কথাসাহিত্যিক হাসান আজিজুল হকের মৃত্যুতে শোকের সাগরে রূপ নিয়েছে তার বাসস্থান ‘উজান’। রাতের আঁধার ছাপিয়ে গেছে প্রিয়জন হারানোর শোক। দরজায় নুয়ে পড়েছে প্রিয় বাগান বিলাস।

বিভিন্ন জায়গা থেকে আসা সহকর্মী, স্বজন, শিক্ষার্থী, ভক্ত এবং শুভাকাঙ্ক্ষীদের ভিড় এখন উজানে। মানুষের কমতি না থাকলেও কারো মুখে কথা নেই।

নগরীর চৌদ্দপায় এলাকায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের হাউজিং সোসাইটি বিহাস। এখানেই নিবাস গড়েছিলেন উপমহাদেশের প্রখ্যাত এই কথাসাহিত্যিক। বাড়ির নাম দিয়েছিলেন ‘উজান’। স্ত্রী, তিন কন্যা ও এক পুত্র নিয়ে জীবনের বহু বসন্ত এখানেই কাটিয়েছেন তিনি। এখানেই সাহিত্য চর্চা করে গেছেন গুণী এই কথাসাহিত্যিক।

এর আগে সোমবার (১৫ নভেম্বর) রাত সোয়া ৯টার দিকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক এলাকায় নিজ বাসায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন আজিজুল হক।

মৃত্যুকালে হাসান আজিজুল হকের বয়স হয়েছিল ৮২ বছর। তিন কন্যা ও এক পুত্র সন্তানের জনক তিনি। গুণী এই কথাসাহিত্যিকের মৃত্যুর সংবাদে তার বাসায় পৌঁছেছেন স্বজন ও শুভাকাঙ্ক্ষীরা।

বার্ধক্যজনিত সমস্যা ছাড়াও হৃদরোগ, ডায়াবেটিস এবং হাইপোন্যাট্রিমিয়ায় ভুগছিলেন তিনি। সম্প্রতি তিনি একেবারে নিস্তেজ হয়ে পড়েন। চিন্তা ও স্মৃতিশক্তি কমে যায়।

গত ২১ আগস্ট উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে ঢাকায় নেওয়া হয়। একটানা ১৯ দিন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে (বিএসএমএমইউ) চিকিৎসার পর ১০ সেপ্টেম্বর নিজ বাসায় ফেরেন। সেখানেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন গুণী এই কথাসাহিত্যিক।

১৯৩৯ সালের ২ ফেব্রুয়ারি ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার যবগ্রামে জন্মগ্রহণ করেন হাসান আজিজুল হক। তিনি ১৯৭৩ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগে অধ্যাপক হিসেবে যোগদান করেন। ২০০৪ সাল পর্যন্ত  সেখানে তিনি অধ্যাপনা করেন।

১৯৭০ সালে বাংলা একাডেমি পুরস্কারলাভ করেন হাসান আজিজুল হক। এছাড়া ১৯৯৯ সালে একুশে পদক এবং ২০১৯ সালে স্বাধীনতা পুরস্কারসহ বহু পুরস্কারে ভূষিত হন তিনি।

ফেরদৌস সিদ্দিকী/এমএইচএস