করোনার তৃতীয় ঢেউ এখনো শেষ না হলেও শনাক্তের হার কমে এসেছে। মানুষ শান্তির খোঁজে বের হচ্ছে ঘর থেকে। দুদিন ধরে কক্সবাজারের সমুদ্র সৈকতে বাড়ছে ভ্রমণপিপাসু মানুষের ভিড়। পর্যটকদের আনাগোনায় আবার চেনা রূপে ফিরেছে সৈকত।

শুক্র ও শনিবার সপ্তাহিক ছুটি, রোববার পার করে আবার সোমবার আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের ছুটি। মাঝের রোববার ছুটি নিয়ে চার দিনের অবকাশ কাটাতে অনেকে ছুটে এসেছেন কক্সবাজার।

শনিবার বিকেলে সরেজমিনে দেখা যায়, সৈকত লোকে লোকারণ্য। আনন্দ ও উচ্ছ্বাসে উবে গেছে করোনার ভয়। সাগরের ঢেউয়ের সঙ্গে খেলা করছেন পরিবারের সব সদস্য মিলে।

করোনার সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় গত দুই মাস পর্যটক-শূন্য ছিল কক্সবাজার। কিছুদিন ধরে পরিস্থিতি পাল্টেছে। এখন প্রতিদিনই বাড়ছে পর্যটকের আনাগোনা। বিশেষ করে, সাপ্তাহিক ছুটির দুদিন পর্যটকের আগমন বাড়ে কয়েক গুণ।

ঢাকা থেকে আসা মনির হোসেন নামে এক পর্যটক বলেন, করোনার কারণে অনেক দিন ধরে কোথাও যাওয়া হচ্ছিল না। সংক্রমণ কমে আসায় সপরিবার কক্সবাজার এলাম। কিন্তু এত মানুষ হবে ধারণা ছিল না। দীর্ঘদিন পর এমন দৃশ্য দেখে বেশ ভালো লাগছে।

এদিকে সৈকতে যখন উপচে পড়া ভিড়, তখন সৈকতের প্রবেশ পয়েন্টে চলছে করোনার স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার মাইকিং। কিন্তু আগত পর্যটকদের কোনো ভ্রুক্ষেপ নেই সেদিকে। সৈকতের বালিয়াড়িতেও একই অবস্থা। পর্যটক থেকে শুরু করে সৈকতের ব্যবসায়ীরা সবাই উদাসীন স্বাস্থ্যবিধি মানায়।

এক ব্যবসায়ী বলেন, এত মানুষের মধ্যে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলাটাও কঠিন। তবু চেষ্টা করছি মেনে চলার জন্য। তবে সব সময় মেনে চলাটাও সম্ভব হয়ে ওঠে না। মুখে কতক্ষণ মাস্ক লাগিয়ে রাখা যায়? বেশিক্ষণ রাখলে মনে হয় দম বন্ধ হয়ে আসছে।

পর্যটকদের আগমন বাড়ায় স্বস্তিতে আছেন হোটেল, মোটেল, রিসোর্ট ও গেস্ট হাউসের মালিকরা। তারা বলছেন, সরকারি নির্দেশনা ও স্বাস্থ্যবিধি মেনেই তারা হোটেল পরিচালনা করছেন।

কক্সবাজার হোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের মুখপাত্র আবু তালেব শাহ বলেন, সবকিছু এত দিন বন্ধ থাকার কারণে সাধারণ মানুষের মধ্যে একটা জড়তা চলে এসেছে। আশা করছি, এই জড়তা কেটে উঠলে আমরা আস্তে আস্তে ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পারব।

কক্সবাজার ট্যুরিস্ট পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মহিউদ্দিন বলেন, ২১শে ফেব্রুয়ারি আর সাপ্তাহিক ছুটি মিলিয়ে টানা কয়েক দিনের ছুটিতে কক্সবাজারে আবারও পর্যটক-সমাগম বেড়েছে। এ উপলক্ষে সৈকত ও পর্যটন স্পটে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। এরপরও কোথাও কেউ অনাকাঙ্ক্ষিত ক্ষতির শিকার হলে পুলিশ বক্স, তথ্যকেন্দ্র বা ট্যুরিস্ট পুলিশ ভবনে এসে জানানোর অনুরোধ করছি।

সাইদুল ফরহাদ/এনএ