একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানি বাহিনীর হাতে হরিজন সম্প্রদায়ের নিহতদের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতির দাবি জানিয়েছে হরিজন অধিকার আদায় সংগঠন। সোমবার (২২ নভেম্বর) বিকেলে রংপুর নগরীর কাচারী বাজার চত্বরে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে এ দাবি জানায় সংগঠনটির নেতারা।

সমাবেশে বক্তারা দাবি করে বলেন, ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানি বাহিনীর হাতে ঢাকার মিরিনজিল্লা কলোনির দশজন হরিজন শহিদ হয়। তাদের অপরাধ ছিল মুক্তিযোদ্ধাদের সাহায্য করা এবং সশস্ত্র সংগ্রামে যুক্ত হওয়া। ২২ নভেম্বর গভীর রাতে পাকিস্তানি বাহিনী মিরিনজিল্লা কলোনির মণ্ডল সামুন্দ লাল, মহাবীর লাল, আনবার লাল, ঘসিটা দাস, খালবাল দাস, নান্দা লাল, লাল্লু দামানকার, ঈশ্বর লাল, নান্দু লাল ও সংকর দাসকে বাড়ি থেকে চোখ বেঁধে তুলে নিয়ে যায়। কয়েকদিন পর রায়ের বাজার বধ্যভূমিতে তাদের লাশের সন্ধান পাওয়া যায়।

একইভাবে দেশের চাঁদপুর, সিরাজগঞ্জসহ অনেক জায়গায় হরিজন সম্প্রদায়ের অনেকেই মুক্তিযুদ্ধে প্রাণ উৎসর্গ করেছেন। দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে তাদের অবদান রয়েছে। মুক্তিযুদ্ধে জাতি-বর্ণ-ধর্ম নির্বিশেষে সবার অংশগ্রহণ ছিল, এটা তার জ্বলন্ত উদাহরণ। কিন্তু আজও নিহত হরিজনদের রাষ্ট্রীয়ভাবে শহিদের স্বীকৃতি ও মর্যাদা দেওয়া হয়নি। আবার স্বাধীনতার ৫০ বছর পরও দেশে অনেক সময় হরিজন সম্প্রদায়ের মানুষ বৈষম্যের স্বীকার হন।

দাবি আদায়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সু-নজর কামনা করে অবিলম্বে নিহত হরিজনদের শহিদ হিসেবে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি প্রদান ও সকল বৈষম্য দূরীকরণে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান তারা।

সমাবেশে বক্তব্য রাখেন- হরিজন অধিকার আদায় সংগঠনের উপদেষ্টা লিটন বাসফোর, শবরন বাসফোর, সভাপতি সুরেশ বাসফোর, সাধারণ সম্পাদক সাজু বাসফোর, সহ-সভাপতি রাজু বাসফোর, সাংস্কৃতিক সম্পাদক শাকিল বাসফোর প্রমুখ।

সমাবেশ শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল নগরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে। পরে রংপুর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে গিয়ে পুষ্পমাল্য অর্পণ করেন সংগঠনটির নেতাকর্মীরা।  

ফরহাদুজ্জামান ফারুক/আরআই