’৭২-এর সংবিধান পুনঃপ্রতিষ্ঠার মাধ্যমে অসাম্প্রদায়িক দেশ গড়া সম্ভব

বিগত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সাম্প্রদায়িক সহিংসতা মুক্ত বাংলাদেশের যে অঙ্গীকার করেছিল, সেটা এখনও বাস্তবায়ন হয়নি বলে দাবি করেছেন বাংলাদেশ হিন্দু, বৌদ্ধ ও খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রানা দাশগুপ্ত।

তিনি বলেন, ‌প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাম্প্রদায়িক সহিংসতার বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্সের ঘোষণা করেছিলেন। আমরা তার এ ঘোষণার বাস্তবায়ন চাই। অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার জন্য মুক্তিযুদ্ধ হয়েছে। আমরা আর সাম্প্রদায়িক সহিংসতা দেখতে চাই না। বঙ্গবন্ধুর চেতনায় ৭২-এর সংবিধান পুনঃপ্রতিষ্ঠার মাধ্যমে অসাম্প্রদায়িক দেশ গড়া সম্ভব।

শুক্রবার (১০ ডিসেম্বর) বিকেলে রংপুর টাউন হলে বাংলাদেশ হিন্দু, বৌদ্ধ ও খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে এসে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এ কথা বলেন তিনি।

দেশে এখন যে সংবিধান রয়েছে তা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রণীত নয় দাবি করে রানা দাসগুপ্ত বলেন, বঙ্গবন্ধুর সংবিধানে মুসলমান, হিন্দু, বৌদ্ধ ও খ্রিস্টান কোনো ধর্মকে আলাদাভাবে দেখা হয়নি। কারণ বঙ্গবন্ধুর ডাকে সব ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছে। তখন বাঙালিদের চেতনাকে শাণিত করার উদ্দেশ্য ছিল। বঙ্গবন্ধু সংবিধানে গণতন্ত্র, ধর্ম নিরপেক্ষতা, সমাজতন্ত্র এবং বাঙালি জাতীয়তাবাদের কথা উল্লেখ করেছিলেন। পরবর্তী সময়ে সেই সংবিধানের মূল্যবোধকে তথা মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধ্বংস করে ফেলা হয়েছে। আমরা চাই বঙ্গবন্ধু প্রণীত ৭২ সালের সংবিধান পুনঃপ্রতিষ্ঠা করে বাংলাদেশ সত্যিকার অসাম্প্রদায়িক বাঙালির রাষ্ট্রে পরিণত হোক।

এর আগে দুপুরে টাউন হলে অনুষ্ঠিত সম্মেলনের উদ্বোধন করেন পরিষদের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির ড. নিম চন্দ্র ভৌমিক। সম্মলেনে সম্মানিত অতিথি ছিলেন হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের সহ-সভাপতি ও সংসদ সদস্য মনোরঞ্জন শীল গোপাল।

বাংলাদেশ হিন্দু, বৌদ্ধ ও খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের রংপুর জেলা সভাপতি বনমালী পালের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন- পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মনীন্দ্র কুমার নাথ, অ্যাডভোকেট তাপস কুমার পাল, ভিক্ষু সুনন্দপ্রিয় মহাথের, সাংগঠনিক সম্পাদক শ্রীমতি স্বপ্না বিশ্বাস, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক রমাকান্ত রায়, রংপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি সাফিউর রহমান সফি, সাধারণ সম্পাদক বাবু তুষার কান্তি মণ্ডল প্রমুখ।

সম্মেলনের আলোচনা অনুষ্ঠানে রংপুর উপজেলার হিন্দু, বৌদ্ধ ও খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের নেতাকর্মীরা ছাড়াও ভক্ত এবং সমর্থকরা উপস্থিত ছিলেন।
 
ফরহাদুজ্জামান ফারুক/আরআই