বছরের প্রথম দিনে কুয়াশার চাদরে ঢাকা পড়েছে উত্তরের প্রান্তিক জেলা পঞ্চগড়। জেলাজুড়ে জেঁকে বসেছে কনকনে শীত৷ পৌষের মাঝামাঝিতে মাঘের শীতের দাপটে চরম দুর্ভোগে পড়েছে সাধারণ ও খেটে খাওয়া নিম্নআয়ের মানুষ।

শনিবার (১ জানুয়ারি) সকাল ৯টায় পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৯ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা সারা দেশের মধ্যে সর্বনিম্ন।

এদিকে সরেজমিনে দেখা যায়, দুদিন আগে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি আর হিমালয়ের হিম বাতাস বয়ে যাওয়ায় আজ হঠাৎ কুয়াশার মাত্রা ও শীতের দাপট বৃদ্ধি পেয়েছে। গতকাল (শুক্রবার) সন্ধ্যা থেকে এ জেলার উপর দিয়ে হিমেল হাওয়া ও কুয়াশা আচ্ছাদিত হয় এবং তা ভোর থেকে আরও তীব্র হয়। বেলা বাড়ার সঙ্গে সূর্যের আলো খানিকটা উঁকি দিলেও উত্তাপ নেই। ফলে কনকনে শীতে চরম বিপাকে পড়েছেন খেটে খাওয়া ও নিম্ন আয়ের মানুষ। শীতের কারণে তারা সময় মতো কাজে যোগ দিতে পারছে না। তার মধ্যে অনেকে গরম কাপড়ের অভাবে শীতে কাঁপছে। এ কষ্টে পড়েছে জেলার শ্রমিক, কৃষক, দিনমজুর, ভ্যান ও রিকশা চালকসহ নিম্নআয়ের মানুষ। তাদের দাবি শীত এলেই কষ্ট বাড়ে। জোটে না তেমন কোনো শীতবস্ত্র।

এদিকে জেলা প্রশাসক বলছে, চলতি শীত মৌসুমে জেলার ৫ উপজেলায় ও ৩টি পৌরসভায় মোট ২৩ হাজার ৬শ শীতবস্ত্র উপজেলা প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে গরীব, অসহায় ও শীতার্ত মানুষের মধ্যে বিতরণ করা হয়েছে। পাশাপাশি দুর্যোগ ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ে শীতবস্ত্রের চেয়ে চাহিদাপত্র পাঠানো হয়েছে।

জেলা শহরের দিনমজুর রমজান আলী বলেন, এবার সবচেয়ে বেশি শীত অনুভূত হচ্ছে আজ। সকাল থেকে ঘন কুয়াশা আর শীতের কারণে আমরা কাজে যেতে পারছি না, বেকার সময় পার করছি। একদিকে আমাদের পেটার ক্ষুধা, আরেকদিকে শীতবস্ত্রের অভাব। খুব কঠিন সময় পার করছি।

একই কথা বলেন জেলার তেঁতুলিয়া উপজেলার ভজনপুর এলাকার বালুশ্রমিক আবু বক্কর বলেন, সকাল থেকে খুব শীত। নদীতে নেমে আমরা বালু উত্তোলন করি কিন্তু পানি ঠান্ডা হওয়ার কারণে নামতে পারছি না। রোদে অপেক্ষায় বসে আছি। কাজ না করলে তো জীবন চলবে না। তাই যতই শীত আসুক কাজ করে চলতে হয় আমাদের।

জানতে চাইলে তেঁতুলিয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রাসেল শাহ বলেন, আজ অন্যদিনের তুলানায় কুয়াশা ও শীতের তীব্রতা বেশি দেখা গেছে। সকাল ৯টায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৯ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

জেলা প্রশাসক জহুরুল ইসলাম বলেন, পঞ্চগড়ে প্রতি বছর শীত আগে অনুভূত হয় এবং মৌসুমের শেষে বিদায় নেয়। প্রতি বছরের মতো এবারও শীত মোকাবিলা করার জন্য জেলা প্রশাসন সার্বিক প্রস্তুতি নিয়েছে। আমরা ইতোমধ্যে গরীব, অসহায় ও শীতার্ত মানুষের মধ্যে শীতবস্ত্র বিতরণ শুরু করেছি।

মো. রনি মিয়াজী/এসএসএইচ