জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্যের অভিযোগে আওয়ামী লীগ থেকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার হয়েছেন গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র জাহাঙ্গীর আলম।

শুক্রবার (১৯ নভেম্বর) প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

গাজীপুর মহানগরের হারিকেন এলাকায় নিজ বাড়িতেই মেয়র জাহাঙ্গীর আলম অবস্থান করছেন বলে জানা গেছে। অন্যান্য দিন সিনিয়র নেতাকর্মীসহ সাধারণ মানুষের ভিড় লক্ষ্য করা গেলেও শনিবার সকালের চিত্রটি পুরোটাই ব্যতিক্রম ছিল। এদিন দুই একজন নেতা, কয়েকজন কর্মী বাদে অন্য কোনো নেতাকে তার বাড়িতে দেখা যায়নি। পুরো বাড়িতে বিরাজ করছে সুনসান নীরবতা। উৎসুক স্থানীয় মানুষ মেয়র বাড়ি ঘিরে ভিড় করছেন। ঢাকা ও স্থানীয় সংবাদকর্মীরা সকাল থেকেই ভিড় করছেন তার বাড়িতে।

উল্লেখ্য, গত ২২ সেপ্টেম্বর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে গাজীপুরের মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে। সেখানে দেখা যায়, তিনি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও মুক্তিযুদ্ধের সংখ্যা নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করেছেন।

চার মিনিটের ওই ভিডিওতে দেখা যায়, বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধ ছাড়াও গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আজমত উল্লাহ খান, যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল এবং রাষ্ট্রীয় দুটি সংস্থা নিয়েও আপত্তিকর মন্তব্য করেন তিনি।

তিনি মুক্তিযুদ্ধে শহীদের সংখ্যা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেন এবং বঙ্গবন্ধুর দেশ স্বাধীন করার উদ্দেশ্য নিয়েও প্রশ্ন তোলেন। তীব্র সমালোচনার মুখে পরে আরেকটি ভিডিও বার্তায় মেয়র দাবি করেন, ফেসবুকের ভিডিওটি সুপার এডিট করে প্রচার করে তাকে রাজনৈতিকভাবে হেয় করা হচ্ছে।

এদিকে ফেসবুকে তার এ বক্তব্য ছড়িয়ে পড়ার পর ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে গত ২৩ সেপ্টেম্বর বিক্ষোভ করেন গাজীপুর আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। মহাসড়কে টায়ার জ্বালিয়ে মেয়র জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে বিভিন্ন স্লোগান দেন তারা। একই দিন টঙ্গী স্টেশন এলাকায় রেললাইনে আগুন দেন বিক্ষুব্ধরা। 

এ ঘটনায় গত ৩ অক্টোবর মেয়র জাহাঙ্গীর আলমকে শোকজ করে আওয়ামী লীগ। ১৫ দিনের মধ্যে তাকে শোকজের জবাব দিতে বলা হয়। মেয়র জাহাঙ্গীর আলম নির্ধারিত সময়ের মধ্যে জবাব দিয়ে নিজেকে নির্দোষ দাবি করেন।

শিহাব খান/এসপি