পিরোজপুরে বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় যোগদানকে কেন্দ্র করে এক যুবলীগ নেতাকে কুপিয়ে হাত বিচ্ছিন্ন করেছে প্রতিপক্ষ। গুরুতর আহত যুবলীগ নেতা নাদিম খানকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় আরও একজনকে কুপিয়ে আহত করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১৩ জানুয়ারি) বেলা ১১টার দিকে সদর উপজেলার কদমতলা ইউনিয়নের উত্তর কদমতলা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কদমতলা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হানিফ খান।

আহত যুবলীগ নেতা নাদিম খান (৩৫) সদর উপজেলার তেজদাসকাঠী এলাকার নজরুল ইসলাম খানের ছেলে। তিনি কদমতলা ইউনিয়ন যুবলীগের কার্যকরী সদস্য। আহত মাসুদ শেখ (২৫) উত্তর কদমতলা এলাকার আব্দুর রহিম শেখের ছেলে।

আহত মাসুদ শেখ জানান, ‘বুধবার বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের আলোচনা সভা ছিল। সেই সভায় ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হানিফ খানের নেতৃত্বে যোগদান করি। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে হানিফ খানের দলীয় প্রতিপক্ষ স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান শিহাব হোসেন ও তার ভাতিজা উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান বায়জীদ লোকজন নিয়ে আমাদের ওপর হামলা চালায়।’

সাধারণ সম্পাদক হানিফ খান বলেন, ‘স্থানীয় ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের লোকজন বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের আলোচনা সভা সফল করার জন্য যোগদান করে। বুধবার লোক বেশি থাকায় তাদের ওপর হামলা করতে পারেনি। তাই আজ বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে নেতাকর্মীদের ওপর হামলা চালানো হয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান শিহাব ও তার ভাতিজা বায়জীদের নেতৃত্বে হত্যার উদ্দেশ্যে এ হামলা চালানো হয়। সন্ত্রাসীরা নাদিমের হাত কুপিয়ে বিচ্ছিন্ন করে ফেলে। তাকে গুরুতর আহত অবস্থায় খুলনায় পাঠানো হয়েছে। হাত বিচ্ছিন্ন করা ছাড়াও নাদিমের শরীরের বিভিন্ন স্থানে ২০ থেকে ৩০টি কোপ দেওয়া হয়েছে।’

ঘটনার বিষয়ে কদমতলা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান শেখ শিহাব হোসেন জানান, ‘আমি এ ঘটনার সঙ্গে কোনোভাবেই সম্পৃক্ত নই। তবে শুনেছি এলাকায় একটি ঘটনা ঘটেছে।’ 

এ বিষয়ে কয়েকবার চেষ্টা করেও সদর উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান এস এম বায়জীদ হোসেনের বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

পিরোজপুর জেলা হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. আরিফ হাসান জানান, ‘দুজনকে আহত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়েছে। যার মধ্যে একজনের হাত বিচ্ছিন্ন থাকায় তাকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। অন্যজনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ভর্তি করা হয়েছে। আহত নাদিমের শরীরের বিভিন্ন স্থানে ধারালো অস্ত্রের গভীর ক্ষত রয়েছে।’

পিরোজপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আ জা মো. মাসুদুজ্জামান জানান, ‘ঘটনার পরপরই পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। থানায় এখনো কোনো অভিযোগ আসেনি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

মো. আবীর হাসান/এনএ/জেএস