‘মা হয়বো হনে ? মা বুলাইব কে? আমার জাদুগোরে আমার কাছে আনি দেন’ বলেই আর্তনাদ করছেন কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার মালুমঘাট এলাকার বাসিন্দা মিনু রাণী শীল। এক সঙ্গে পাঁচ ছেলেকে হারিয়ে পাগলপ্রায় তিনি। থামছেই না তার বিলাপ।

মাত্র ১০ দিন আগে মারা যান তার স্বামী সুরেশ শীল। তার মৃত্যুর পর ছেলে-মেয়েদের নিয়ে কোনো রকম দিন কাটাচ্ছিলেন মিনু রাণী শীল।

মঙ্গলবার (৮ ফেব্রুয়ারি) ছিল শুদ্ধি স্নান। পর দিন হওয়ার কথা ক্রিয়া অনুষ্ঠান। কিন্তু শুদ্ধি স্নানের দিনেই বাবার শ্মশান থেকে ফেরার পথে পিকআপ (ডাম্পার) কেড়ে নিল ৫ সন্তানের প্রাণ। সঙ্গে ছিল আরও ২ ছেলে ও ১ মেয়ে। তারাও আশঙ্কাজনক অবস্থায় চিকিৎসাধীন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে।

পাঁচ সন্তানকে একসঙ্গে হারিয়ে এখন পাগলপ্রায় সুরেশ শীলের স্ত্রী ৫০ বছর বয়সী মিনু রানী শীল। তার বুক ফাটা আর্তনাদ ভারী করে তুলছে আশেপাশের পরিবেশ।

মিনু রানী শীল আর্তনাদ করে বলছিলেন, ‘যাদের মানুষ করেছি, তাদের নিয়ে গেছে। কাদের জন্য বাঁচব? মা হয়বো হনে ডাকিবো (মা বলে কে ডাকবে)?’

ক্ষণে ক্ষণেই এমন আর্তনাদ করে মাটিতে লুটিয়ে পড়ছিলেন মিনু রানী। তাকে সান্ত্বনা দেওয়ার ভাষা খুঁজে পাচ্ছিলেন প্রতিবেশীরা। 

উঠানে সারি করে রাখা অনুপম শীল, নিরুপম শীল, দীপক শীল, চম্পক শীল ও স্মরণ শীলের মরদেহ। পাশে তাদের স্ত্রীরা বিলাপ করছেন। ডুকরে কাঁদছে তাদের ছেলে-মেয়েরাও।

প্রতিবেশীরা তাদের সান্ত্বনা দেওয়ার চেষ্টা করছেন। হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের পাশাপাশি ছিলেন মুসলিমরাও। পাঁচ ভাইয়ের এমন মৃত্যুতে হতবিহবল সবাই। কেঁদে বুক ভাসানো ছাড়া এখন আর কিছুই নেই অসহায় মিনু রানীর।

সাইদুল ফরহাদ/এসকেডি