করোনা মহামারির মধ্যে বিশেষ ব্যবস্থায় অনুষ্ঠিত এ বছরের এসএসসি পরীক্ষায় রংপুর জেলার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো থেকে গড়ে ৯৪ দশমিক ৭৯ শতাংশ শিক্ষার্থী পাস করেছে। জিপিএ-৫ পেয়েছে ৪ হাজার ৪০৪ জন শিক্ষার্থী। পাসের হার বিবেচনায় ছেলেদের তুলনায় মেয়েরা এগিয়ে রয়েছে।

বৃহস্পতিবার (৩০ ডিসেম্বর) প্রকাশিত ফলাফলে দেখা যায়, দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডের অধীনে রংপুর জেলার ৩৬ হাজার ৪৮২ জন শিক্ষার্থী এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছিল। এর মধ্যে ছেলে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১৮ হাজার ২৭২ জন আর মেয়ে পরীক্ষার্থী ছিল ১৮ হাজার ২১০ জন। মোট পরীক্ষার্থীর মধ্যে ৩৪ হাজার ৫৮৩ জন পরীক্ষার্থী কৃতকার্য হয়েছে। পাসের হার ৯৪ দশমিক ৭৯ শতাংশ।

পরীক্ষায় অংশ নেওয়া ছেলেদের মধ্যে ১৭ হাজার ১২৮ জন কৃতকার্য হয়েছে। পাসের হার ৯৩ দশমিক ৭৪ শতাংশ। মেয়েদের মধ্যে ১৭ হাজার ৪৫৫ জন কৃতকার্য হয়েছে । পাসের হার ৯৫ দশমিক ৮৫ শতাংশ।

দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডের তথ্যানুযায়ী, এই বোর্ডে বিগত বছরগুলোর তুলনায় এ বছরের ফলাফলে পাসের হার ও সর্বোচ্চ জিপিএধারীর সংখ্যা উভয়ই বেড়েছে। গত বছর এ বোর্ডের পাসের হার ছিল ৮২ দশমিক ৭৩। আর এ বছর ৯৪ দশমিক ৮০ শতাংশ শিক্ষার্থী কৃতকার্য হয়েছে। গত বছর ১২ হাজার ৮৬ জন শিক্ষার্থী জিপিএ-৫ পেলেও এবারে পেয়েছে ১৭ হাজার ৫৭৮ জন।  

রংপুর জেলার শীর্ষস্থানীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো বরাবরের মতো এবারও ভালো ফলাফল করেছে। রংপুর ক্যাডেট কলেজের ৫২ জন পরীক্ষার্থীর সবাই জিপিএ-৫ পেয়েছে। দি মিলেনিয়াম স্টারস স্কুলের ১৪৩ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ১৩৩ জন সর্বোচ্চ ফলাফল পেয়েছে। রংপুর ক্যান্টনমেন্ট স্কুল ও কলেজের ৪৯৪ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ৪৩১ জন জিপিএ-৫ পেয়েছে।

এছাড়াও রংপুর জিলা স্কুলের ২৩৭ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ১৯২ জন, রংপুর পুলিশ লাইন্স স্কুল অ্যান্ড কলেজের ৪৬৩ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ৩৩২ জন, রংপুর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ২৬১ জন পরীক্ষার্থীর  মধ্যে ১৮৬ জন, রংপুর কালেক্টরেট স্কুলের ২২৪ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ১৬৪ জন জিপিএ-৫ পেয়েছে।

ফলাফল পেয়ে উচ্ছ্বসিত শিক্ষার্থীরা। দুপুরে বিদ্যালয়গুলোতে গিয়ে আনন্দমুখর পরিবেশ লক্ষ্য করা গেছে। শিক্ষার্থীদের হৈ হুল্লোড় করে ছবি তুলতে দেখা গেছে। 

রুদমিলা রিসতা নামে এক শিক্ষার্থী বলে, ফলাফল নিয়ে টেনশনে ছিলাম। জিপিএ-৫ পেয়েছি। খুব আনন্দ লাগছে। একই রকম অনুভূতি প্রকাশ করে ফুয়াদ আলম নামের এক পরীক্ষার্থী। এখন কলেজে ভর্তির জন্য তর সইছে না বলে জানায় সে।

রফিকুল ইসলাম নামে একজন অভিভাবক জানান, করোনা মহামারিতে বাচ্চার ফলাফল নিয়ে চিন্তিত ছিলাম। তেমন ক্লাস হয়নি। তবু ভালো রেজাল্ট করায় সংশয় কেটে গেছে।

শিক্ষা গবেষক ও রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক উমর ফারুক বলেন, এ বছর সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে তিনটি নৈর্বাচনিক বিষয়ে পরীক্ষা হয়েছে। এছাড়া প্রশ্নপত্রে বিকল্প প্রশ্ন বেশি ছিল। শিক্ষার্থীরা বাসায় পড়াশোনার সুযোগ পেয়েছে। সব মিলিয়ে পরীক্ষার ফলাফল ভালো হয়েছে।

রংপুর জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মোছা. রোকসানা বেগম বলেন, করোনা পরিস্থিতিতে পরীক্ষা গ্রহণ কঠিন ছিল। সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে পরীক্ষা নেওয়া এবং স্বল্প সময়ে ফলাফল প্রকাশ শিক্ষাব্যবস্থায় নতুন সংযোজন।

ফরহাদুজ্জামান ফারুক/আরএআর