প্রতীকের সমর্থনে চুলের ছাঁটে যখন ফুটবল
ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার ঘারুয়া ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডে সাধারণ সদস্য প্রার্থী হয়েছেন বুলবুল আহম্মদ নামে এক ব্যক্তি। তিনি তার নির্বাচনী মাঠে অভিনবভাবে প্রচারণা চালাচ্ছেন। তার প্রতীক ফুটবল হওয়ায় ছয় শিশুর চুল সেভাবে কেটে তিনি প্রচারণা চালাচ্ছেন বলে জানা গেছে।
ভাঙ্গা উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ঘারুয়া ইউনিয়নের ৯ নং ওয়ার্ডটি হাজরাকান্দা গ্রামের অন্তর্ভুক্ত। আগামী ২৮ নভেম্বর অনুষ্ঠিত তৃতীয় ধাপের নির্বাচনে ওই ওয়ার্ডে সাধারণ সদস্য পদে নির্বাচন করছেন তিনজন প্রার্থী। তারা হলেন- বুলবুল আহম্মদ ( ফুটবল), জুলহাস মাতুব্বর (তালা) ও মিকাইল হোসেন (মোরগ)।
বিজ্ঞাপন
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ওই ওয়ার্ডে ফুটবল প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করছেন বুলবুল আহম্মদ। তিনি তার নির্বাচনী প্রচারণাকে অভিনব উপায়ে উপস্থাপনের জন্য কয়েকজন ৬-৭ বছর বয়সী শিশুর চুল কেটেছেন ফুটবলের আদলে। যদিও তিনি দাবি করেছেন, ওই শিশুদের চুল তিনি কাটাননি। বিষয়টি নিয়ে আলোচনা-সমালোচনাও চলছে।
বাংলাদেশের শিশু আইনে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে শিশুদের ব্যবহারের ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। এই আইন ভঙ্গ করলে পাঁচ বছরের কারাদণ্ডের বিধানও রয়েছে। সেজন্য এই প্রচারণার সমালোচনা করছেন অনেকে।
বিজ্ঞাপন
ওই ওয়ার্ডে বুলবুলের প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী তালা প্রতীকের জুলহাস মাতুব্বর ঢাকা পোস্টকে বলেন, বুলবুল নিজ উদ্যোগে শিশুদের চুলের ছাঁট ফুটবলের আদলে করেছেন। উনি যতই অস্বীকার করুক। তার প্রতীক ফুটবল আবার শিশুদের চুলের ছাঁটও ফুটবল।
এ বিষয়ে ফুটবল প্রতীকের সদস্য প্রার্থী বুলবুল আহম্মদ ঢাকা পোস্টকে বলেন, শিশুদের চুলের ছাঁট আমি ওভাবে কাটায়নি। ওরা কোথা থেকে কেটেছে তাও আমার জানা নেই। আমার প্রতীক ফুটবল। শিশুদের চুলের ছাঁটও ফুটবলের আদলেই দেখছি।
ভোটের প্রচারে শিশুদের এমনভাবে ব্যবহার করা নিয়ে ভাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সেলিম রেজা বলেন, কার চুলের ছাঁট কেমন হবে সেটি আমাদের দেখার এখতিয়ার না। এটা দেখার দায়িত্ব রিটার্নিং কর্মকর্তার।
ওই ইউনিয়নের দায়িত্বপ্রাপ্ত রিটার্নিং কর্মকর্তা দেবলা চক্রবর্তী বলেন, এ ব্যাপারে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর অভিযোগ পেলে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।
ভাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আজিম উদ্দিন বলেন, চুলের ছাঁটের ব্যাপারে তো আইন নেই। যদি কেউ প্রভাব খাটিয়ে ওভাবে চুলের ছাঁট দিতে বাধ্য করে তবে বিষয়টি দেখার সুযোগ রয়েছে। তাছাড়া কেউ স্বেচ্ছাপ্রণোদিত হয়ে নিজের ইচ্ছামতোই চুলের ছাঁট দিতে পারেন।
ঘারুয়া ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান সফিউদ্দিন মোল্লা ঢাকা পোস্টকে বলেন, বিদেশি ফুটবল ক্রিকেট তারকাদের আদলে অনেকেই চুল কেটে থাকেন। শিশুরাও হয়তো ফুটবল প্রতীকের সমর্থনে এমনটা করে থাকতে পারেন। জোর করে ওদের এমন ছাঁট দেওয়ানো হয়েছে কি না বিষয়টি আমার জানা নেই।
ঘারুয়া ইউনিয়নের ৯ নং ওয়ার্ডের হাজরাকান্দা গ্রামের বাসিন্দা জব্বার মাস্টার ঢাকা পোস্টকে বলেন, শিশুরা ফুটবলের মতো করে চুল কাটছে। হয়তো ওদের অভিভাবকরা ওই প্রার্থীকে সমর্থন দিয়েছেন তাই তারা তাদের সন্তানদের ওভাবে চুল কাটিয়েছেন। ওদের জোর-জবরদস্তি করে চুল কাটানো হয়েছে বলে আমার মনে হয় না।
জহির হোসেন/এসপি