ছোটবেলা থেকেই বাবার সঙ্গে জমিতে কাজ করে আসছেন কলেজছাত্র আবু সাঈদ। কাজ করতে গিয়ে দেখেছেন রোদে কৃষকদের কাজ করার কষ্ট ও ভোগান্তি। একদিন তরা ইচ্ছা জাগে কৃষকদের এই কষ্ট লাঘব করবেন। সেই ইচ্ছা থেকে আবু সাইদ উদ্ভাবন করেছেন স্মার্ট হেলমেট।

বুধবার (১২ জানুয়ারি) চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলায় ৪৩তম দুই দিনব্যাপী বিজ্ঞান মেলার আযোজন করা হয়। নবাবগঞ্জ সিটি কলেজের বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ তার এই প্রকল্প নিয়ে অংশগ্রহণ করেন।

এইচএসসি পরীক্ষা সম্পন্ন করা আবু সাঈদ ঢাকা পোস্টকে জানান, গ্রীষ্মকালে প্রখর রোদ্রে কৃষকদের মাঠে কাজ করতে ভোগান্তি পোহাতে হয়। এ চিন্তা থেকেই হেলমেট তৈরি করেছি। ৪ ভোল্টের একটি মোটর, পাখা, ব্যাটারি, সোলার প্যানেল, বৈদ্যুতিক তার ও একটি লাইট— এ ছয়টি উপকরণ দিয়ে এটি তৈরি করা হয়েছে।

সাঈদ জানান, এখানে এমন কৃষি টেকনোলজি ব্যবহার করা হয়েছে যে কৃষক জমিতে কাজ করার সময় হেলমেট মাথায় পরে কাজ করতে পারবেন। হেলমেটে থাকা সোলার প্যানেলে বিদ্যুৎ সরবরাহ হবে। পাখা থেকে বাতাস উপভোগ করতে পারবেন। ফলে কৃষিকাজে বিঘ্ন ঘটবে না। কৃষকরা সময় বাঁচানোর জন্যও রাতে ওই লাইট দ্বারা কৃষিকাজ করতে পারবেন।

কৃষিকাজ করার সময় কোনো তথ্যের দরকার হলে স্মার্টফোন দিয়ে গুগলে সার্চ দেন কৃষকরা। হঠাৎ ওই কৃষকের কাছে থাকা মোবাইলটি চার্জ না থাকায় বন্ধ হয়ে গেলে স্মার্ট হেলমেটে থাকা ইউএসবি পোর্ট থেকে সহজেই চার্জ করতে পারবেন কৃষকরা।

আবু সাইদ এর আগে ভূমিকম্প শুরুর আগেই অ্যালার্ম, পেট্রল ও পানি দিয়ে আগুন উৎপন্ন করা, স্বল্প মূল্যে বিদুৎ উৎপাদনসহ বিভিন্ন সৃষ্টিশীল ও সৃজনশীল প্রযুক্তি উদ্ভাবন করেছেন। এসব উদ্ভাবন দিয়ে উপজেলা পর্যায়ে বিভিন্ন পুরস্কার পান তিনি।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ইফফাত জাহান মুঠোফোনে ঢাকা পোস্টকে বলেন, প্রান্তিক পর্যায় থেকে শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন সৃষ্টিশীল আইডিয়া বা উদ্ভাবন বের করে আনায় এই বিজ্ঞান মেলার উদ্বোধন। এই মেলায় যারা ভালো করে, বিভাগীয় বা জাতীয় পর্যায়ে সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয় থেকে তাদের সহযোগিতা করা হয়। শিক্ষার্থীদের উদ্ভাবনী শক্তিকে কাজে লাগানোর পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন উন্নয়নে ভূমিকা রাখে বিজ্ঞান মেলা।

উল্লেখ্য, উপজেলা পর্যায়ে ৪৩তম বিজ্ঞান মেলার সমাপনী হবে আগামীকাল (বৃহস্পতিবার)। মেলায় ১৮টি স্টল অংশগ্রহণ করছে।

মো. জাহাঙ্গীর আলম/এনএ