সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে সাংবাদিক আব্দুল হাকিম শিমুল হত্যাকাণ্ডের পাঁচ বছরেও বিচার পায়নি তার পরিবার। ২০১৭ সালের ২ ফেব্রুয়ারি পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে গুলিবিদ্ধ হন তিনি। পরদিন ৩ ফেব্রুয়ারি তার মৃত্যু হয়।  

সাংবাদিক আব্দুল হাকিম শিমুলের ৫ম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে বৃহস্পতিবার (৩ ফেব্রুয়ারি) দিনব্যাপী নানা কর্মসূচি পালন করছে শাহজাদপুরে কর্মরত সাংবাদিকবৃন্দ ও তার পরিবারের সদস্যরা। 

সকালে শাহজাদপুর প্রেস ক্লাব চত্বরে জাতীয় ও কালো পতাকা উত্তোলন, সকাল ১০টায় আব্দুল হাকিম শিমুলের প্রতিকৃতিতে পুষ্পমাল্য অর্পণ, নিহত সাংবাদিক শিমুলের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। এরপর শাহজাদপুর প্রেস ক্লাব থেকে শাহজাদপুরে কর্মরত সাংবাদিকবৃন্দ, সংস্কৃতি কর্মী এবং নিহত সাংবাদিক আব্দুল হাকিম শিমুলের স্বজনরা একটি শোক র‍্যালি বের করে শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করেন। র‍্যালিটি উপজেলা চত্বরে গিয়ে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়। 

শাহজাদপুর প্রেস ক্লাবের সভাপতি বিমল কুমার কুন্ডুর সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য দেন প্রেস ক্লাব শাহজাদপুরের সভাপতি আতাউর রহমান পিন্টু, শাহজাদপুর প্রেস ক্লাবের সিনিয়র সহ-সভাপতি আবুল কাশেম প্রমুখ। 

এসময় বক্তরা বলেন, সাংবাদিক আব্দুল হাকিম শিমুল হত্যাকান্ডের ৫ বছর পার হলেও নানা জটিলতা এবং ঘাতকদের নানা কূটকৌশলে বিচার প্রক্রিয়া শেষ হওয়া তো দূরের কথা বিচারকার্যই শুরু হয়নি। এ হত্যা মামলার সকল প্রতিবন্ধকতা দূর করে অবিলম্বে রাজশাহী দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল আদালতে দ্রুত বিচার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার জোর দাবি জানাচ্ছি।

এ সময় সাংবাদিক আব্দুল হাকিম শিমুলের স্ত্রী নুরুন নাহার, ছেলে আল নোমান নাজ্জাশি সাদিক, মেয়ে তামান্না-ই-ফাতেমা, শাহজাদপুরের সমকাল প্রতিনিধি কোরবান আলী লাবলু, সাংবাদিক মুমীদুজ্জামান জাহান, এম এ জাফর লিটন, মো. আল আমিন হোসেন, ওমর ফারুক, সাগর বসাক, শামছুর রহমান শিশির, জহুরুল ইসলাম, মাসুদ মোশারফ, মাইটিভি প্রতিনিধি জাকারিয়া মাহমুদ, জেলহক হোসাইন, রাসেল সরকার, আব্দুল কদ্দুস, শাফিকুল ইসলাম পলাশ, নয়ন আলী, আরিফুল ইসলাম, মিলন মাহফুজ, জাহিদ হাসান,মীর্জা হুমায়ন, আমিনুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। 

উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের ২ ফেব্রুয়ারি শাহজাদপুরের মণিরামপুরে পৌর মেয়র হালিমুল হক মিরুর বাড়ির সামনে আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষে সমকালের শাহজাদপুর আব্দুল হাকিম শিমুল গুলিবিদ্ধ হন। ওই দিন চিকিৎসার জন্য প্রথমে শিমুলকে স্থানীয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হলে অবস্থার অবনতি দেখে দ্রুত বগুড়া জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরদিন ৩ ফেব্রুয়ারি উন্নত চিকিৎসার জন্য শিমুলকে বগুড়া থেকে ঢাকায় নেওয়ার পথে তিনি মারা যান। পরে নিহত শিমুলের স্ত্রী নুরুন নাহার বাদী হয়ে মেয়র হালিমুল হক মিরুকে প্রধান আসামি করে শাহজাদপুর থানায় হত্যা মামলা করেন। পরে মেয়র মিরুসহ ৩৮ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে পুলিশ। বর্তমানে সব আসামি জামিনে রয়েছেন।

শুভ কুমার ঘোষ/আরএআার