বাগেরহাটে প্রতিপক্ষের হামলায় নিহত ১
নিহত ফিরোজ ঢালী
বাগেরহাটের রামপালে স্থানীয় প্রভাব বিস্তারকে কেন্দ্র করে বেলাল গ্রুপ ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান জামু গ্রুপের মধ্যে পাল্টাপাল্টি হামলার ঘটনা ঘটেছে। বেলাল গ্রুপের হামলায় জামু গ্রুপের ফিরোজ ঢালী (৪৫) নামে এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন।
শুক্রবার (১৭ ডিসেম্বর) বেলা ১১টার দিকে রামপাল উপজেলার কাদিরখোলা এলাকায় বেলাল ব্যাপারী ও তার লোকেরা ফিরোজের ওপর এ হামলা করেন। এ সময় ফিরোজের সঙ্গে থাকা আরও তিনজন আহত হন। পরে আহত অবস্থায় ফিরোজকে প্রথমে রামপাল ঝনঝনিয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও পরবর্তীতে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বিকেলে ফিরোজ মারা যান। খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিহতের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে।
বিজ্ঞাপন
এর আগে ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে যাওয়ার পথে জামুর লোকেরা বেলালের লোকদের ওপর হামলা করে। হামলার ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ছয়জনকে আটক করেছে পুলিশ।
নিহত ফিরোজ ঢালী রামপাল উপজেলার কাস্টোবাড়িয়া এলাকার মৃত আশ্বাদ আলীর ছেলে।
বিজ্ঞাপন
আহতরা হলেন- কাদিরখোলা এলাকার আওরঙ্গজেব (৪২), হানিফ (৩৮) আকরাম ঢালী (৪৭)। হতাহতরা সবাই রামপাল উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও রামপাল সদর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান জামিল হাসান জামুর অনুসারী।
জামিল হাসান জামু বলেন, সকাল সাড়ে ১০টার দিকে আমাকে বাড়ির সামনে নামিয়ে দিয়ে ফিরোজ ঢালীসহ চারজন দুটি মোটরসাইকেল করে কাদিরখোলা এলাকায় ফিরোজের বাড়ির দিকে যাচ্ছিল। কিছু দূর যাওয়ার পরে বেলাল ব্যাপারী, বেলালের ভাই বাকিসহ ৩০-৪০ জন ফিরোজদের মোটরসাইকেলের গতিরোধ করে মারধর শুরু করে। মারধরে তারা জ্ঞান হারালে হামলাকারীরা তাদের রাস্তার ওপর ফেলে চলে যায়। পরে তাদের উদ্ধার করে প্রথমে রামপাল ঝনঝনিয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। অবস্থা গুরুতর হওয়ায় ফিরোজ ও হানিফকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বিকেলে ফিরোজ ঢালী মারা যায়। অপর আহতদের মধ্যে হানিফকে হাত ও পা ভাঙা অবস্থায় খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বাকিরা রামাপালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
হামলায় অভিযুক্ত প্রভাবশালী বেলাল ব্যাপারী বলেন, ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে যাওয়ার অপরাধে জামুর লোকেরা আমাদের ওপর হামলা করেছে। সেই জেরে আমার লোকেরা ফিরোজের ওপর হামলা করে। তবে কেউ মারা গেছে কিনা আমি জানি না।
রামপাল সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. নাসির উদ্দিন হাওলাদার বলেন, স্থানীয় প্রভাব বিস্তারকে কেন্দ্র করে এই হামলার ঘটনা ঘটেছে। এই হামলার আগে জামিল হাসান জামুর লোকেরা বেলাল ব্যাপারীর লোকদের ওপর হামলা করেছিল বলে শুনেছি।
রামপাল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শামসুদ্দিন বলেন, স্থানীয় প্রভাব বিস্তারকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের সংঘর্ষে একজন নিহত হয়েছেন। আমরা জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ছয়জনকে আটক করেছি। ফের সংঘর্ষ এড়াতে এলাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। সন্ধ্যা পর্যন্ত নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি। ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের আইনের আওতায় আনতে পুলিশ কাজ শুরু করেছে।
তানজীম আহমেদ/আরএআর