চুরির অপবাদে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যুবককে কুপিয়ে হত্যা
চুরির অপবাদ দিয়ে ঝালকাঠিতে মিরাজ শেখ (৩৫) নামের এক যুবককে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে স্থানীয় ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে। সদর উপজেলার কেওড়া ইউনিয়নের নৈকাঠি বাজারে মঙ্গলবার (১৫ ডিসেম্বর) রাত ১০টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত মিরাজ রনমতি গ্রামের সত্তার শেখের ছেলে। তিনি দিনমজুরির কাজ করতেন।
বিজ্ঞাপন
জানা গেছে, শনিবার (১১ ডিসেম্বর) রাতে রনমতি গ্রামে স্থানীয় জলিল মিয়ার মুদি দোকানে তালা ভেঙে চুরি হয়। পরে দুই ইউপি সদস্য নজরুল ইসলাম ও উজ্জ্বল খান ঘটনাস্থল থেকে রাজাপুর এলাকার বাসিন্দা মো. মিন্টু নামের একজনকে আটক করে মারধর করেন। তাকে পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়। পরে তার তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশ রোববার (১৫ ডিসেম্বর) শিপন নামের আরও একজনকে আটক করে। বর্তমানে তারা পুলিশি হেফাজতে সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
চুরির ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ তুলে মঙ্গলবার রাত ১০টার দিকে কেওড়া ইউপির ৭ নং ওয়ার্ডের সদস্য নজরুল ইসলাম লোকজন নিয়ে মিরাজকে বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে আসে। স্থানীয় পান্নু মেম্বারের বাড়ির পাশের সেতুর কাছে নিয়ে তাকে বেধড়ক মারধর করা হয়। পরে তাকে নৈকাঠি বাজারে এনে দ্বিতীয় দফায় কুপিয়ে গুরুতর আহত করা হয়।
বিজ্ঞাপন
স্থানীয়রা আহত অবস্থায় মিরাজকে উদ্ধার করে ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে নিয়ে যায়। অবস্থার অবনতি হলে তাকে রাতেই বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে রাতে ওই হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়।
এ ঘটনার পর থেকে নজরুল ইসলাম গা-ঢাকা দিয়েছেন। তার ব্যবহৃত মুঠোফোন নম্বরটি বন্ধ থাকায় তার বক্তব্য নেওয়া যায়নি।
মিরাজের মা মাকসুদা বেগম অভিযোগ করেন, ইউপি সদস্য নজরুল ইসলামের সঙ্গে জমি নিয়ে বিরোধ চলছিল তাদের। নজরুল ইউপি সদস্য নির্বাচিত হয়ে আমার ছেলেকে বিভিন্ন সময় হত্যার হুমকি দিয়ে আসছিল। নজরুল চুরির মিথ্যা অপবাদ দিয়ে আমার ছেলেকে হত্যা করেছে।
এ বিষয়ে কেওড়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আবু সাঈদ খান বলেন, আমি ঘটনা শুনে ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে গিয়ে মিরাজের চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছি। পরে তাকে বরিশাল নিয়ে গেলে মৃত্যু হয়। এ ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে ৭ নং ওয়ার্ডের মেম্বারের জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া গেলে তাকে কিছুতেই ছাড় দেওয়া হবে না।
ঝালকাঠি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খলিলুর রহমান বলেন, মরদেহ ময়না তদন্তের জন্য বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হবে। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।
সৈয়দ মেহেদী হাসান/এনএ