চালকদের অসচেতনতায় বাড়ছে দুর্ঘটনা
খবরের কাগজ, টিভির স্ক্রল কিংবা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে চোখ পড়লেই দেখা যায় সড়ক দুর্ঘটনার ছবি। প্রতিনিয়ত সড়কে ঝরছে তাজা প্রাণ। খালি হচ্ছে মায়ের বুক। কেউ হারাচ্ছে বাবা, কেউ হারাচ্ছে সন্তান। নিরাপদ সড়কের জন্য আন্দোলন চলছে দীর্ঘ দিন ধরে। তবে সব কিছু ব্যর্থ করে সড়কে মৃত্যুর মিছিল বেড়েই চলেছে।
চালকরা নিয়ম মানছেন তো?
বিজ্ঞাপন
গাড়ি চালানোর ক্ষেত্রে সড়ক বিভাগ থেকে রাস্তায় দেওয়া হয়েছে কিছু নির্দেশনা চিহ্ন। তবে সে বিষয় কতটুকু জানেন গাড়ি চালকরা। চলাচলের সময় দেখা যায় রাস্তার মাঝখানে কোথাও দেওয়া হয়েছে লম্বা সাদা দাগ, আবার কোথাও কোথাও একটু পর পর। তবে কিসের জন্য এই দাগগুলো দেওয়া হয়েছে তা কি জানেন চালকেরা? কেউ জেনে থাকলেও মেনে চলছেন না নিয়মগুলো। আবার অনেকে কোনো ধরনের প্রশিক্ষণ ছাড়াই গ্রাম থেকে গাড়ি নিয়ে আসছেন শহরে।
অটোরিকশার চালক আবুল হোসেন বলেন, রাস্তায় দেওয়া চিহ্নগুলোর বিষয়ে আমার জানা নেই। তবে টার্নিং পয়েন্ট থাকলে দাগ ক্রস করে যাবে না। কিন্তু আমরা অনেকে এই বিষয়গুলো মানি না।
বিজ্ঞাপন
মোটরসাইকেলের চালক আশরাফুজ্জামান বলেন, চিহ্ন এবং ট্রাফিক সিগন্যালের নির্দিষ্ট একটি নিয়ম রয়েছে। কোথায় ওভারটেক করা যাবে আর কোথায় যাবে না এগুলোর নির্দেশনা আছে। আমাদের এই দিকে কেউ এই নিয়মগুলো মেনে চলেন না।
এদিকে স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর ব্যাটারিচালিত অবৈধ ইজিবাইক চিহ্নিত করে অপসারণের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। পাশাপাশি এসব ইজিবাইক আমদানি ও ক্রয়-বিক্রয়ে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন আদালত। এ সংক্রান্ত রিটের শুনানি নিয়ে বুধবার (১৫ ডিসেম্বর) হাইকোর্টের বিচারপতি মামনুন রহমান ও বিচারপতি খোন্দকার দিলীরুজ্জামানের সমন্বয়ে গঠিত দ্বৈত বেঞ্চ এই আদেশ দেন।
হাইকোর্টের এ সিদ্ধান্তকে যুগোপযোগী সিদ্ধান্ত বলে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন সাধারণ মানুষ।
ব্যবসায়ী শাহ আলম বলেন, আমাদের ড্রাইভিং লাইসেন্স আছে। কিন্তু যারা অটোরিকশা চালায় তারা হুট করে নতুন অটোরিকশা নিয়ে শহরে নিয়ে আসে। এজন্য শহরে দুর্ঘটনা বেশি হয়। অবৈধ গাড়ি বন্ধ করে দেওয়া হলে সড়ক দুর্ঘটনা অনেক কমে যাবে।
পথচারী ওসমান গণী বলেন, সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিনিয়ত হচ্ছে। তবে অটোরিকশা বন্ধ করে দিলে দুর্ঘটনা কম হবে।
প্রাইভেট কারচালক সবুজ বলেন, যারা অটোরিকশা চালায় তারা মূলত গ্রাম থেকে শহরে আসে। আসার পর কোনো ধরনের ট্রাফিক সিগন্যাল মানেন না। রাস্তার মাঝখানে যাত্রী ওঠায়। তাদের শুধু যাত্রী ওঠানো নিয়ে চিন্তা। তারা ভুল সাইডে গাড়ি চালায় ফলে দুর্ঘটনা বেশি হয়।
বাসচালক মোখলেস বলেন, অটোরিকশা চালকরা ডা- বাম বুঝে না। যেখানে-সেখানে গাড়ি ঢুকিয়ে দেয়। তাদের কোনো প্রশিক্ষণ নেই। অটোরিকশা বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত খুব ভালো হয়েছে।
নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা) ঠাকুরগাঁও জেলা সভাপতি আবু মহিউদ্দিন বলেন, লাইসেন্সের জন্য যে পরীক্ষা নেওয়া হয় সেটা দিয়ে দক্ষতা যাচাই করা যায় না। মৌখিক পরীক্ষাতেও সাধারণত কেউ ফেল করে না। রাস্তায় দেওয়া প্রত্যেকটা সিগন্যালের আলাদা আলাদা অর্থ আছে। যেগুলো অনেকে জানেন না। যদি কোনো চালক রাস্তায় দেওয়া সিগন্যালগুলো মেনে চলে তাহলে অনেকাংশে দুর্ঘটনা কমে যাবে।
এসপি