দীর্ঘ সাত বছর পর নাটোর জেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে রোববার (২০ ফেব্রুয়ারি)। সম্মেলন ঘিরে চলছে সাজ সাজ রব। কে হবেন সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক তা নিয়ে চলছে গুঞ্জন। এরই মধ্যে সম্মেলনের সব প্রস্তুতি শেষ হয়েছে। 

সম্মেলন ঘিরে শহরের মাদরাসা মোড় থেকে সার্কিট হাউস পর্যন্ত মহাসড়কে শোভা পাচ্ছে ব্যানার, ফেস্টুন, বিলবোর্ড। বর্ণিল সাজে সেজেছে নাটোরের মহাসড়ক ও শংকর গোবিন্দ চৌধুরী স্টেডিয়াম। মহাসড়কে তৈরি করা হয়েছে বেশ কয়েকটি তোরণ।

জানা গেছে, জেলা আ.লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালি যুক্ত থাকবেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। সম্মেলন উদ্বোধন করবেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য আব্দুর রহমান। সম্মেলনে প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন।

সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য ও রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এএইচএম কায়রুজ্জামান লিটন, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ড. হাসান মাহমুদ, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদক ডা. রোকেয়া সুলতানা, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সদস্য নুরুল ইসলাম ঠান্ডু, সদস্য বেগম আকতার জাহান এবং প্রফেসর মেরিনা জাহান এমপি।

নাটোর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অধ্যাপক আব্দুল কুদ্দুস এমপির সভাপতিত্বে এবং নাটোর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও নাটোর-২ আসনের সংসদ সদস্য মো. শফিকুল ইসলাম শিমুলের আহ্বানে সম্মেলনে বিশেষ বক্তা হিসেবে বক্তব্য দেবেন- তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, নাটোর-১ আসনের সংসদ সদস্য মো. শহিদুল ইসলাম বকুল এবং (নাটোর-নওগাঁ) সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য রত্না আহমেদ।

জানা গেছে, ২০১৪ সালে সবশেষ নাটোর জেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। সে সময় নাটোর-৪ আসনের সংসদ সদস্য আব্দুল কুদ্দুস এমপি সভাপতি ও শফিকুল ইসলাম শিমুল সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। এবার কে হচ্ছেন সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক তা নিয়ে চলছে জল্পনা ও কল্পনা।

দলীয় সূত্রে জানা যায়, সভাপতি পদে বর্তমান সভাপতি আব্দুল কুদ্দুসের পাশাপাশি সাবেক ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী আহাদ আলী সরকার, সাবেক সংসদ সদস্য আবুল কালাম আজাদ, নাটোর পৌরসভার মেয়র উমা চৌধুরীর নাম শোনা যাচ্ছে। 

অপরদিকে সাধারণ সম্পাদক পদে বর্তমান সাধারণ সম্পাদক নাটোর-২ আসনের সংসদ সদস্য শফিকুল ইসলাম শিমুল, নাটোর সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শরিফুল ইসলাম রমজান, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগাঠনিক সম্পাদক প্রয়াত আওয়ামী লীগ নেতা হানিফ আলী শেখের ছোট ভাই অ্যাডভোকেট আব্দুল মালেক শেখ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্রলীগ নেতা কাজল রায়, রতন কুমার সাহার নাম শোনা যাচ্ছে।

কাউন্সিলের মাধ্যমে নেতা নির্বাচিত হবে না কেন্দ্র নির্ধারণ করবে তা নিয়ে চলছে বিতর্ক। তবে দলের নেতাকর্মীরা বলছেন, দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনার সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত।

জেলা আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. শফিকুল ইসলাম শিমুল জানান, নাটোর জেলার ৫২টি ইউনিয়নের ৩০৫টি গ্রামের আ.লীগের নেতাকর্মীরা সম্মেলন সফল করতে কাজ করছেন। নৌকার পক্ষে ছিলাম, আছি এবং মৃত্যু পর্যন্ত থাকব।

জেলা আ.লীগের সভাপতি অধ্যাপক আব্দুল কুদ্দুস বলেন, অতীত থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত কোনো রকম ভোটাভোটি ছাড়াই নেতা নির্বাচিত হয়ে আসছেন। তবে ২০১৪ সালে সরাসরি কাউন্সিলরদের ভোটের মাধ্যমে নেতা নির্বাচিত করা হয়। এবার যদি কাউন্সিল হয় সেটাও ভালো। না হলে কেন্দ্র যেটা ভালো মনে করবে সেই সিদ্ধান্ত আমরা মেনে নেব।

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট জুনাইদ আহমেদ পলক বলেছেন, নাটোরের ২০ লাখ মানুষ তাকিয়ে আছে কারা  জেলা আওয়ামী লীগের কাউন্সিলে নেতৃত্বে আসছেন তা দেখার জন্য। এমপি, মন্ত্রী সবই অস্থায়ী ঠিকানা। স্থায়ী ঠিকানা হলো আওয়ামী লীগ। প্রতিটি নেতাকর্মীর জন্য সবচেয়ে বড় পরীক্ষা হলো আন্দোলন, সম্মেলন ও নির্বাচন। এই সম্মেলনে নাটোর জেলা আওয়ামী লীগের জন্য সঠিক নেতৃত্ব মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উপহার দেবেন বলে তিনি আস্থা রাখেন।

তাপস কুমার/এসপি