মোংলায় নিখোঁজ ৫ নাবিকের দুজনের মরদেহ উদ্ধার
বাগেরহাটের মোংলা বন্দরে এমভি ফারদিন-১ নামে কয়লাবোঝাই কার্গো জাহাজডুবির ঘটনায় ৫ নাবিকের মধ্যে ২ জনের মরদেহ উদ্ধার করেছে কোস্টগার্ড। কার্গোডুবির প্রায় ২১ ঘণ্টা পর মঙ্গলবার (১৬ নভেম্বর) সন্ধ্যায় বন্দর চ্যানেলের হারবাড়িায়া-৯ নম্বর বয়া এলাকা থেকে তাদের মরদেহ উদ্ধার করে কোস্টগার্ডের উদ্ধারকারী দল। নিহতদের মোংলা থানায় নেওয়ার প্রস্তুতি চলছে।
মোংলা থানায় পৌঁছানোর পরে জীবিত উদ্ধার হওয়া নাবিকদের মাধ্যমে মৃত নাবিকদের পরিচয় নিশ্চিতের চেষ্টা করা হবে বলে জানিয়েছেন কোস্টগার্ড পশ্চিম জোন, মোংলার গোয়েন্দা কর্মকর্তা লে. লেফটেন্যান্ট কমান্ডার মো. হাসানুজ্জামান।
বিজ্ঞাপন
তিনি বলেন, খরব পেয়ে সোমবার রাতেই কোস্টগার্ডের সদস্যরা ওই এলাকায় পৌঁছান। নিখোঁজ পাঁচ নাবিকের মধ্যে আমরা দুই জনের মরদেহ উদ্ধার করেছি। এখনো তিন নাবিক নিখোঁজ রয়েছেন। তাদের উদ্ধারে কোস্টগার্ডের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
এদিকে মঙ্গলবার বিকেল পর্যন্ত ডুবে যাওয়া জাহাজ উদ্ধারে কাজ শুরু করেনি মালিকপক্ষ।
বিজ্ঞাপন
সোমবার (১৫ নভেম্বর) রাত সাড়ে ৯টায় বন্দরের হারবাড়িয়া-৯ নম্বর বয়া এলাকায় পানামা পতাকাবহী জাহাজ হ্যান্ডিপার্কের ধাক্কায় ডুবে যায় কয়লাবোঝাই কার্গো এমভি ফারদিন-১। এতে ওই জাহাজে থাকা ৭ নাবিকের মধ্যে ৫ নাবিক ডুবে যায়। এখন পর্যন্ত ওই ৫ নাবিক নিখোঁজ রয়েছে।
সোমবার রাতে নিখোঁজ হয়েছিলেন পিরোজপুর জেলার সৌরভকাঠি উপজেলার বোটমাস্টার মহিউদ্দিন, একই এলাকার রবিউল ও নূর আলম; ভান্ডারিয়া উপজেলার জিহাদ এবং মোংলা এলাকার সামসু। এর মধ্যে কোন দুজনের মরদেহ উদ্ধার হয়েছে, তা এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত জানা যায়নি।
আর উদ্ধার হওয়া নাবিকরা হলেন পিরোজপুর জেলার ভান্ডারিয়া উপজেলার পাইটখালী গ্রামের রায়হান চৌধুরী, বাগেরহাট জেলার মোংলা উপজেলার মাকরডোন নারিকেল তলা এলাকার মো. রুবেল।
উদ্ধার হওয়া নাবিক রায়হান চৌধুরী বলেন, আমরা কয়লা নিয়ে ঢাকার উদ্দেশে যাচ্ছিলাম। হঠাৎ মাদার ভ্যাসেল আমাদের কার্গোটিকে ধাক্কা দেয়। মুহূর্তের মধ্যে আমাদের কার্গোটি ডুবে যায়।
মোংলাস্থ শ্রমিক ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান মেসার্স টি হকের সুপারভাইজার মো. লোকমান হোসেন বলেন, বন্দরে অবস্থানরত বিদেশি জাহাজ ‘এলিনা বি’ থেকে কয়লা নিয়ে ঢাকায় যাচ্ছিল কার্গো জাহাজ ফারদিন-১। পণ্য খালাস শেষে পানামা পতাকাবহী হ্যান্ডিপার্ক জাহাজ (মাদার ভেসেল) বন্দর ত্যাগ করার সময় বিপরীত থেকে আসা কয়লাবোঝাই কার্গো জাহাজটিকে ধাক্কা দেয়। এতে ওই কার্গোটি ডুবে যায়। এ সময় অন্য একটি লঞ্চ এসে কার্গোর জাহাজে থাকা সাতজনের মধ্যে দুজনকে উদ্ধার করে।
এদিকে বাংলাদেশ শিপিং আইন অনুযায়ী ডুবে যাওয়া কার্গোটির বাণিজ্যিক পণ্য পরিবহনের অনুমতি ছিল না বলে জানিয়েছেন মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের কমান্ডার শেখ ফখরউদ্দিন। তিনি বলেন, বেআইনিভাবে কয়লা পরিবহন করেছিল কার্গোটি। এসব বিষয়ে মালিকদের আরও বেশি সতর্ক হওয়ার পরামর্শ দেন বন্দরের এই কর্মকর্তা।
তিনি আরও বলেন, এ দুর্ঘটনায় বন্দর চ্যানেল নিরাপদ রয়েছে। বাণিজ্যিক জাহাজ চলাচলে কোনো অসুবিধা হচ্ছে না।
উল্লেখ্য, গত ৮ অক্টোবর সার নিয়ে বন্দরের পশুর নদীতে ও ৯ অক্টোবর পাথর নিয়ে ফেয়ারওয়ে বয়া এলাকায় দুটি কার্গো জাহাজডুবির ঘটনা ঘটে।
তানজীম আহমেদ/এনএ