‘দেশে কি গরিব মানুষের কেউ নেই? আমরা মিথ্যা মামলায় আসামি হয়েছি। এদিকে তারা বাড়ি সবকিছু লুটপাট করে নিয়ে গেছে। এই ভয়ে পরিবারের কেউ বাড়িতে ঢুকতে পারছি না। ঠান্ডার দিন শীতের কাপড়ও নিতে পারি নাই। পরিবারের সবাই বিভিন্ন স্থানে পালিয়ে বেড়াচ্ছি। মিথ্যা মামলা থেকে বাঁচতে সরকারসহ প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।’

রোববার (২ জানুয়ারি) দুপুরে শহরের কলেজ রোডস্থ ইউনাইটেড প্রেসক্লাব হলরুমে কুড়িগ্রাম পৌর শহরের ভেলাকোপায় ভূমিদস্যু সাইফুদ্দিন এ্যাপোলো কর্তৃক জমি দখল, লুটপাট, বসতবাড়ি উচ্ছেদ, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড এবং হয়রানিমূলক মিথ্যা মামলার প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করে ওপরের কথাগুলো বলেছেন মোহাম্মদ আলী নামের এক ভুক্তভোগী।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, কুড়িগ্রাম শহরতলির ভেলাকোপা আবাসিক এলাকায় বাণিজ্যিকভাবে ফ্লাওয়ার মিলের অবকাঠামো নির্মাণ করেন সাইফুদ্দিন এ্যাপোলা নামের এক প্রভাবশালী ব্যবসায়ী। নির্মাণকাজ করলেও ওই মিলে প্রবেশের ৩ শতক জায়গা একই গ্রামের মোহাম্মদ আলীর ছেলে মো. রিপন মিয়ার। প্রভাবশালী ওই ব্যবসায়ী রিপন মিয়ার কাছ থেকে জোর করে তার মালিকানাধীন ৩ শতক জমি কিনতে চাইলে জমি বিক্রিতে অপরাগতা প্রকাশ করেন রিপন। পরে সাইফুদ্দিন এ্যাপোলো কিনতে না পারায় জোর করে রিপনের জমি দখলের চেষ্টা করেন।

অভিযোগে আরও জানা যায়, এ সময় বাধা দিলে আদালতে পরপর ৭টি মামলা দেন সাইফুদ্দিন। এসব মামলার গ্রেফতারি পরোয়না হওয়ায় রিপনের পরিবারের সব সদস্য আত্মগোপনে থাকার সুযোগে গত ২৫ ডিসেম্বর সকালে শহরের চিহ্নিত স্বশস্ত্র শতাধিক সন্ত্রাসীর উপস্থিতিতে জায়গার দখল, লুটপাট, বসতবাড়ি উচ্ছেদসহ সন্ত্রাসী তাণ্ডবলীলা চালায় সাইফুদ্দিন এ্যাপোলো গং।

পরে সন্ত্রাসীদের উপস্থিতিতে জমি দখল নিয়ে পাকা বাউন্ডারি দেওয়া হয়। ভুক্তভোগী পরিবারটি থানায় এবং ৯৯৯ ফোন করেও কোনো প্রতিকার না পেয়ে অবশেষে সাংবাদিকদের শরণাপন্ন হয়।

এ সময় সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ার সাংবাদিকরা।

কুড়িগ্রাম সদর থানার পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খান মোহাম্মদ শাহারিয়ার বলেন, সাইফুদ্দিন এ্যাপোলো মোহাম্মদ আলী কাছের জমি কিনে বাড়ি নির্মাণ করেছেন এবং নির্মাণাধীন ওই বাড়ির সামনে তাদের জায়গা আছে দাবি করে এ্যাপোলোর বাড়ির গেট বন্ধ করে দিয়েছেন মোহাম্মদ আলী। পরে এ্যাপোলো আদালতে মামলা করেন। ওই মামলা এখনো চলমান রয়েছে।

তিনি বলেন, মোহাম্মদ আলীর ছেলে এ বিষয়ে থানায় অভিযোগ করেছে কোনো কাগজপত্র দেয় নাই। যেহেতু জমিজমা-সংক্রান্ত সমস্যা, আমরা বলেছি জমির খারিজ অথবা হালনাগাদ কাগজপত্র নিয়ে এলে আমরা ব্যবস্থা নেব।

মো. জুয়েল রানা/এনএ