নাছির উদ্দিন আহমেদ ও আবু নঈম পাটওয়ারী দুলাল

চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের জন্য ভূমি অধিগ্রহণে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ প্রসঙ্গে জেলা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে বিবৃতি দেওয়া হয়েছে। বুধবার (০২ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নাছির উদ্দিন আহমেদ ও সাধারণ সম্পাদক আবু নঈম পাটওয়ারী দুলাল স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে বলা হয়, যে কোনো ধরণের অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগ। কারও ব্যক্তিগত অনিয়ম বা দুর্নীতির দায়ভার জেলা আওয়ামী লীগ নেবে না। 

বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে, বেশ কিছুদিন যাবৎ দেখতে পাচ্ছি চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের জমি অধিগ্রহণকে কেন্দ্র করে জেলা প্রশাসকসহ সরকারের বিভিন্ন সংস্থা অধিক মূল্যে জমি অধিগ্রহণের ত্রুটি পেয়েছে। উক্ত ঘটনাকে কেন্দ্র করে জাতীয় সংসদসহ সরকারের বিভিন্ন মহল এবং বিভিন্ন গণমাধ্যমে আলোচনা ও সমালোচনা চলছে। বিষয়টি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনারও দৃষ্টিগোচর হয়েছে। এ ঘটনার সঙ্গে যারা সম্পৃক্ত, তাদের বিষয়ে ভূমি মন্ত্রণালয়ে পাঠানো জেলা প্রশাসকের তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ রয়েছে।

উক্ত ঘটনার আলোকে চাঁদপুরে আওয়ামী লীগের নামধারী বিভিন্ন সময়ে বহিষ্কৃত এবং অনুপ্রবেশকারী বিতর্কিত কিছু নেতাকর্মী প্রতিবাদ সভার নামে দলীয় ব্যানারে চাঁদপুর শহরকে উত্তপ্ত করার অপচেষ্টা করছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের নির্দেশনা রয়েছে নদী তীরবর্তী বা ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় যেকোনো ধরনের স্থায়ী স্থাপনা নির্মাণ করা যাবে না। যে বা যারা চাঁদপুর শহরের শান্তিপূর্ণ পরিবেশ অস্থিতিশীল করার অপচেষ্টায় লিপ্ত, তাদের উদ্দেশ্যে বলতে চাই- যেহেতু অধিক মূল্যে জমি অধিগ্রহণের বিষয়টি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃষ্টিগোচর হয়েছে, তাই উক্ত বিষয়টি নিয়ে আপনারা যারা বাংলাদেশ আওয়ামী লীগকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে সভা সমাবেশের নামে দলীয় ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করে যাচ্ছেন, তারা এ ধরণের কর্মকাণ্ড যদি বন্ধ না করেন তাহলে তাদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধে সংগঠনের বৃহত্তর স্বার্থ এবং ঐক্যের স্বার্থে যে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করবে চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগ। উক্ত বিষয় নিয়ে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি পত্রিকায় পরিষ্কারভাবে বক্তব্য দিয়েছেন। 

তারপরও কতিপয় নেতৃবৃন্দ হীন উদ্দেশ্য বাস্তবায়ন করার জন্য এসব কর্মকাণ্ড করে, যা সরকার ও দলকে বিব্রত করে। যা জেলা আওয়ামী লীগ মেনে নেবে না। যে কোনো ধরণের অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগ। কারও ব্যক্তিগত অনিয়ম বা দুর্নীতির দায়ভার জেলা আওয়ামী লীগ নেবে না। যেহেতু দলের কেন্দ্রীয় হাইকমান্ডের কাছে বিষয়টি দৃষ্টিগোচর হয়েছে, তাই কেন্দ্রীয় হাইকমান্ড এ বিষয়ে করণীয় নির্ধারণ করবে। কেউ অতি উৎসাহী হয়ে সরকার ও দলকে বিব্রত করে এমন কোনো কর্মকাণ্ডে জড়াবেন না, যা চাঁদপুরবাসীকে দেশ জাতির কাছে লজ্জিত করে। 

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, সকলের কাছে আহ্বান জানাব এই বিষয়টি কেন্দ্রীয় হাইকমান্ডের ওপর ছেড়ে দিয়ে চাঁদপুর শহর অস্থিতিশীল হয় এমন কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকুন এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করুন। আসুন আমরা সবাই মিলে দুর্নীতিমুক্ত সমাজ গড়ি, চাঁদপুর জেলাসহ চাঁদপুর শহরকে সুন্দর ও পরিচ্ছন্ন মডেল শহরে রূপান্তরিত করি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভালোবাসার নিদর্শন হিসেবে চাঁদপুর মেডিকেল কলেজ এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়সহ অন্যান্য মেগা প্রকল্পগুলো যাতে ভূমিদস্যু ও দুর্নীতিবাজ কারও ব্যক্তি স্বার্থে বাধাগ্রস্ত না হয়। আসুন সবাই মিলে স্ব স্ব অবস্থানে থেকে সোচ্চার থাকি।

বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, চাঁদপুর শহর রক্ষা বাঁধকে সুরক্ষিত রাখতে মেঘনা নদী থেকে অবৈধ উপায়ে সরকারের রাজস্ব আদায় থেকে বঞ্চিত করে যে সকল ভূমিদস্যু দিনে ও রাতে বালু উত্তোলন করে, তাদের বিরুদ্ধে চাঁদপুরের সর্বস্তরের জনগণকে ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিরোধের আহ্বান জানাচ্ছি। আপনাদের উদ্দেশ্যে আরও বলতে চাই- বর্তমান করোনা মহামারি পরিস্থিতিতে সরকার ১১ দফা বিধিনিষেধ মানার সিদ্ধান্ত দিয়েছে। অথচ আপনারা জনসমাগম করে চাঁদপুর শহরকে করোনা মহামারির বিপজ্জনক পরিবেশের দিকে নিয়ে যাচ্ছেন, যা সর্বসাধারণের জন্য ক্ষতিকর। যা দলকে বিব্রতকর ও প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। চাঁদপুর শহরের জনসাধারণ সুস্থ ও ভালো রাখতে এসব কর্মকাণ্ড পরিহার করুন।

শরীফুল ইসলাম/আরএআর