নিহত আবদুল কাইয়ুম ও তার ছেলে আহনাব শাকিল

নেত্রকোনা শহরের নাগড়া এলাকার একটি বাসার কক্ষ থেকে স্বামী ও শিশু সন্তানের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় স্ত্রী সালমা আক্তারকে (২১) আসামি করে থানায় হত্যা মামলা করা হয়েছে। শুক্রবার (১৯ নভেম্বর) বিকেলে নিহত আবদুল কাইয়ুমের ছোট ভাই মোস্তাফিজুর রহমান নেত্রকোনা মডেল থানায় এ মামলা করে। এই মামলায় সালমা আক্তারকে গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করেছে পুলিশ। 

নেত্রকোনা মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খন্দকার শাকের আহমেদ ঢাকা পোস্টকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। 

ওসি জানান, সালমা আক্তারকে থানায় রেখে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তার কাছ থেকে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য বেরিয়ে আসছে। 

জানা গেছে, বৃহস্পতিবার (১৮ নভেম্বর) সকালে মরদেহ দুটি উদ্ধারের পর ময়নাতদন্তের জন্য নেত্রকোনা আধুনিক সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায় পুলিশ। শুক্রবার দুপুরে মরদেহ দুটির ময়নাতদন্ত সম্পন্ন করেন হাসপাতালের চিকিৎসা কর্মকর্তা শ্রদ্ধানন্দ নাথ এবং টিটু রায়।

এ নিয়ে কথা হলে চিকিৎসক শ্রদ্ধানন্দ নাথ বলেন, মৃত্যুর কারণ এখনও আমাদের কাছে স্পষ্ট নয়। তবে ধারণা করা হচ্ছে শিশুটিকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে। তাদের মৃত্যুর বিষয়টি স্পষ্ট না হওয়ায় দুজনেরই ভিসেরা সংগ্রহ করা হয়েছে। 

এ বিষয়ে নেত্রকোনার পুলিশ সুপার মো. আকবর আলী মুন্সী বলেন, ঘটনাটি আমরা বেশ গুরুত্ব সহকারে দেখছি। ঘটনার পরপরই সালমা আক্তারকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। এ ঘটনায় নিহত আবদুল কাইয়ুমের ভাই বাদী হয়ে সালমা আক্তারকে আসামি করে হত্যা মামলা করেছেন। তাকে গ্রেফতার দেখিয়ে সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে।

নিহত আবদুল কাইয়ুম কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার ভিতরের খামার গ্রামের আক্কাস সরদারের ছেলে। তিনি নেত্রকোনায় ওষুধ প্রশাসন অধিদফতরে অফিস সহায়ক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। আবদুল কাইয়ুম ২০১৯ সালের জানুয়ারিতে কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার ফকিরগঞ্জ এলাকার বাসিন্দা আসাদ আলীর মেয়ে সালমা আক্তারকে বিয়ে করেন। তিনি স্ত্রী সালমা ও  দুই বছরের ছেলে আহনাব শাকিলকে নিয়ে তার কর্মস্থল নেত্রকোনা শহরের নাগড়া এলাকার রুহুল আমিন নামে এক ব্যক্তির পাঁচতলা ভবনের চতুর্থ তলার একটি ইউনিট ভাড়া নিয়ে বসবাস করে আসছিলেন।

গত বুধবার (১৭ নভেম্বর) রাতে তারা খাবার খেয়ে এক বিছানায় ঘুমিয়ে পড়েন। পরদিন বৃহস্পতিবার ভোর ৫টার দিকে স্ত্রী সালমা আক্তার জেগে দেখেন পাশের কক্ষে একটি ফ্যানের সঙ্গে স্বামী ও সন্তানের মরদেহ ঝুলছে। পরে তিনি রশি কেটে  মরদেহ দুটি নামিয়ে ফেলেন এবং বাসার দরজা খুলে বিষয়টি প্রতিবেশীদের জানান। পরে  প্রতিবেশীরা পুলিশে খবর দিলে পুলিশ মরদেহ দুটি উদ্ধার করে।

জিয়াউর রহমান/আরএআর