রামকান্তপুর ইউনিয়নের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান মো. ইশারত হোসেন

ফরিদপুরের সালথা উপজেলার রামকান্তপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান মো. ইশারত হোসেন আড়াই ঘণ্টার প্যারোলে মুক্তি নিয়ে শপথগ্রহণ করেছেন। শপথগ্রহণ শেষে তাকে আবার জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

বুধবার (২২ ডিসেম্বর) বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে ফরিদপুর জেলা প্রশাসকের সভাকক্ষে সালথা ও নগরকান্দা উপজেলার ১৬ ইউনিয়নের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যানদের শপথবাক্য পাঠ করান জেলা প্রশাসক অতুল সরকার। 

ফরিদপুর জেলা কারাগার সূত্রে জানা গেছে, জেলা প্রশাসকের নির্দেশে নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান মো. ইশারত হোসেনকে আড়াই ঘণ্টার জন্য প্যারোলে মুক্তি দেওয়া হয় দুপুর আড়াইটার দিকে। পরে পুলিশি পাহারায় তাকে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে নেওয়া হয়। শপথগ্রহণ শেষে সেখান থেকে বিকেল পাঁচটার দিকে আবার কারাগারে নেওয়া হয়।

শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের স্থানীয় সরকার শাখার উপপরিচালক দীপক কুমার রায়, সালথা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোছা. তাছলিমা আকতার ও নগরকান্দা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জেতী প্রু।

প্রসঙ্গত, সালথা ও নগরকান্দা উপজেলার সকল ইউনিয়নে দ্বিতীয় ধাপে গত ১১ নভেম্বর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। জেল থেকেই নির্বাচনে অংশ নিয়ে সালথার রামকান্তপুর ইউনিয়নে স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. ইশারত হোসেন টেলিফোন প্রতীকে ৩৩৪৮ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন স্বতন্ত্র প্রার্থী কামাল হোসেন (টেবিল ফ্যান)। তিনি পেয়েছিলেন ১ হাজার ৭৯২ ভোট।

সালথা থানা ও উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, এ বছরের ৫ এপ্রিল সন্ধ্যায় সালথার ফুকরা বাজারে লকডাউনের কার্যকারিতা পরিদর্শনে যান সালথার তৎকালীন সহকারী কমিশনার (ভূমি) মারুফা সুলতানা খান হীরামনি। এ সময় তার গাড়ি থেকে নেমে কয়েক ব্যক্তি বাজারে উপস্থিত কয়েকজনকে লাঠিপেটা করে বলে অভিযোগ ওঠে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে গুজব ছড়িয়ে পড়ে। সন্ধ্যা ৭টা থেকে রাত ১১ পর্যন্ত কয়েক হাজার মানুষ সালথা উপজেলা চত্বরে দেশীয় অস্ত্র ঢাল-কাতরা ও লাঠিসোটা নিয়ে সরকারি দফতর ও থানায় প্রবেশ করে তাণ্ডব চালায়। দুটি সরকারি গাড়িসহ বেশ কয়েকটি মোটরসাইকেল সম্পূর্ণ পুড়িয়ে দেওয়া হয় তখন। এ ঘটনায় দুই যুবক নিহত হন। আরেক যুবক পুলিশ হেফাজতে মারা যান।

তাণ্ডবের এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে দুটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় সালথা থানা পুলিশ গত ১৪ এপ্রিল ইশারত হোসেনকে গ্রেফতার করে। এরপর থেকে তিনি ফরিদপুর জেল হাজতে আছেন। জেল থেকেই তিনি রামকান্তপুর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী হয়ে স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করেন।

জহির হোসেন/এইচকে