রকিবুল হাসান

মুন্সিগঞ্জের শ্রীনগরের আটপাড়া ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী রকিবুল হাসান ৯টি কেন্দ্রে ভোট পেয়েছেন ১২১টি। এই ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী ফজলুর রহমান ৫ হাজার ৬৩২ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান আয়ূব খান পেয়েছেন ৩ হাজার ৯০৮ ভোট। এই ইউনিয়নে মোট প্রাপ্ত ভোট ৯ হাজার ৯৫৪।

গতকাল শুক্রবার উপজেলা নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা গেছে, আটপাড়া ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীর চেয়ে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মনোনীত প্রার্থী বেশী ভোট পেয়েছেন। এখানে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মনোনীত প্রার্থী শফিকুল হোসেন পেয়েছেন ১৬৫ ভোট।

আওয়ামী লীগের প্রার্থী রকিবুল হাসান আটপাড়া ইউনিয়নের পূর্ব দেউলভোগ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ১৩ ভোট, তার নিজের কেন্দ্র কল্লিগাও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৩৬ ভোট, বেলতলী ফোরকানিয়া মাদরাসা কেন্দ্রে ১৬ ভোট, দেওপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ৫ ভোট পেয়েছেন।

এছাড়া পশ্চিম আটপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ৪ ভোট, পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্রে ১১ ভোট, বাড়ৈগাও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ১৫ ভোট, তারাটিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ৪ ভোট, হাঁসাড়গাও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ১৭ ভোট পেয়েছেন।

এদিকে আটপাড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল হাই শিকদারের কেন্দ্রে দলটির মনোনীত প্রার্থী পেয়েছেন ৪ ভোট। আটপাড়া ইউনিয়নে ক্ষমতাসীন এই দলটি ও সহযোগী সংগঠনের ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন কমিটি মিলে আসলে সদস্য সংখ্যা কত? এই প্রশ্ন এখন সর্বত্র।

স্থানীয় বিশ্লেষকদের মতে, শুধু আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের সদস্যরা ভোট দিলেও ভোটের সংখ্যা ১২১ ছাড়িয়ে যাওয়ার কথা। তার ওপর তার পরিবার পরিজনতো রয়েছে। প্রার্থী পছন্দ না হলে আওয়ামী লীগ তাদের প্রেরিত তালিকায় তার নাম পাঠিয়েছিল কেন? এই প্রশ্ন এখন জনমনে।

রকিবুল হাসানের এমন ভরাডুবির পেছনের কারণ অনুসন্ধান করতে গিয়ে জানা গেছে, রকিবুল হাসান আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাবেন তা ছিল ধারণাতীত। এখান থেকে দলটির সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন ও বিদ্রোহী প্রার্থী ফজলুর রহমানের নাম পাঠানো হয়েছিল।

তাদেরকে বাদ দিয়ে মনোনয়ন দেওয়া হয় রকিবুল হাসানকে। তিনি নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত ছিলেন না। অনেকটা কাকতালীয়ভাবে নৌকা পেলেও তিনি নৌকার নেতাকর্মীদের পাশে পাননি। তারা দলীয় পদ রক্ষার জন্য পথসভায় উপস্থিত হয়েছেন। ভোট দেওয়ার ক্ষেত্রে বেছে নিয়েছেন অন্য প্রার্থীদের।

তবে তৃণমূল আওয়ামী লীগের অনেকের ধারণা, ভোটের আগে রকিবুল হাসান অন্য প্রার্থীর সঙ্গে হাত মিলিয়ে নির্বাচনের হাল ছেড়ে দেন। কিন্তু এই ধারণার কোনো সত্যতা পাওয়া যায়নি।

শ্রীনগর উপজেলা নির্বাচন অফিসার রফিকুল ইসলাম বলেন, নিয়ম অনুযায়ী মোট ভোটের ১২ শতাংশ ভোট না পেলে নিয়ম অনুযায়ী ওই প্রার্থীর জামানত বাজেয়াপ্ত হবে। এদিকে দ্বিতীয় ধাপে শ্রীনগর উপজেলার মোট ১৪ ইউপির নির্বাচনে ৯টিতে স্বতন্ত্র ও পাঁচটিতে নৌকা জয় পেয়েছে।

ব ম শামীম/এমএসআর