উদ্বোধনের আগেই শহীদ স্মৃতিস্তম্ভ ভাঙচুর
রংপুরের বদরগঞ্জে উদ্বোধনের আট দিন আগেই বীর সেনা শহীদ লে. কর্নেল মুহম্মদ আব্দুল কাদিরের স্মরণে তার জন্মভিটায় নবনির্মিত স্মৃতিস্তম্ভ ভাঙচুর করেছে দুর্বৃত্তরা। আগামী ৮ জানুয়ারি শনিবার বীর সেনা শহীদ লে. কর্নেল মুহম্মদ আব্দুল কাদির স্মরণে নির্মিত এই স্মৃতিস্তম্ভের উদ্বোধন করার কথা রয়েছে।
শনিবার (১ জানুয়ারি) দুপুরে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে পুলিশ। এর আগে শুক্রবার (৩১ ডিসেম্বর) মধ্যরাতের কোনো একসময়ে নবনির্মিত স্মৃতিস্তম্ভের অত্যাধুনিক কয়েকটি বৈদ্যুতিক বাতি ভেঙে নিয়ে গেছে দুর্বৃত্তরা।
বিজ্ঞাপন
মুক্তিযুদ্ধে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে শহীদ লে. কর্নেল মুহম্মদ আব্দুল কাদিরের নামে নাটোরের কাদিরাবাদ সেনানিবাসের নামকরণ করা হয়।
এদিকে স্থানীয় ও পরিবার সূত্রে জানা যায়, শহীদ লে. কর্নেল মুহম্মদ আব্দুল কাদিরের জন্মভিটা বদরগঞ্জে তার নামে স্মৃতি কমপ্লেক্স ও চিকিৎসাসেবা কেন্দ্র নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছেন সাংবাদিক নাদীম কাদির। সেখানকার দামোদরপুর ইউনিয়নের চিকলী নদীর তীরে একটি স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করা হয়েছে। সেখানে প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত একজন পাহারা দিয়ে থাকেন। রাতে কেউ না থাকার সুযোগে কে বা কারা স্মৃতিস্মম্ভ থেকে কয়েকটি লাইট ভেঙে নিয়ে গেছে।
বিজ্ঞাপন
বিষয়টি নিয়ে শনিবার দুপুরে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে বলে জানিয়েছেন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাবিবুর রহমান। তিনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, সরেজমিন তদন্ত করা হয়েছে। এ ঘটনার সঙ্গে কারা জড়িত, তা জানার চেষ্টা চলছে। জড়িতদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় নেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, শহীদ লেফট্যানেন্ট কর্নেল মুহম্মদ আব্দুল কাদির উপজেলার দামোদরপুর ইউনিয়নের মোস্তফাপুর গ্রামের আবুল হোসেন মিয়ার ছেলে। তিনি ১৯২৯ সালের ২ জানুয়ারি জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৪৯ সালে পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে কমিশন লাভ করেন। তিনি চট্টগ্রামের পাঁচলাইশ আবাসিক এলাকার ৭০ নম্বর সরকারি বাড়িতে পরিবারসহ বসবাস করতেন। পাকিস্তানি সেনারা জানতে পেরে ১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিল বাসা থেকে তাকে ধরে নিয়ে যান। এরপর থেকে নিখোঁজ ছিলেন কর্নেল কাদির।
স্বাধীনতার ৩৬ বছর পর ২০০৭ সালে চট্টগ্রামের পাঁচলাইশে বাবার কবর খুঁজে পায় আব্দুল কাদিরের ছেলে সাংবাদিক নাদীম কাদির। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে ২০১১ সালে দেহাবশেষ তার নামে করা নাটোরের কাদিরাবাদ সেনানিবাসে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় পুনরায় সমাহিত করা হয়।
ফরহাদুজ্জামান ফারুক/এনএ