দুর্নীতির অভিযোগে বেনাপোল কাস্টম হাউসের বর্তমান ও সাবেক কমিশনারসহ কাস্টম ও বন্দরের ৩২ জন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগ করা হয়েছে। রোববার (৭ নভেম্বর) বেনাপোলের সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট মেসার্স সাগর এন্টারপ্রাইজের মালিক আকবর আলী বাদী হয়ে এ অভিযোগ করেন।

যশোরের সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতের বিচারক ইখতিয়ারুল ইসলাম মল্লিক দুর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক) অভিযোগ তদন্ত করে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। 

আসামিরা হলেন- বেনাপোল কাস্টমস কমিশনার আজিজুর রহমান, সাবেক কমিশনার বেলাল হুসাইন চৌধুরী, অতিরিক্ত কমিশনার ড. নেয়ামুল ইসলাম, বর্তমান উপকমিশনার এসএম শামীমুর রহমান, বিল্লাল হোসেন, পারভেজ রেজা চৌধুরী, অনুপম চাকমা, সহকারী উত্তম চাকমা, দিপারাণী হালদার, মুর্শিদা খাতুন, এইচ এম আহসানুল কবীর, সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা (কার্গো শাখা) শামিম হুসাইন, কামাল হোসেন, নূরে আলম, জিএম আশরাফুল আলম, বিকাশ চন্দ্র মন্ডল, সাজেদুর রহমান, সাখাওয়াত হোসাইন, এসএম মেজবাহ উদ্দিন, রাজস্ব কর্মকর্তা নূর মোহাম্মদ, মৃণাল কান্তি সরকার, স্বপন কুমার দাস, এসএম আজিজুর রহমান, এসএম বদিউজ্জামান, বেনাপোল বন্দরের উপপরিচালক (ট্রাফিক) আবদুল জলিল, মামুন তরফদার, সহকারী পরিচালক আতিকুর রহমান, লাকি বেগম, উপসহকারী পরিচালক (যান্ত্রিক) শিমরান হোসেন, ওয়্যার হাউসের সুপারিনটেন্ডেন্ট আবু রাসেল ও কম্পিউটার অপারেটর রনি কুমার বসাক।

মামলায় বলা হয়েছে, ঢাকার মিরপুরের সোহেল এন্টারপ্রাইজ ২০১৯ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর ১৩৮ প্যাকেট গামেন্টস পণ্যসহ অন্যান্য পণ্য আমদানি করে। আমদানি পণ্য ভারতীয় কাস্টম ৩ হাজার ২৭৯ দশমিক ৪০ কেজি ঘোষণা দিয়ে এদেশে পাঠায়। এরপর সেটি বেনাপোল বন্দরের এক নম্বর শেডে রাখা হয়। ৭ নম্বর আসামি সহকারী কমিশনার দিপা রাণী হালদারের নেতৃতে একটি টিম শেডে রাখা পণ্য পরীক্ষা করেন। সেখানে অতিরিক্ত কোনো পণ্য পাওয়া যায়নি। 

ওই বছরের ২৬ সেপ্টেম্বর কাস্টম কর্মকর্তা কোনো কিছু না জানিয়ে কারণ দর্শান। নোটিশের জবাব দেওয়ার পরও ৩ হাজার ৬৭২ কেজি পণ্য দেখিয়ে একটি প্রতিবেদন দিয়ে শুল্কায়নের প্রস্তাব করেন। এ ঘটনায় তৎকালীন কমিশনার বেলাল হুসাইন আমদানিকারককে মোট ৪ লাখ টাকা জরিমানা করেন। এরপর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট ও আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান চলতি বছরের ৫ আগস্ট পণ্য খালাসের আবেদন করেও পণ্য নিতে পারেননি। একই সঙ্গে মেসার্স সাগর এন্টারপ্রাইজের সিঅ্যান্ডএফ লাইসেন্স বাতিল করেন। এর আগে ৩ নম্বর আসামি নেয়ামুল ইসলাম পণ্য খালাসের কথা বলে ৩ লাখ গ্রহণ করেন। একই সঙ্গে লাইসেন্স অবমুক্ত করার জন্য ২ লাখ ঘুষ দাবি করেন। আসামিরা দুর্নীতির মাধ্যমে লাভবান হতে পণ্য খালাসে বাধা ও লাইসেন্স বাতিল করে আর্থিকভাবে বাদীর ক্ষতি করেছেন।

এ ব্যাপারে বেনাপোল কাস্টম হাউসের তৎকালীন অতিরিক্ত কমিশনার নেয়ামুল ইসলাম জানান, শুল্ক ফাঁকির অভিযোগে সাগর এন্টারপ্রাইজের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল। লাইসেন্স ফিরে পাওয়ার অপকৌশল হিসেবে এই মামলা করা হয়েছে। 

জাহিদ হাসান/আরএআর