সেনুয়ায় নির্বাচনী প্রচারণা ঘিরে সহিংসতা, আতঙ্কিত ভোটাররা
সপ্তম ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন আগামী ৭ ফেব্রুয়ারি। এ নির্বাচনকে ঘিরে ঠাকুরগাঁওয়ের সেনুয়া ইউনিয়নে বেড়েই চলেছে সহিংসতা। ইউনিয়নটিতে মারপিট-ভাঙচুরকে প্রচারণার অংশ হিসেবেই ব্যবহার করা হচ্ছে। এতে আতঙ্কিত সাধারণ ভোটাররা।
জানা গেছে, সপ্তম ধাপে জেলায় মাত্র দুটি ইউনিয়নে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। তার মধ্যে সেনুয়ার নির্বাচনী উত্তাপ হার মানিয়েছে আগের সব ধাপের নির্বাচনকে। প্রতীক বরাদ্দের পর থেকেই মারামারির অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে। এ পর্যন্ত বিভিন্ন প্রার্থীর প্রায় ১১টি নির্বাচনী অফিস জ্বালিয়ে দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। সেইসঙ্গে কয়েক দিন আগে চার সাংবাদিকের ওপরে হামলার ঘটনা দেশব্যাপী আলোচিত হয়।
বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ শুক্রবার (০৪ ফেব্রুয়ারি) মধ্যরাতে সেনুয়া ইউনিয়নের চৌধুরী হাট বাজারে স্বতন্ত্র প্রার্থী আতাউর রহমানের মোটরসাইকেল প্রতীকের অফিস ভাঙচুর ও সমর্থকদের মারপিটের ঘটনা ঘটেছে। এতে মোটরসাইকেলের ছয়জন সমর্থক গুরুতর আহত হন।
নৌকা প্রতীকের প্রার্থী নবেল কুমার সিংহের সমর্থকরা হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী আতাউর রহমান। তিনি বলেন, শুক্রবার সন্ধ্যায় চৌধুরী হাট স্কুলে নৌকার খুলি বৈঠকের আয়োজন করা হয়। সেখানেশেত শত বহিরাগত ভিড় করতে থাকে। এক পর্যায়ে তারা আমার অফিসে এসে চেয়ার-টেবিল ভাঙচুর শুরু করে। অফিসে থাকা সমর্থকদের মারপিট করে। এতে আমার ছয়জন সমর্থক গুরুতর আহত হয়েছেন।
বিজ্ঞাপন
অভিযোগের সত্যতা নিশ্চিত করতে নৌকার প্রার্থী নোবেল কুমারের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তার মুঠোফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়। তবে এই হামলায় দায় স্বীকার করেছেন ছাত্রলীগের নেতা কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সদস্য রয়েল বড়ুয়া।
রয়েল বড়ুয়া জানান, নৌকার খুলি বৈঠক শেষে আমরা বের হচ্ছিলাম। যাওয়ার সময় কিছু মানুষ আমাদের উস্কানি দিয়ে ডাকাডাকি করে। আমরা এগিয়ে গেলে তারা আরও বেশি বিরক্ত শুরু করে। তাই তাদের শিক্ষা দেওয়ায় জন্যই মার দেওয়া হয়েছে। তাছাড়া ওরা আমাদের নৌকার অফিস জ্বালিয়ে দিয়েছে। তাই তাদের শিক্ষার দরকার ছিল।
এমন সহিংসতা অব্যাহত থাকলে কেন্দ্রে সাধারণ ভোটার কম হতে পারে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন সেনুয়া ইউনিয়নের বাসিন্দা ও উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক রাসেদুল রানা। তিনি বলেন, সহিংসতার কারণে এলাকার সাধারণ মানুষ বেশ শঙ্কায় আছে। যদি দ্রুত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না আনা যায় তাহলে নির্বাচনের দিন ভোটার খুঁজে পাওয়া কষ্টকর হবে।
সেনুয়া ইউনিয়ন নির্বাচনে দায়িত্বরত রিটার্নিং কর্মকর্তা রেজাউল ইসলাম বলেন, সেনুয়ার বেশ কিছু ঘটনার অভিযোগ পেয়েছি। কিছু অভিযোগ ঘিরে ব্যবস্থা নিয়েছি। প্রার্থীদের হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে। এরপর আরও কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ঠাকুরগাঁও সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তানভীরুল ইসলাম বলেন, ঘটনাস্থলে আমাদের কয়েকজন পুলিশ ছিল। কিন্তু অন্ধকার ও বৃষ্টির কারণে প্রতিরোধ করতে পারেনি। তবে অভিযোগ পেলেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এমএ সামাদ/এসপি