মেয়র জাহাঙ্গীর আলমকে আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কার করায় গাজীপুরে আনন্দ মিছিল করেছেন দলের নেতাকর্মীরা। শুক্রবার (১৯ নভেম্বর) সন্ধ্যায় কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত আসার পর থেকে স্থানীয় আওয়ামী লীগের কার্যালয়গুলোতে ভিড় বাড়তে থাকে নেতাকর্মীদের। এ সময় নেতাকর্মীদের বেশ উচ্ছ্বসিত দেখা যায়। তারা দলের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ কেন্দ্রীয় নেতাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

জানা গেছে, মেয়র জাহাঙ্গীরের বহিষ্কারের খবর আসার সঙ্গে সঙ্গেই মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মো. আফজাল হোসেন কল্লোলের নেতৃত্বে আনন্দ মিছিল বের করা হয়। আনন্দ মিছিলে নেতাকর্মীরা জাহাঙ্গীর বিরোধী নানা ধরনের স্লোগান দেন। মিছিলটি চান্দনা চৌরাস্তা এলাকার ঢাকা-টাঙ্গাইল ও ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক প্রদক্ষিণ করে।

অপরদিকে টঙ্গী থানা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে আতশবাজি ফুটিয়ে নেতাকর্মীরা উল্লাস করেন। এ সময় উপস্থিত নেতাকর্মীদের মাঝে মিষ্টি বিতরণ করা হয়।

টঙ্গী থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি ফজলুল হক বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দেখানো পথে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে মেয়র জাহাঙ্গীরের বিতর্কিত মন্তব্যে নেতাকর্মীসহ কোটি কোটি মানুষের হৃদয়ে আঘাত লেগেছে। আমরা তার বহিষ্কারের দাবিতে  আন্দোলন করে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের কাছে আবেদন জানিয়ে আসছিলাম। কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ থেকে এমন সিদ্ধান্ত আসায় পুরো গাজীপুরবাসীসহ দেশ কলঙ্কমুক্ত হয়েছে। এখন তার বিরুদ্ধে যতদিন পর্যন্ত আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে না, ততদিন দেশের মানুষের হৃদয়ে রক্তক্ষরণ বন্ধ হবে না।

এর আগে বিকেলে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র জাহাঙ্গীর আলমকে আওয়ামী লীগ থেকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করা হয়। তিনি গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। 

প্রসঙ্গত, গত সেপ্টেম্বর মাসে গোপনে ধারণ করা মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের কথোপকথনের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়। এতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও জেলার কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ নেতাকে নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করেন তিনি।

তীব্র সমালোচনার মুখে পরে এক ভিডিও বার্তায় মেয়র জাহাঙ্গীর দাবি করেন, ফেসবুকের ভিডিওটি সুপার এডিট করে প্রচার করে তাকে রাজনৈতিকভাবে হেয় করা হচ্ছে।

এ ঘটনায় ক্ষোভে ফেটে পড়েন স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা। তারা মেয়র জাহাঙ্গীর আলমকে গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে বহিষ্কারের দাবি জানান। গাজীপুরের রাজনীতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। এ নিয়ে গাজীপুরে মেয়র সমর্থকদের সঙ্গে বিরোধীদের কয়েক দফা সংঘর্ষ হয়।

এ ঘটনায় গত ৩ অক্টোবর মেয়র জাহাঙ্গীর আলমকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয় আওয়ামী লীগ। ১৮ অক্টোবরের মধ্যে তাকে এর জবাব দিতে বলা হয়। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে জবাব দিয়ে নিজেকে নির্দোষ দাবি করেন জাহাঙ্গীর আলম। 

শিহাব খান/আরএআর/জেএস