এবার রাজশাহীর কাটাখালী পৌরসভার মেয়র আব্বাস আলীকে রাজশাহী নগরীতে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৫ নভেম্বর) বিকেলে প্রতিবাদ সমাবেশ থেকে এ ঘোষণা দেয় মহানগর আওয়ামী লীগ।

নগরীর সাহেববাজার বড় মসজিদের সামনে অনুষ্ঠিত এই সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী কামাল।

এতে প্রধান বক্তা ছিলেন রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকার। তিনি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরাল নিয়ে কটূক্তি এবং সিটি মেয়র ও নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন সম্পর্কে আপত্তিকর মন্তব্য করায় মেয়র আব্বাসকে দল থেকে বহিষ্কার এবং দ্রুত আইনের আওতায় আনার দাবি জানান।

একই সঙ্গে মেয়র আব্বাস আলীকে নগরীর অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে যেখানে দেখা যাবে, সেখানেই প্রতিহত করতে নেতাকর্মীদের নির্দেশ দেন ডাবলু সরকার।

এর আগে নগরীর কুমারপাড়া দলীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে প্রতিবাদ মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি নগরীর প্রধান প্রধান সড়ক ঘুরে সাহেববাজার জিরো পয়েন্টে গিয়ে সমাবেশে মিলিত হয়। এই কর্মসূচিতে নগর আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা অংশ নেন।

এর আগে বেলা ১১টার দিকে দলীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে নগর আওয়ামী লীগ জানায়, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাঙালির অনুভূতি ও আবেগের জায়গা। তাকে নিয়ে কটূক্তি ও অশোভন মন্তব্য করা রাষ্ট্রদ্রোহিতার শামিল।

আব্বাসের এমন কটূক্তি ও অবমাননাকর মন্তব্যে সারাদেশের মানুষের মতো মহানগর আওয়ামী লীগ চরমভাবে মর্মাহত। তার ধৃষ্টতাপূর্ণ অশালীন মন্তব্যের প্রেক্ষিতে নগর তাকে দল থেকে বহিষ্কারের পাশাপাশি গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানায়।

গত সোমবার (২২ নভেম্বর) রাতে মেয়র আব্বাস আলীর কথোপকথনের একটি অডিও ভাইরাল হয়। ১ মিনিট ৫১ সেকেন্ডের অডিও ক্লিপটিতে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল বানালে ‘পাপ হবে’ এমন কথা বলতে শোনা গেছে মেয়র আব্বাস আলীকে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, স্থানীয় ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠকের শেষের দিকের আলোচনার কিছু অংশের রেকর্ড এটি। গত আগস্টের মাঝামাঝিতে নিজ দফতরে ব্যবসায়ীদের নিয়ে এই বৈঠক করেন মেয়র। এই ক্লিপটি নিয়ে রাজশাহীতে বইছে সমালোচনার ঝড়।

এই ঘটনায় মেয়র আব্বাসকে দলীয় পদ থেকে অপসারণের সিদ্ধান্ত নেয় পবা উপজেলা আওয়ামী লীগ। একই সঙ্গে কারণ দর্শানোর নোটিশও দেওয়া হয়। আগামী তিন দিনের মধ্যে নোটিশের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

পৌর কমিটির পদ হারালেও এখনো মেয়র আব্বাস জেলা আওয়ামী লীগের নির্বাহী সদস্য পদে রয়েছেন। তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে শুক্রবার জরুরি সভা ডেকেছে জেলা আওয়ামী লীগও।

এর আগে এ ঘটনায় মঙ্গলবার (২৩ নভেম্বর) দিবাগত রাতে আব্বাস আলীর নামে নগরীর বোয়ালিয়া, চন্দ্রিমা ও রাজপাড়া থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে তিনটি অভিযোগ দাখিল করেছেন রাজশাহী সিটি করপোরেশনের তিন কাউন্সিলর।

মেয়র আব্বাস আলীর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ তদন্ত করে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছেন নগর পুলিশের মুখপাত্র ও অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার গোলাম রুহুল কুদ্দুস।

ফেরদৌস সিদ্দিকী/আরএআর