নরসিংদীর রায়পুরায় পরিত্যাক্ত ডোবা থেকে ইয়ামিন মিয়া (৮) নামে এক শিশুর গলিত মরদেহ উদ্ধার করার এক দিন পর অভিযুক্ত চারজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শনিবার (৪ ডিসেম্বর)  ভোরে রায়পুরার উত্তর বাখরনগর ও পার্শ্ববর্তী এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়। দুপুরে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায় নরসিংদী জেলা পুলিশ। 

এর আগে গত ২৮ নভেম্বর থেকে শিশু ইয়ামিন মিয়া নিখোঁজ ছিল এবং গত শুক্রবার (৩ ডিসেম্বর) সকালে উপজেলার উত্তর বাখরনগর ইউনিয়নের উত্তর বাখরনগর গ্রামের এক ডোবা থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। নিহত ইয়ামিন মিয়া উত্তর বাখরনগর গ্রামের জামাল মিয়ার ছেলে।  

গ্রেফতাররা হলেন-  উত্তর বাখরনগর এলাকার সিয়াম উদ্দিন (১৮), রাসেল মিয়া (১৭), আসাদ মিয়ার ছেলে সুজন মিয়া (২৪) ও মৃত রাজা মিয়ার ছেলে কাঞ্চন মিয়া (৫৪)।

পুলিশ জানায়, টিভিতে ক্রাইম পেট্রল ও সিআইডি সিরিয়াল দেখে উদ্বুদ্ধ হয়ে গেমিং ল্যাপটপ কিনে ইউটিউবে গেম আপলোড করে টাকা উপার্জনের জন্য মালয়েশিয়া প্রবাসী জামাল উদ্দিনের আট বছরের শিশু ইয়ামিনকে অপহরণের পরিকল্পনা করে দুই বন্ধু সিয়াম ও রাসেল। গত ২৮ নভেম্বর দুপুরে পূর্বপরিকল্পনা মোতাবেক ইয়ামিনকে অপহরণ করে তারা। অপহরণ করে রাসেল ও সিয়াম মিলে তাকে সিয়ামের বাড়ির এক নির্জন রুমে হাত-পা বেঁধে আটকে রাখে। সেদিনই মুঠোফোনে স্ক্রিপ্টেডবায়া এবং ভিপিএন অ্যাপ ব্যাবহার করে ফোন করে ইয়ামিনের মায়ের কাছে ১০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে তারা।

মুক্তিপণ না পেয়ে অপহরণের দিন রাতেই হাত-পা বেঁধে বালিশ চাপা দিয়ে রাসেল এবং সিয়াম দুই বন্ধু মিলে শিশু ইয়ামিনকে হত্যা করে। হত্যার পর, তার মরদেহ বস্তায় ভরে সিয়ামের বাড়ির পাশে এক গোয়ালঘরে রেখে দেয়। ঘটনার চারদিন পর বস্তাবন্দী মরদেহ এক ডোবার পাশে ফেলে দেয় তারা।

রায়পুরা থানা পুলিশের পরিদর্শক (অপারেশন) মো. আতাউর রহমান বলেন, নিখোঁজ ওই শিশুর মা শামসুন্নাহার বেগম বাদী হয়ে গত ১ ডিসেম্বর থানায় অভিযোগ করেছিলেন। অভিযোগপত্রে কারও নাম উল্লেখ না করলেও তিনি তিনজন ব্যক্তিকে সন্দেহ করেন বলে আমাদের জানিয়েছিলেন তখন। 

নরসিংদীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) সাহেব আলী পাঠান বলেন,  প্রথমে সিয়াম ও রাসেল দুই বন্ধুকে গ্রেফতার করি। তাদেরকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের পর বেশ কিছু তথ্য পেলে সেই তথ্যের ভিত্তিতে সুজন মিয়া ও কাঞ্চন মিয়াকে গ্রেফতার করি আমরা। হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত স্কচটেপ, বালিশ, মুঠোফোন এবং সিম আলামত হিসেবে উদ্ধার করা হয়েছে। আসামিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। 

রাকিবুল ইসলাম/আরএআর