অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ খান হত্যা মামলার রায় আজ। রায় ঘিরে আদালতে অপেক্ষা করছেন আসামি ও ভুক্তভোগীর স্বজনরা। তেমনই একজন হালিমা খাতুন। কথিত বন্দুকযুদ্ধে তিনি হারিয়েছেন ছেলেকে। তাই রায় ঘোষণার খবর শুনে বাড়িতে থাকতে পারেননি। টেকনাফ থেকে কক্সবাজার আদালতে ছুটে এসেছেন। আদালত প্রাঙ্গণে এসে কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি।

জানা গেছে, ২০১৯ সালে হালিমার ছেলে আজিজ রিকশা চালাতে গিয়ে ওসি প্রদীপের হাতে আটক হন। পরে ২০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করা হয়। ছেলেকে প্রদীপের হাত থেকে বাঁচাতে শেষ সম্পদ বাড়ির ভিটেও বিক্রি করে দেন হালিমা। তারপরও ছেলেকে জীবিত উদ্ধার করতে পারেননি।

হালিমা খাতুন কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, আমি মরে যাওয়ার আগে প্রদীপের মৃত্যু দেখে যেতে চাই।

প্রসঙ্গত, ২০২০ সালের ৩১ জুলাই রাতে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের শামলাপুর বাহারছড়া চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে নিহত হন সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান। এ ঘটনার পাঁচ দিন পর ওই বছরের ৫ আগস্ট নিহত সিনহার বোন শারমিন শাহরিয়ার ফেরদৌস বাদী হয়ে বাহারছড়া পুলিশ তদন্তকেন্দ্রের তৎকালীন ইনচার্জ লিয়াকত আলীকে প্রধান আসামি এবং টেকনাফ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রদীপ কুমার দাশকে দ্বিতীয় আসামি করে ৯ পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেন। মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পায় র‍্যাব।

৪ মাসের বেশি সময় ধরে চলা তদন্তের পর ২০২০ সালের ১৩ ডিসেম্বর ১৫ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট জমা দেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। অভিযোগপত্রে সিনহা হত্যাকাণ্ডকে ‘পরিকল্পিত ঘটনা’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়।

২০২১ সালের ২৭ জুন ১৫ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়। এরপর ২৩ আগস্ট কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাইলের আদালতে সাক্ষীদের সাক্ষ্যগ্রহণ এবং জেরা শুরু হয়। এ প্রক্রিয়া শেষ হয় গত ১ ডিসেম্বর। এ মামলায় মোট ৬৫ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য নেওয়া হয়েছে।

সাইদুল ফরহাদ/এসপি/জেএস