বিজয় দিবসের সঙ্গে সাপ্তাহিক ছুটি মিলে টানা তিন দিনের ছুটিতে বান্দরবানের পর্যটন স্থানগুলোতে প্রচুর জনসমাগম হয়েছে। পর্যটক বাড়ায় খালি নেই হোটেল-মোটেলের কক্ষ। এমনকি এ মাসের শেষ দিন পর্যন্ত মোটেলের সবকটি কক্ষ অগ্রিম ভাড়া হয়ে গেছে। 

স‌রেজ‌মি‌নে নীলাচল, নীলগিরি, শৈলপ্রপাত, বগালেক, মেঘলা ও রিজুক ঝর্ণাসহ বান্দরবানের বিভিন্ন পর্যটন কেন্দ্রে হাজারো পর্যটকের দেখা মিলেছে। অনেকে পরিবার-পরিজন, বন্ধু-বান্ধব নিয়ে এসেছেন। একই অবস্থা রুমা, থানচি, আলীকদমেও। 

ঢাকা থেকে আসা রোকসানা বলেন, টানা তিন দিনের ছুটি পেয়ে বান্দরবান বেড়াতে এসেছি। বৃহস্পতিবার নীলগিরি, আজ নীলাচল ও মেঘলা এবং শনিবার ঘুরব রোয়াংছড়ি দেবতাকুম। শনিবার রাতেই ফিরে যাব।

নীলাচল পর্যটন কেন্দ্রের আদিব বড়ুয়া বলেন, নীলাচলে প্রচুর পর্যটক সমাগম হয়েছে। ভোর থেকে পর্যটক আসা শুরু হয়েছে। 

পর্যটন ব্যবসার সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা জানান, করোনা মহামারির ধকল কাটিয়ে প্রায় দুই বছর পর বিজয়ের সুবর্ণজয়ন্তীতে বান্দরবানের পর্যটন হঠাৎ জেগে উঠেছে। মাসের শুরু থেকে পর্যটকরা হোটেল-মোটেল ও অবকাশ যাপনকেন্দ্রগুলোতে আগাম ভাড়া নিতে থাকেন। কোথাও কোনো সিট খালি নেই। জেলা শহর ও শহরতলীতে ছোট-বড় প্রায় ৬৫টি আবাসিক হোটেল-মোটেল ও অবকাশকেন্দ্রে ৪ হাজার পর্যটক থাকার ব্যবস্থা রয়েছে। থানচি, রুমা, বগালেক, তাজিংডং, তিন্দু, রেমাক্রি, নাফাকুমসহ বিভিন্ন পাহাড় চূড়ার বিভিন্ন স্থানে আরও কয়েক হাজার পর্যটকের আবাসন করা সম্ভব। এসব পর্যটন স্পটে কোথাও কোনো জায়গা খালি নেই। 

জেলা আবাসিক হোটেল-মোটেল মালিক সমিতির সভাপতি অমল কান্তি দাশ জানান, শীত মৌসুম হচ্ছে পর্যটকদের ভরা মৌসুম। এ সময় পর্যটকদের আগমন বেশি ঘটে। 

পর্যটন করপোরেশনের মেঘলা পর্যটন মোটেলের ব্যবস্থাপক আলোক বিকাশ চাকমা জানান, বিজয় দিবস থেকে এ মাসের শেষ দিন পর্যন্ত মোটেলের সবকটি কক্ষ অগ্রিম ভাড়া হয়ে গেছে। 

মিলনছড়ি রিসোর্টের ব্যবস্থাপক রয়েল বম জানিয়েছেন, হঠাৎ পর্যটক আসা শুরু হওয়াতে এখন আর জায়গা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।

টুরিস্ট পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমিনুল ইসলাম জানান, লম্বা ছুটি থাকায় পর্যটকের ঢল নেমেছে বান্দরবানে। পর্যটকরা যাতে নিরাপদে ঘুরে বেড়াতে পারে সেজন্য প্রতিটি স্পটে টুরিস্ট পুলিশের সদস্যরা রয়েছে। সাদা পোশাকধারী পুলিশ সদস্যরাও দায়িত্ব পালন করছে। 

বান্দরবানের জেলা প্রশাসক ইয়াসমিন পারভীন তিবরিজী বলেন, পর্যটন নগরী বান্দরবানের অপরূপ সৌন্দর্য উপভোগ করতে বছরের পুরোটা সময়ই পর্যটকের আগমন ঘটে। তবে টানা ছুটি থাকায় পর্যটকের আগমন আরও বেড়েছে। পর্যটকদের নিরাপত্তায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে নেওয়া হয়েছে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা।

রিজভী রাহাত/এসপি