ঠান্ডা হচ্ছে টঙ্গী সেতুর বিটুমিন, শেষ হচ্ছে দুর্ভোগ
টঙ্গী সেতু সংস্কারের শেষ মুহূর্তের চিত্র/ ২০ নভেম্বরের (শনিবার) ছবি
গাজীপুরের টঙ্গীতে তুরাগ নদের ওপর সেতুর ধসে যাওয়া স্ল্যাবের সংস্কার কাজ শেষ হয়েছে। তবে ঢালাইয়ের গরম বিটুমিন ঠান্ডা না হওয়ায় যান চলাচল শুরু করা হয়নি। আশা করা যাচ্ছে রোববার (২১ নভেম্বর) দিনের যেকোনো সময় এ সেতুতে যান চলাচল শুরু করা যাবে, সেইসঙ্গে শেষ হবে দুর্ভোগ।
শনিবার (২০ নভেম্বর) রাতে ঢাকা পোস্টকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-কমিশনার (ট্রাফিক) আব্দুল্লাহ্ আল-মামুন।
বিজ্ঞাপন
তিনি বলেন, শনিবার রাত ৯টার দিকে সেতুতে যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়ার কথা ছিল। তবে শেষ মুহূর্তে সিদ্ধান্ত বদলাতে হয়েছে কর্তৃপক্ষকে।
বিআরটি কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে তিনি বলেন, রোববার অফিস সময়ের পর (বিকেল ৫টা নাগাদ) সেতুটি খুলে দেওয়া সম্ভব হবে। এ বিষয়ে ডিএমপির সাথে সমন্বয় করা হয়েছে। তারাও বলেছেন রোববার সেতুতে যান চলাচল আগের মতো স্বাভাবিক করে দেওয়া যেতে পারে।
বিজ্ঞাপন
শনিবার রাত সোয়া ৯টায় টঙ্গী সেতু পরিদর্শনে আসেন সড়ক ও জনপথ অধিদফতরের প্রধান প্রকৌশলী আব্দুস সবুর ও বাস র্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) প্রকল্প পরিচালক (সেতু বিভাগ) মহিরুল ইসলাম।
রাত ১০টায় সরেজমিনে সেতুতে গিয়ে দেখা যায়, ধসে যাওয়া স্ল্যাব সংস্কার করা হয়েছে। সেতুর নিচ থেকে অস্থায়ী পাটাতনও সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। সংস্কার করা অংশের ওপর গরম বিটুমিনের ঢালাই দেওয়া হচ্ছে, পাশাপাশি রোলার দিয়ে সমান করে দেওয়া হচ্ছে।
এ বিষয়ে বিআরটি প্রকল্পের সেতু বিভাগের প্রকল্প পরিচালক মো. মহিরুল ইসলামের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি তা রিসিভ করেননি।
উল্লেখ্য, গত ৯ নভেম্বর রাত তিনটার দিকে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের টঙ্গীর তুরাগ নদের ওপর টঙ্গী সেতুর পুরনো স্ল্যাব ড্যামেজ থাকায় হঠাৎ স্ল্যাবের কিছু অংশ ভেঙে পড়ে। এতে ওই পথে যানবাহন চলাচলে ধীরগতি সৃষ্টি হয় এবং দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়ে জনদুর্ভোগ চরম আকার ধারণ করে। পরে বিআরটি কর্তৃপক্ষ ভাঙা অংশ মেরামত করে দিলে ১০ নভেম্বর (বুধবার) বেলা ১০টার দিকে সেতুর দুই লেনে যানবাহন চলাচল শুরু করে। পরে ঝুঁকি বিবেচনায় বুধবার রাত ১২টা থেকে ওই সেতু দিয়ে যান চলাচল পুরোদমে বন্ধ করে দিয়ে ১২ দিন সময় নেয় কর্তৃপক্ষ।
দেশি-বিদেশি বিশেষজ্ঞরা ক্ষতিগ্রস্ত সেতুটি পরিদর্শন করে তার সংস্কারের জন্য ১২ দিন সময় নেন। সে মোতাবেক রোববার (২১ নভেম্বর) সেতুতে যান চলাচল শুরু হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বিআরটি কর্তৃপক্ষ জনদুর্ভোগ লাঘবে গুরুত্ব বিবেচনায় নির্দিষ্ট সময়ের একদিন আগেই অর্থাৎ শনিবার (২০ নভেম্বর) সেতুটিতে যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়ার ঘোষণা দেয়। তবে বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যায়ও সংস্কার কাজ সম্পন্ন না হওয়ায় সেতু খুলে দেওয়া সম্ভব হয়নি।
শনিবার বিকেলে বিআরটি প্রকল্পের সেতু বিভাগের প্রকল্প পরিচালক মো. মহিরুল ইসলাম জানিয়েছিলেন, শনিবার রাত ৯টার দিকে সেতুটি যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হবে। সেতুর যে অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল তা সংস্কার করা হয়েছে। ইতোমধ্যে সেতুর সংস্কার করা অংশে কিউরিং টেস্ট করিয়েছিলাম, রিপোর্ট হাতে পেয়েছি। এর পরই সেতু খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
তিনি আরও জানিয়েছিলেন, আগামী জানুয়ারিতে সেতুর পশ্চিম অংশে নির্মাণাধীন পাঁচ লেনের সেতুটিও খুলে দেওয়া হবে। এরপর পুরোনো সেতু ভেঙে সেখানে পাঁচ লেনের সেতু নির্মাণ করা হবে।
শিহাব খান/এইচকে