বিএনপির নির্বাচনী অফিসে হামলা

চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা পৌরসভা নির্বাচনে আনুষ্ঠানিক প্রচার-প্রচারণা শুরুর চারদিনের মাথায় নির্বাচনী অফিসে হামলার ঘটনা ঘটেছে। বিএনপি মনোনীত ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী আলহাজ মীর মহিউদ্দিন ও মোবাইল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধা এম সবেদ আলীর নির্বাচনী অফিসে এ হামলা ও ভাঙচুর করা হয়েছে। 

সোমবার (১ ফেব্রুয়ারি) রাত সাড়ে ১০টার দিকে আলমডাঙ্গা পৌর এলাকার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের বন্ডবিল হাজরাতলায় বিএনপির নির্বাচনী অফিস ও রাত ১১টার দিকে ৪ নম্বর ওয়ার্ডের আনন্দধামে স্বতন্ত্র প্রার্থীর অফিসে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। তাৎক্ষণিক ঘটনার পর প্রতিবাদ জানিয়ে শহরে প্রতিবাদ মিছিল বের করে স্বতন্ত্র প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকরা। পৌর এলাকায় যে কোনো প্রকার অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। বর্তমানে শহরে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।

ঘটনার পর চুয়াডাঙ্গার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) জাহাঙ্গীর আলম, আলমডাঙ্গার থানার ওসি আলমগীর কবিরসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। 

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সোমবার রাত ১০টার দিকে কে বা কারা ১৫-২০টি মোটরসাইকেলযোগে আনন্দধাম হাউসপুরে স্বতন্ত্র প্রার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধা এম সবেদ আলীর নির্বাচনী অফিস ভাঙচুর করে। এ সময় অফিসে ৭-৮ জন স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থক বসে কথা বলছিলেন। হঠাৎ তারা অফিসে প্রবেশ করে ভাঙচুর করেই মোটরসাইকেল নিয়ে স্থান ত্যাগ করেন। প্রায় একই সময়ে পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের বন্ডবিলে বিএনপির প্রার্থী মীর মহিউদ্দিনের নির্বাচনী অফিসও ভাঙচুর করেন এক দল যুবক। 

এ বিষয়ে বন্ডবিল হাজরাতলা বিএনপির নির্বাচনী অফিসের কর্মী ও সমর্থকরা বলেন, আমরা সন্ধ্যা থেকেই অফিসে বসে নির্বাচনী কর্মকাণ্ড পরিচালনা করছিলাম। হঠাৎ আনুমানিক রাত সাড়ে ৯টার দিকে মোটরসাইকেলযোগে ১০ থেকে ১৫ জন আমাদের অফিসের সামনে আসে এবং অতর্কিতভাবে অফিস ভাঙচুর করে। আমাদের কর্মীদের বেধড়ক মারপিট করতে থাকে। পরে তারা মোটরসাইকেলযোগে আলমডাঙ্গা শহরের দিকে চলে যায়।। 

এ বিষয়ে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী মীর মহিউদ্দিন জানান, সোমবার রাতে হঠাৎ আমার নির্বাচনী অফিসে অজ্ঞাতনামা ১০-১৫ জন যুবক হামলা চালায় ও অফিস ভাঙচুর করে। তারা আমার কর্মীদের মারধর করে। হামলাকারীরা আওয়ামী লীগের ক্যাডার বলেই আমার ধারণা। আমি বিষয়টি জানতে পেরে সঙ্গে সঙ্গে আলমডাঙ্গা থানায় অভিযোগ করি। খবর পেয়ে আলমডাঙ্গা থানা পুলিশের একটি টিম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে।  

স্বতন্ত্র প্রার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধা এম সবেদ আলী বলেন, আমার অফিসে কে বা কারা ২০-২৫টি মোটরসাইকেল নিয়ে এসে ভাঙচুর চালিয়েছে। আমার কর্মীদের ওপর হামলা করেছে। ভীতির পরিবেশ তৈরি করতেই এই হামলা চালানো হয়েছে বলে আমি মনে করি। আমি এর তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি ও প্রশাসনের কাছে সুবিচার কামনা করছি। এ বিষয়ে বেশ কয়েকজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের নামে থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছি।

আলমডাঙ্গা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলমগীর কবির বলেন, খবর পেয়ে রাতেই ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করা হয়েছে৷ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এ ঘটনায় স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষ থেকে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্তপূর্বক আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। 

আফজালুল হক/আরএআর