খুলনার দিঘলিয়ায় সাত বছর বয়সী শিশু তামিম মোল্লা হত্যাকাণ্ডের প্রায় ৯ মাস পর আসামি ওবাইদুল্লাহ ওরফে ওবাই শেখকে (২০) গ্রেফতার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।

বুধবার (১৭ নভেম্বর) হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দেন ওবাই শেখ। খুলনার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. সাইফুজ্জামান এই জবানবন্দি রেকর্ড করেন।

তিনি জানান, বলাৎকার করতে বাধা দেওয়ায় পানিতে চুবিয়ে তামিমকে হত্যা করা হয়। পরে তামিমের জামা-কাপড় দিয়ে হাত-পা বেঁধে লাশ বিলের মধ্যে ফেলে দেওয়া হয়। এর আগে মঙ্গলবার ১৬ নভেম্বর বিকাল ৫টায় দিঘলিয়ার লাখোহাটি গ্রাম থেকে ওবাই শেখকে আটক করে পলিশ। 

ওবাই দিঘলিয়া উপজেলার লাখোহাটি গ্রামের আসলাম শেখের ছেলে। অন্যদিকে নিহত শিশু তামিম একই গ্রামের তরিকুল মোল্লার ছেলে।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও পিবিআই খুলনার পুলিশ পরিদর্শক আবদুুল্লাহ আল মামুন বিশ্বাস এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন ।

তিনি জানান, চলতি বছরের ২৫ ফেব্রুয়ারি বিকেলে শিশু তামিম মাদরাসায় যাওয়ার জন্য বাড়ি থেকে বের হয়। রাত সাড়ে ৮টায় তামিম ফিরে না এলে তার পরিবারের সদস্যরা বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজি ও মাইকিং করে। পরের দিন ২৬ ফেব্রুয়ারি লাখোহাটি গ্রামের গোয়ালাবাদ বিল থেকে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় তামিমের লাশ পাওয়া যায়।

এ ঘটনায় তামিমের মা জাহানারা বেগম কলি বাদী হয়ে থানায় মামলা করেন। দিঘলিয়া থানা পুলিশ ওই সময় দুই জনকে আটক করলেও মামলার মূল রহস্য উদঘাটন করতে পারেনি। থানা পুলিশের তদন্তে অগ্রগতি না হওয়ায় বাদির আবেদনের প্রেক্ষিতে আদালত মামলাটি পিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ দেন।

পুলিশ পরিদর্শক আবদুুল্লাহ আল মামুন বিশ্বাস আরও জানান, পিবিআই দায়িত্ব পাওয়ার পর অনুসন্ধান চালিয়ে ওবায়দুল্লাহ ওরফে ওবাইকে গত ১৬ নভেম্বর আটক করে।

স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে ওবাই শেখ জানিয়েছেন, ২৫ ফেব্রুয়ারি বিকেলে ওবাই ও শিশুরা স্থানীয় স্কুল মাঠে ফুটবল খেলছিল। এক পর্যায়ে একজন ঢিল ছুঁড়লে ওবাই তাকে ধরতে বিলের দিকে দৌড় দেয়। তামিমও তার পিছু পিছু যান। সেখানে গেলে ওবাই তামিমকে বলাৎকারের চেষ্টা করে। চিৎকার করলে ওবাই বিলের পানিতে চুবিয়ে হত্যা করে তামিমকে। পরে মরদেহের মুখের মধ্যে কলাপাতা ঢুকিয়ে গায়ে থাকা কাপড় দিয়ে পেঁচিয়ে ডোবায় ফেলে দেয়। 

মোহাম্মদ মিলন/আরআই