অবশেষে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেলেন পোশাককর্মী সাথী আক্তার। সাবেক স্বামীর ছুড়ে দেওয়া অ্যাসিডে ঝলসে যাওয়ার ১২ দিন পর বুধবার (১০ ফেব্রুয়ারি) দিবাগত রাত ১২টার দিকে ঢাকার শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।

বৃহস্পতিবার (১০ জানুয়ারি) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সাথী আক্তারে ভাই সোহেল তার বোনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

ভুক্তভোগী সাথী আক্তার মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলার ধানকোড়া ইউনিয়নের কাটাখালী ফেরাজীপাড়া এলাকার আব্দুস সাত্তারের মেয়ে।

সোহেল বলেন, জেলার সাটুরিয়া উপজেলার ধানকোড়া ইউনিয়নের ফেরাজীপাড়া-কাটাখালী এলাকার নিজ বাড়িতে মা ও ছোট বোনকে সঙ্গে নিয়ে ঘুমিয়ে ছিলেন সাথী। ২৮ জানুয়ারি মধ্যরাতে সাথীর সাবেক স্বামী নাঈম ভাঙা জানালা দিয়ে অ্যাসিড ছোড়েন। এতে পুড়ে যায় সাথীর হাত ও মুখ।

পরে তাকে মানিকগঞ্জ জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে সাথীকে শেখ হাসিনা বার্ন ইউনিটে স্থানান্তর করেন চিকিৎসকরা। ইউনিটে ১২ দিন চিকিৎসাধীন থেকে অবশেষে মারা যান সাথী। হাসপাতালের প্রক্রিয়া শেষে দুপুরের দিকে সাথীর মরদেহ নিয়ে গ্রামের উদ্দেশে রওনা দেবেন বলে জানান সোহেল।

এদিকে সাথীকে অ্যাসিড দিয়ে পুড়িয়ে মারার চেষ্টার দায়ে সাথীর সাবেক স্বামী নাঈমকে গ্রেফতার শেষে কারাগারে পাঠিয়েছে মানিকগঞ্জ র‍্যাব-৪, সিপিসি-৩-এর একটি অভিযানিক দল।

প্রসঙ্গত, এর আগে গত ২৮ জানুয়ারি মধ্যরাতে তার সাবেক স্বামীর ছুড়ে দেওয়া অ্যাসিডে ঝলসে যায় সাথীর হাত-মুখ। পরে রাত সোয়া ২টার দিকে গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে মানিকগঞ্জ জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। 

ভুক্তভোগীর পরিবার সূত্রে জানা গেছে, দুই বছর আগে মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার বেতিলা গ্রামের নিজাম উদ্দিনের ছেলে নাঈমের সঙ্গে বিয়ে হয় সাথীর। তবে বিয়ের পর থেকেই যৌতুকের জন্য চাপ দিয়ে অত্যাচার করতেন নাঈম। নাঈম মাদকাসক্ত ও বখাটে হওয়ায় বিবাহ বিচ্ছেদ করেন সাথী।

তবে পুনরায় সংসার না করলে সাথীকে মেরে ফেলার হুমকি দেন নাঈম। এর জের ধরে নাঈম শুক্রবার মধ্যরাতে ঘরের ভাঙা জানালা দিয়ে সাথীর মুখে অ্যাসিডে ছুড়ে দেন বলে অভিযোগ সাথীর পরিবারের।

এ বিষয়ে সাথীর মা জুলেখা বেগম বলেছিলেন, বিবাহবিচ্ছেদের পর থেকেই রাস্তাঘাটে মেয়েকে বিরক্ত করতে শুরু করে নাঈম। তার সঙ্গে সংসার না করলে মেরে ফেলার হুমকিও দেয় সে। এর জের ধরেই শুক্রবার মধ্যরাতে ঘরের ভাঙা জানালা দিয়ে আমার মেয়ের মুখে অ্যাসিডে মেরে হাত-মুখ ঝলসে দেয় নাঈম। আমি তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করি।

সোহেল হোসেন/এনএ