রাজশাহীতে শ্রদ্ধায় জাতীয় চার নেতাকে স্মরণ
গভীর শোক ও শ্রদ্ধায় জাতীয় চার নেতাকে স্মরণ করছে রাজশাহীবাসী। জেলহত্যা দিবসে বুধবার (৩ নভেম্বর) সকাল থেকে পালিত হচ্ছে নানান কর্মসূচি।
আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনগুলো ইতিহাসের কলঙ্কময় দিনটি পালন করেছে। এ নিয়ে আলাদা কর্মসূচি পালন করছে রাজশাহী সিটি করপোরেশন। নগরীর বিভিন্ন সরকারি, স্বায়ত্বশাসিত ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানও নানান কর্মসূচিতে পালন করছে দিবসটি।
বিজ্ঞাপন
সকালে নগরীর কুমারপাড়ায় দলীয় কার্যালয়ের পাশে স্বাধীনতা চত্ত্বরে বঙ্গবন্ধু জাতীয় চার নেতার প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানায় নগর আওয়ামী লীগ। পরে দলীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে বের হয় শোক র্যালি।
র্যালিটি নগরীর গুরুত্বপূর্ণ সড়ক ঘুরে নগরীর কাদিরগঞ্জে জাতীয় চার নেতার অন্যতম শহীদ এএইচএম কামারুজ্জামানের সমাধি ক্ষেত্রে গিয়ে শেষ হয়। পরে শহীদ কামারুজ্জামানের সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা।
বিজ্ঞাপন
শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সেখানে আওয়ামী লীগের উদ্যোগে আলোচনা সভা, কোরআন খানী ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ কর্মসূচিতে নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকারসহ দলীয় বিভিন্ন পর্যায়ে নেতাকর্মীরা অংশ নেন।
দিবসটি উপলক্ষে দুপুরে নগর আওয়ামী লীগ বিভিন্ন পয়েন্টে দুস্থদের মাঝে খাবার বিতরণ করে। খাবার বিতরণ করা হয় নগরীর ৩০টি মাদরাসায়।
এর আগে সকালে শহীদ এএইচম কামারুজ্জামানের সমাধিতে শ্রদ্ধা জানিয়েছে রাজশাহী সিটি করপোরেশন। নগর ভবনের সামনে থেকে শোক র্যালি নিয়ে শহীদের সমাধিক্ষেত্রে যান রাসিক কাউন্সিলর, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা। র্যালিতে নেতৃত্ব দেন শহীদপুত্র ও রাসিক মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন। শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সেখানে দোয়া ও মোনাজাত হয়।
এ কর্মসূচিতে অংশ নেন শহীদ কামারুজ্জামান পরিবারের সদস্য নগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি সমাজসেবী শাহীন আকতার রেনী, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ বিষয়ক উপ-কমিটি ও রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ডা. আনিকা ফারিহা জামান অর্ণা, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রপ সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি বিভাগের প্রভাষক মো. রেজভী আহমেদ ভূঁইয়া।
আলোচনা সভায় আরো বক্তব্য দেন বিএমডিএ চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য বেগম আখতার জাহান, জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অনিল কুমার সরকার। সভার সঞ্চালনা করেন রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকার।
সভায় রাসিক মেয়র খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু ও তর পরিবারের সদস্যদের এবং ৩রা নভেম্বর জাতীয় চার নেতাকে বিশেষ একটি উদ্দেশ্য নিয়েই স্বাধীনতা বিরোধী চক্ররা নির্মমভাবে হত্যা করেছিল। বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার পর ঘাতকরা মনে করেছিল, বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ চার সহযোগী জাতীয় চার নেতাকে হত্যা করা না হলে খুনিদের হীন উদ্দেশ্য বাস্তবায়ন হবে না, দেশ থেকে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ মুছে ফেলা যাবে না।
দেশ থেকে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও দেশের স্বাধীনতাকে মুছে ফেলতে বঙ্গবন্ধু ও জাতীয় চার নেতাকে নির্মমভাবে হত্যা করে দেশের স্বাধীনতা বিরোধী ঘাতকরা। তবে ঘাতকদের সেই অপচেষ্টা বাস্তবায়ন হয়নি। দিন যত যাচ্ছে বঙ্গবন্ধু ও জাতীয় চার নেতার প্রতি মানুষের ভালোবাসা ততই বাড়ছে।
এদিকে জেল হত্যা দিবস উপলক্ষে সকাল থেকে শহীদ এ.এইচ.এম কামারুজ্জামানের কবরে শ্রদ্ধা জানাতে জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, প্রশাসনের কর্মকর্তা, সরকারি কর্মকর্তা, শিক্ষক-শির্ক্ষাথীসহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষের ঢল নামে।
শহীদ কামারুজ্জামানের কবরে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও বিএমডিএ চেয়ারম্যান আখতার জাহান, রাজশাহী-৩ আসনের সাংসদ আয়েন উদ্দিন, রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সকল থানা ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠন, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, স্বেচ্ছাসেবকলীগ, শ্রমিক লীগ, যুব মহিলা লীগ, তাঁতী লীগ, জেলা আওয়ামী লীগ, জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক নেতৃবৃন্দ, রাজশাহী মহানগর, রাবি ও রুয়েট ও রামেক শাখা ছাত্রলীগ, সাবেক ছাত্রলীগ ফোরাম, বঙ্গবন্ধু প্রকৌশল পরিষদ, জেলা ক্রীড়া সংস্থা, মহানগর ওয়াকার্স পার্টি, রেলওয়ে শ্রমিক লীগ, মহানগর ও জেলা জাসদ, পুঠিয়া ও চারঘাট উপজেলা চেয়ারম্যান, চারঘাট পৌরসভা মেয়র, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী কলেজ, শিক্ষাবোর্ড মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজ, শহীদ কামারুজ্জামান ডিগ্রি কলেজ, রাবি ও রুয়েটের উপাচার্য ও কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ, সরকারি ও বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষার্থীবৃন্দ ও রাজশাহী মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
এর আগে সকালে শহীদ কামারুজ্জামানের কবরে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার মো. হুমায়ুন কবীর, রাজশাহী রেঞ্জের ডিআইজি মো. আব্দুল বাতেন মহানগর পুলিশ কমিশনার আবু কালাম সিদ্দিক, জেলা প্রশাসক আব্দুল জলিল, জেলা পুলিশ সুপার এবিএম মাসুদ হোসেন, বিভাগীয় পরিচালক (স্বাস্থ্য), সিভিল সার্জন, রাজশাহী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, রাজশাহী ওয়াসা, রাজশাহী মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ড, রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক, এডভোকেট আব্দুস সালাম টেনিস কমপ্লেক্স, বরেন্দ্র রির্সাচ মিউজিয়াম, সহ বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি অফিসের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ।
ফেরদৌস সিদ্দিকী/এমএএস