকার করেছেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের কর্মকর্তারা। তারা জানিয়েছেন, উৎপাদিত ফসলের ওপর অনুমাননির্ভর প্রতি বছর লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়।

বরিশাল কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক (শস্য) সাবিনা ইয়াসমিন জানান, এ বছর আবাদ এবং ফলন উভয়ই বেশি। প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে কৃষক বেশ লাভবান হবে এবং দেশের খাদ্য চাহিদা পূরলে বরিশাল উল্লেখযোগ্যজনক ভূমিকা রাখতে পারবে।

সৈয়দ মেহেদী হাসান/এমএসআর