পুলিশের প্রেমের ফাঁদে ধরা পড়ল ধর্ষণ মামলার আসামি
গ্রেফতার সুজিত নম বিশ্বাস
অপরাধীদের ধরতে পরিস্থিতি অনুযায়ী নানা কৌশল অবলম্বন করতে হয় পুলিশকে। যে কোনো ধরনের কৌশল বা পন্থা অবলম্বন করে আসামিকে গ্রেফতারে তৎপর থাকেন পুলিশ সদস্যরা। তেমনি ফেসবুকে প্রেমের ফাঁদ পেতে ধর্ষণ মামলার এক আসামিকে ভারত থেকে বাংলাদেশে এনে গ্রেফতার করেছেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সিলেটের জৈন্তাপুর মডেল থানা পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) শফিকুল ইসলাম।
গ্রেফতার আসামির নাম সুজিত নম বিশ্বাস (২২)। তিনি জৈন্তাপুর উপজেলার বিত্তিকেল উত্তরের (গুচ্ছগ্রাম) প্রজেস নম বিশ্বাসের ছেলে। গত মঙ্গলবার (১১ জানুয়ারি) তাকে গ্রেফতার করা হয়।
বিজ্ঞাপন
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ২০২১ সালে জৈন্তাপুরের চারিকাটা ইউনিয়নের এক নারীকে ধর্ষণের অভিযোগে সুজিতের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছিল। একপর্যায়ে পুলিশ জানতে পারে, তিনি অবৈধভাবে সীমান্ত দিয়েভারতে পালিয়ে গেছেন। পরে সুজিতের সঙ্গে ফেসবুকে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা জৈন্তাপুর থানার এসআই শফিক আহমদ। প্রেমের একপর্যায়ে সুজিতের সঙ্গে দেখা করার কথা বলেন নারী পরিচয় দেওয়া পুলিশ কর্মকর্তা। এরই সূত্র ধরে গত মঙ্গলবার সন্ধ্যার দিকে জৈন্তাপুরের শ্রীপুর এলাকা দিয়ে অবৈধভাবে ভারত থেকে বাংলাদেশে প্রবেশ করলে সেখানে আগে থেকে ওঁৎ পেতে থাকা সাদা পোশাকের পুলিশ সদস্যরা সীমান্ত পাড় হতেই তাকে গ্রেফতার করে।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই কাজী শফিকুল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, মামলার তদন্ত করতে গিয়ে নিশ্চিত হয়েছিলাম আসামি ভারতে অবস্থান করছে। তারপরও তাকে গ্রেফতার করার চেষ্টা বাদ দেইনি। তার ফেসবুকে ও ইমু নাম্বারে প্রেমালাপ করে তার সঙ্গে দেখা করার প্রলোভন দেখিয়ে বাংলাদেশে নিয়ে এসে গ্রেফতার করতে পেরেছি, এজন্য ভালো লাগছে।
বিজ্ঞাপন
গ্রেফতার সুজিত প্রাথমিকভাবে জানিয়েছেন, মামলার পর তিনি অবৈধ পথে ভারতে প্রবেশ করেন। ভারতের মেঘালয়ে তার বোনের বাড়িতে আত্মগোপনে ছিলেন। সেখানে রনি রায় নামে ভারতীয় পরিচয়পত্রও তৈরি করেন তিনি। গ্রেফতারের সময় তার কাছ থেকে নিজ ছবিসহ ভারতীয় পরিচয়পত্র জব্দ করেছে পুলিশ।
জৈন্তাপুর মডেল থানা পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) মোহাম্মদ রবিউল্লাহ খাঁন জানান, অপরাধীরা যতই কৌশল অবলম্বন করুক, পুলিশের কৌশলের কাছে তাদের কৌশল কিছুই না। প্রকৃত অপরাধীদের খুঁজে বের করে আইনের আওতায় নিয়ে আসা আমাদের দায়িত্ব। এ ঘটনায় আমরা আমাদের দায়িত্ব পালন করেছি মাত্র। গ্রেফতার আসামিকে ইতোমধ্যে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
আরএআর