কথা বলছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট দেওয়ান মজনুল হক

পাবনা সদর উপজেলায় শাহীন হোসেন (৩০) নামের এক যুবককে হত্যার দায়ে ৩ সহদোরের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাদের প্রত্যেককে ২৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। অনাদায়ে আরও এক বছরের কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়েছে।

মঙ্গলবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে পাবনার বিশেষ জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. আহসান তারেক এ রায় ঘোষণা করেন।

নিহত শাহীন পাবনা সদর উপজেলার মালঞ্চি ইউনিয়নের কাশিনাথপুরের চরপাড়া গ্রামের মৃত আবুল হোসেনের ছেলে। পেশায় তিনি কাঠমিস্ত্রি ছিলেন।

দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন কাশিনাথপুরের চরপাড়ার গ্রামের মো. শাহেদ আলীর তিন ছেলে মো. বাবু (৩৮), মো. মোস্তফা (৩২) এবং মো. আবু (৩৫)। সাজাপ্রাপ্ত সবাই পলাতক রয়েছেন।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ২০১০ সালের ২৭ জুলাই রাতে কাঠমিস্ত্রির কাজ শেষে বাড়ি ফেরার পথে মালঞ্চির রামানন্দপুরের কালভার্ট রোডে পৌঁছামাত্র পূর্বপরিকল্পিতভাবে ওঁত পেতে থাকা আসামিরা চাপাতি, টাংগি, লাঠি, লোহার রড, তলোয়ার দিয়ে কুপিয়ে ও পিটিয়ে গুরুতর আহত করে। এ সময় আশপাশের লোকজন তাকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় পাবনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

এ ঘটনার পরের দিন নিহতের স্ত্রী সিমা খাতুন ১০ জনের নাম উল্লেখ করে পাবনা সদর থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। মামলার দীর্ঘ তদন্ত শেষে সাতজনকে বাদ দিয়ে তিনজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে পুলিশ।

ঘটনার পর থেকেই আসামিরা পলাতক রয়েছেন। দীর্ঘ শুনানির পর আজ আদালত হত্যার সঙ্গে সরাসরি জড়িত ও পরিকল্পনাকারী তিনজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের এই আদেশ দেন।

আসামিপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট ইদ্রিস আলী বলেন, আমরা উচ্চ আদালতে আপিল করব। সেখান থেকে দণ্ডপ্রাপ্তরা নিরপরাধ হিসেবে খালাস পাবেন বলে আশা করছি।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী দেওয়ান মজনুল হক বলেন, এই মামলায় হত্যাকাণ্ডের ঘটনাটি প্রমাণিত হয়েছে। সেই পরিপ্রেক্ষিতে আজ তিনজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। দণ্ডপ্রাপ্তরা উচ্চ আদালতে আপিল করলেও সাজা কমার কোনো সুযোগ নেই।

মামলার বাদী ও নিহতের স্ত্রী সিমা খাতুন ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমরা এই রায়ে সন্তুষ্ট নই। আমরা আসামিদের সর্বোচ্চ সাজা ফাঁসি চেয়েছিলাম। হত্যার ঘটনা প্রমাণিত হওয়ার পরও তাদের যাবজ্জীবন দেওয়া হয়েছে। আমরা শিগগিরই উচ্চ আদালতে ফাঁসি চেয়ে আবেদন করব।

তিনি আরও বলেন, আমার স্বামীকে তারা পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে। মামলা তুলে নেওয়ার জন্য বিভিন্ন হুমকি-ধমকি দিয়ে আসছিল। হত্যার পর থেকেই আমি বিভিন্ন বাসা-বাড়িতে কাজ করছি। আমার স্কুলপড়ুয়া একটি মেয়ে আছে। আমি মানবেতর জীবন যাপন করছি।

রাকিব হাসনাত/এনএ