হাবিবুর রহমান আরজু

‘কিসের আওয়ামী লীগ? নৌকা তো জনগনের মার্কা না। নৌকা ধুয়ে কেউ পানি খায় না। নৌকা একটা কেন ৩০টা নিয়ে আসলেও কাজ হবে না।’ শেরপুরের শ্রীবরদি উপজেলার ৭ নম্বর ভেলুয়া ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী হাবিবুর রহমান আরজু এক জনসভায় এসব কথা বলেছেন। তার ওই বক্তব্যের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি পদে থেকে আরজুর এমন বক্তব্যে ক্ষুব্ধ দলের প্রবীণ নেতারা।

এ বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শ্রীবরদি উপজেলার একাধিক আওয়ামী লীগ নেতা ঢাকা পোস্টকে বলেন, আরজুর এমন বক্তব্য শিষ্টাচার বহির্ভূত। নৌকা শুধু শ্রীবরদি উপজেলার ৭ নম্বর ভেলুয়া ইউনিয়নের রেজাউলের মার্কা না। নৌকা স্বাধীনতার প্রতীক। নৌকা বঙ্গবন্ধুর মার্কা।

আগামী ২৬ ডিসেম্বর শেরপুরের শ্রীবরদি উপজেলায় চতুর্থ ধাপে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। হাবিবুর রহমান আরজু শ্রীবরদি উপজেলার ৭ নম্বর ভেলুয়া ইউনিয়নের আনারস প্রতীকের প্রার্থী। 

একই ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ থেকে দলীয় মনোনয়ন নিয়ে নৌকা প্রতীকে নির্বাচন করছেন রেজাউল করিম। তিনি বলেন, আমি সব আচরণবিধি মেনে নির্বাচন পরিচালনা করে আসছি। কিন্তু বিদ্রোহী প্রার্থী আনারস প্রতীকের মো. হাবিবুর রহমান আরজু তার সন্ত্রাসী দল নিয়ে আমাকে প্রাণনাশের হুমকি দিচ্ছে। তাদের হাতে অবৈধ অস্ত্রসহ দেশীয় অস্ত্র আছে। তাদের নামে বিভিন্ন ধরণের সরকারবিরোধী মামলা মোকদ্দমা রয়েছে। তাদেরকে প্রতিহত করতে না পারলে যেকোনো সময় আমাকে হত্যা করে নির্বাচন বানচাল করা হতে পারে বলে আশঙ্কা করছি। 

রেজাউল করিম আরও বলেন, বিগত নির্বাচনগুলোতে আরজু বিভিন্ন সন্ত্রাসী কার্যক্রমের মাধ্যমে ভোটারদের ভয়ভীতি দেখিয়েছেন। কেন্দ্রের প্রত্যেক বুথে প্রতিপক্ষের এজেন্ট বের করে দিয়ে তার নিজের পছন্দ মতো প্রতীকে ভোট দিতে বাধ্য করেছেন। গত ১১ ডিসেম্বর ঝগড়ার চর বাজারে আমার নিজ বাসার সামনে কর্মীরা নৌকা উত্তোলন করতে গেলে সেখানেও বাধার সৃষ্টি করে। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এই বিষয়ে ইতোমধ্যে আমি জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার ও জেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কাছে মৌখিক এবং লিখিত অভিযোগ জানিয়েছি।

আনারস প্রতীকের প্রার্থী হাবিবুর রহমান আরজু ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমি নৌকা প্রতীক নিয়ে কোনো কথা বলিনি। আমার জনসভার যে ভিডিওটি ফেসবুকে এসেছে, সেখানে আমি ব্যক্তিকে উদ্দেশ করে বলেছিলাম। কারণ নৌকা প্রতীকের প্রার্থী রেজাউল করিম একজন জনবিচ্ছিন্ন লোক। তিনি গতবারও নৌকা প্রতীকে মননোয়ন পেয়ে ফেল করেছেন। নৌকা আমাদের জাতীয় প্রতীক। এটাকে খাট করে দেখার সুযোগ নেই।

এ বিষয়ে শ্রীবরদি উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোতাহারুল ইসলাম লিটন ঢাকা পোস্টকে বলেন, একজন যুবলীগ নেতার এমন বক্তব্য ন্যাক্কারজনক। আমরা কখনই এমন বক্তব্য কোনো প্রার্থীর কাছ থেকে আশা করি না। নৌকা হচ্ছে স্বাধীনতার প্রতীক, বঙ্গবন্ধু ও শেখ হাসিনার প্রতীক। তার এমন বক্তব্যে আমরা বিব্রত।

জাহিদুল খান সৌরভ/আরএআর