বালু-মাটিসহ অতিরিক্ত ওজনের পণ্যবাহী ট্রাক চলাচলের কারণে পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার পাকশী ইউনিয়নের রূপপুর মোড় থেকে বিবিসি বাজার হয়ে লক্ষ্মীকুণ্ডা পর্যন্ত ‘মুজিববাঁধ সড়ক’টির এখন বেহাল অবস্থা। ব্যস্ততম এই সড়ক ও বাঁধে বিভিন্ন স্থান ভেঙে সেখানে ছোট-বড় অসংখ্য গর্ত ও খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে।

অপরদিকে ড্রামট্রাক, ট্রাক ও ট্রাক্টরসহ বেপরোয়া গতির বিভিন্ন গাড়ি চলাচলের কারণে এ সড়কে প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা। এ সময় ধুলাবালি উড়ে চরম ভোগান্তি পোহাচ্ছে মানুষ। ঈশ্বরদীতে পদ্মার চর থেকে বালু ও মাটি উত্তোলনের পর তা বহনকারী অতিরিক্ত ওজনের ট্রাক দীর্ঘ দিন থেকে এ সড়ক দিয়ে অবাধে যাতায়াত করায় বাঁধ ও সড়কে এ সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে বলে পাবনা সড়ক ও জনপথ কর্তৃপক্ষ এবং ঈশ্বরদী উপজেলা প্রকৌশলীর কার্যালয় দাবি করেছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, রূপপুর মোড়ের তিন বটতলা, দিয়াড় বাঘইল, চররূপপুর, নতুন রূপপুর, বিবিসি বাজার, সারেংপাড়া, নলগাড়ি, ফুটু মার্কেট, নুরুল্লাপুরসহ লক্ষ্মীকুণ্ডা ইউনিয়ন পর্যন্ত প্রায় ১০ কিলোমিটার মুজিববাঁধ সড়কের বিভিন্ন স্থান ভেঙে ছোট-বড় গর্ত ও খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে।

সড়কে ইট-পাথর ভেঙে তা উঠে যাওয়ায় ট্রাক চলাচলের সময় ধুলাবালিতে একাকার হয়ে আছে। রাস্তার পাশে নলবাড়ি সীমানায় নদীর চর থেকে বালুবোঝাই ট্রাকসহ ভারী যানবাহন চলাচলের কারণে মুজিববাঁধ সড়ক ও চরের কিছু জমির রাস্তার অংশ ভেঙে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নলগাড়ি গ্রামের এক বাসিন্দা বলেন, কিছু মানুষ বালুর ব্যবসায় সিন্ডিকেট করে চর থেকে প্রতিদিন ট্রাকবোঝাই বালু নিয়ে যাচ্ছে। মূলত স্থানীয় বালু সিন্ডিকেটের কারণে নষ্ট হচ্ছে সড়কটি। আর আমরা ধুলাবালুতে কষ্ট পোহাচ্ছি।

আমির হোসেন নামে পাকশীর একজন গ্রামবাসী জানান, প্রতিদিন এ সড়ক দিয়ে ১০০টির মতো বালুর ট্রাক-ট্রাক্টর বেপরোয়া গতিতে চলাচল করে। এতে প্রায় দুর্ঘটনা ঘটছে। কয়েকদিন আগে একটি ট্রাকের ধাক্কায় বিবিসি বাজার সড়কে স্বামী-স্ত্রী দুজন আহত হন। বর্তমানে তারা চিকিৎসাধীন।

ঈশ্বরদী উপজেলা প্রকৌশলী এনামুল কবির বলেন, মুজিববাঁধ সড়কটি ব্যস্ততম রাস্তা। প্রতিদিন এই সড়ক দিয়ে পাবনা জেলা সদর ও পার্শ্ববর্তী গ্রামাঞ্চলের অসংখ্য মানুষ চলাচল করে। অতিরিক্ত ওজনের পণ্যবাহী ট্রাক চলাচলের কারণে এ সড়কটি একেবারেই নষ্ট হয়ে গেছে। এটি দ্রুত সংস্কারের জন্য আমরা স্থানীয়ভাবে প্রশাসনকে জানিয়েছি যাতে জনদুর্ভোগ কমে।

পাবনা সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী একেএম শামসুজ্জোহা জানান, মুজিববাঁধ সড়কটি মূলত পানি উন্নয়ন বোর্ডের আওতায়। কিন্তু সড়কটির মেরামত ও সংস্কারের কাজ করে থাকে সড়ক ও জনপথ বিভাগ। বর্তমানে এই সড়ক দিয়ে গাড়ি নিয়ে চলাচল মুশকিল। এ কারণে তিনি কয়েকদিন আগে মোটরসাইকেলে এসেছিলেন সরেজমিনে দেখতে। কিন্তু ভাঙাচোরার কারণে তিনি দু'দিন কোমড়ের ব্যথায় অসুস্থ ছিলেন।

তিনি বলেন, সড়কটি উন্নয়নের জন্য ইতোমধ্যে এটি প্রকল্পের আওতায় আনা হয়েছে। তবে প্রকল্পের কাজ শুরুর আগেই জনদুর্ভোগ কমাতে সড়কটির সংস্কার কাজ করা হবে। প্রতিনিয়ত এই সড়ক দিয়ে ১০ চাকা এবং ৬ চাকার বালুসহ ভারী ওজনের পণ্যবাহী ট্রাক চলাচল করে। এতে রাস্তাটি নষ্ট হয়ে গেছে।

রাকিব হাসনাত/এমএসআর