ভোটারদের দোয়া নিচ্ছেন রাজ্জাক আলী আলাল

রংপুরের বদরগঞ্জে দামোদরপুর ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন চেয়েছিলেন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রাজ্জাক আলী আলাল। দলীয় সমর্থন না পাওয়ায় স্বতন্ত্র হিসেবে নির্বাচনে প্রার্থী হন। ঘোড়া প্রতীক পেয়ে নেমে পড়েন মাঠে। তার অনুসারীরাও ঘোড়া নিয়ে বেশ দৌড়ঝাঁপ শুরু করেন। তবে দলীয় চাপে মাঝপথে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী এই প্রার্থী।

রোববার (১২ ডিসেম্বর) রাতে ইউনিয়নের তুফানুপাড়ায় নিজস্ব চাতালে নেতাকর্মী ও সমর্থকদের ডেকে এমন ঘোষণা দেন রাজ্জাক আলী আলাল। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন তার অনুসারীরা। ঘটনাস্থলে উত্তেজনা দেখা দেয়। 

আলালের অনুসারীদের বোঝানোর চেষ্টা করেন বদরগঞ্জ পৌরসভার সাবেক মেয়র ও পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি উত্তম কুমার সাহা এবং বদরগঞ্জ উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান তাজুল ইসলাম। কিন্তু উত্তেজিত জনতা তাদের কথা শুনতে না চাইলে বাধ্য হয়ে তারা দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন। পরে আলালের অনুসারীরা নৌকা বিরোধী স্লোগান দিয়ে সেখান থেকে চলে যান।

আলালের সমর্থকদের দাবি, সব ধরনের যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও আলালকে নৌকা প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হয়নি। আলাল নির্বাচনের ঘোষণা দেওয়ায় আওয়ামী লীগের প্রার্থী বেকায়দায় পড়ে যান। অবস্থা বেগতিক দেখে উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতারা আলালকে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াতে বাধ্য করতে বিভিন্ন কৌশলে চেষ্টা করতে থাকেন। স্বাভাবিক উপায়ে সরতে না চাইলে আলালকে নানাভাবে চাপ দেওয়া হয়। এমনকি আলালের মালিকানাধীন ইটভাটা বন্ধ করে দেওয়ারও হুমকি দেওয়া হয়।

এ ব্যাপারে পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি সাবেক মেয়র উত্তম কুমার সাহা বলেন, নৌকার অবস্থান এমনিতেই ভালো। এ কারণে  রাজ্জাক আলীকে চাপ দেওয়া হয়নি। কিন্তু দলীয় নির্দেশনার বিষয়টি তাকে বোঝানো হয়েছে। তিনি স্বেচ্ছায় নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন।

মাঝপথে হঠাৎ ভোটের মাঠ থেকে সরে দাঁড়ানোর বিষয়ে প্রসঙ্গে রাজ্জাক আলী আলাল বলেন, আমার জয়ের সম্ভাবনা ছিল। সাধারণ মানুষ এবং অনেক কর্মী-সমর্থকরাও চেয়েছেন আমি নির্বাচনে থাকি। কিন্তু দলীয় নেতাদের অনুরোধে বাধ্য হয়ে নির্বাচন থেকে সরে আসার ঘোষণা দিয়েছি। এখন এটাই আমার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত।

উল্লেখ্য, আগামী ২৬ ডিসেম্বর চতুর্থ ধাপে রংপুরের গঙ্গাচড়ার ৯টি ও বদরগঞ্জ উপজেলার ১০টি ইউনিয়নে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দলের প্রার্থী ছাড়াও স্বতন্ত্র প্রার্থীরা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।  

ফরহাদুজ্জামান ফারুক/আরএআর