শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন বলেন, নরসিংদীর পলাশ উপজেলার ঘোড়াশাল পলাশ ইউরিয়া ফার্টিলাইজার প্রকল্পের ৫৩ শতাংশ কাজ এরই মধ্যে শেষ হয়েছে। কোনো ধরনের বাধা না আসলে ২০২৩ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে প্রকল্পের পুরো কাজ শেষ করা সম্ভব হবে। উদ্বোধনের পর এটি হবে দেশের সবচেয়ে বড় সার কারখানা। এছাড়া সার আমদানিনির্ভরতা কমানোর ওপর জোর দিচ্ছে সরকার। 

শনিবার (১১ ডিসেম্বর) দুপুরে প্রকল্পের অগ্রগতি পরিদর্শনকালে তিনি এসব কথা বলেন। 

এর আগে শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুনকে প্রকল্পের অগ্রগতি সম্পর্কে অবহিত করতে এক আলোচনা সভার আয়োজন করেন প্রকল্প কর্মকর্তারা। এ সময় তার সামনে ভিডিও প্রেজেন্টেশনের মাধ্যমে প্রকল্পের সার্বিক অগ্রগতি তুলে ধরা হয়। পরে অতিথিরা ঘোড়াশাল পলাশ ইউরিয়া ফার্টিলাইজার প্রকল্প এলাকার বিভিন্ন কার্যক্রম ঘুরে দেখেন। প্রকল্প পরিচালক রাজিউর রহমান মল্লিকের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন স্থানীয় সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আশরাফ খান ও বিসিআইসি চেয়ারম্যান শাহ মো. ইমদাদুল হক।

কর্তৃপক্ষ বলছে, খাদ্য নিরাপত্তার স্বার্থে দেশের অভ্যন্তরীণ ইউরিয়া সারের চাহিদা মেটাতে ও সুলভমূল্যে কৃষকদের কাছে সার সরবরাহ করতে সরকার জোর চেষ্টা করছে। প্রতি টন ইউরিয়া উৎপাদনে গ্যাসের ব্যবহার ও রক্ষণাবেক্ষণ হার অস্বাভাবিক বৃদ্ধি পাওয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে ঘোড়াশাল সার কারখানা ও পলাশ ইউরিয়া সার কারখানা দুইটি একীভূত করা হয়। পরবর্তীতে কারখানা দুটির স্থানে একটি উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন, শক্তি সাশ্রয়ী, পরিবেশবান্ধব ও আধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর একটি সার কারখানা স্থাপনের প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। ৯ লাখ ২৪ হাজার মেট্রিক টন ক্ষমতাসম্পন্ন প্রকল্পটির নাম ‘ঘোড়াশাল পলাশ ইউরিয়া ফার্টিলাইজার প্রকল্প।’ 

প্রকল্প পরিচালক রাজিউর রহমান মল্লিক বলেন, করোনা মহামারির সময়ও সাধারণ ঠিকাদারদের বুঝিয়ে বিসিআইসির কর্মকর্তাদের তত্ত্বাবধানে প্রতিদিন ২৪ ঘণ্টা করে প্রকল্পের ভৌত কাজ চলছে। বর্তমানে ৭২৬ জন বিদেশিসহ মোট ২ হাজার ৯৪৮ জন এই প্রকল্পে কাজ করছে। তাদের মধ্যে জাপান, চায়না, ভারত, মেক্সিকো, সিঙ্গাপুর, কলাম্বিয়া, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, ইতালি, ফিলিপাইন ও রাশিয়ার প্রকৌশলী ও টেকনিশিয়ানরা কাজ করছেন। এরই মধ্যে প্রকল্পটির বিভিন্ন প্ল্যান্টের ১০৩টি যন্ত্রপাতি স্থাপনের কাজ শেষ হয়েছে। প্রকল্পের অগ্রগতি ৫৩ শতাংশ। ২০২৩ সালের ডিসেম্বর মাসের মধ্যেই প্রকল্পের পুরো কাজ আমরা শেষ করতে পারব বলে আশা করছি। 

শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন বলেন, বাংলাদেশে বছরে ইউরিয়া সারের চাহিদা আছে ২৬ লাখ মেট্রিক টন। এর মধ্যে বিদেশ থেকে আমদানি করতে হয় প্রায় ১৬ লাখ মেট্রিক টন। আমদানি নির্ভরতা কমিয়ে উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য দুটি সার কারখানাকে একত্রিত করে ইউরিয়া সার উৎপাদনের এই নতুন প্রকল্পের কাজ দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলেছে। আমাদের প্রত্যাশা, এই কারখানাটি উৎপাদনে গেলে আর বিদেশ থেকে সার আমদানি করতে হবে না।

রাকিবুল ইসলাম/আরএআর