সিরাজগঞ্জের বেলকুচিতে ত্যাগী নেতাকর্মীদের মূল্যায়ন না করে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন ইউনিয়ন ও ওয়ার্ডের কমিটি করার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় আব্দুর রাজ্জাক নামে এক কর্মী পদবঞ্চিত হয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন। 

শনিবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে তৃণমূলের সাবেক নেতৃবৃন্দের আয়োজনে এক সংবাদ সম্মেলন করে এমন অভিযোগ করা হয়েছে। তবে সব অভিযোগ অস্বীকার করে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বলেছেন, পদবঞ্চিত হয়ে নিজ স্বার্থে ও গ্রুপিংয়ের কারণে এমন অভিযোগ তোলা হচ্ছে।

জানা যায়, সম্প্রতি বেলকুচি উপজেলার ৬ ইউনিয়ন, ৫৪ ওয়ার্ড ও একটি পৌরসভার ১০টি ওয়ার্ডের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এর মধ্যে গত ১৭ ফেব্রুয়ারি বেলকুচি পৌরসভার ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সম্মেলনের মধ্যদিয়ে কমিটি গঠন করা হয়। এতে সাবেক মন্ত্রী আব্দুল লতিফ বিশ্বাসসহ সংসদ সদস্য আব্দুল মমিন মন্ডল উপস্থিত ছিলেন। 

অভিযোগ করা হয়েছে, প্রতিটি ওয়ার্ডে তারা তাদের মনোনীত নেতাকর্মী নির্বাচন করেছেন। তবে যারা অভিযোগ করেছেন তারা বেলকুচি পৌরসভার মেয়র সাজ্জাদুল রেজার অনুসারী বলে জানা গেছে। যিনি আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী (স্বতন্ত্র) প্রার্থী হিসেবে সাবেক মন্ত্রী আব্দুল লতিফ বিশ্বাসের স্ত্রী আশানুর বিশ্বাসকে হারিয়ে পৌর মেয়র নির্বাচিত হন।

বেলকুচি পৌর এলাকার ২ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী ছিলেন আব্দুর রাজ্জাক। তিনি পদবঞ্চিত হয়ে সেদিন কান্নায় ভেঙে পড়েন। এ সময় তিনি বলতে থাকেন, আল্লাহ তুমি নিজে এসে দেখে কমিটি দিয়ে যাও। তুমি বলে যাও আমি আওয়ামী লীগ করি কি না, আমি আওয়ামী লীগ পরিবারের সন্তান কি না। আব্দুর রাজ্জাক পৌরসভার ২ নং ওয়ার্ডের দেলুয়া মহল্লার মৃত শান্তার ছেলে। তবে তার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও সম্ভব হয়নি।

সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়, গত ১৭ ফেব্রুয়ারি বেলকুচি উপজেলার ৬ ইউনিয়ন, ৫৪ ওয়ার্ড ও বেলকুচি পৌরসভার ১০ ওয়ার্ডের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এতে সাবেক মন্ত্রী আব্দুল লতিফ বিশ্বাস, সংসদ সদস্য আব্দুল মমিন মন্ডল উপস্থিত থেকে প্রতিটি ওয়ার্ড থেকে তাদের মনোনীত নেতাকর্মী নির্বাচন করেছেন। এতে দীর্ঘ দিন ধরে আওয়ামী লীগের জন্য ত্যাগ স্বীকার করা এবং দলের দুর্দিনের পাশে থাকা তৃণমূলের নেতাকর্মীরা বাদ পড়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

বেলকুচি উপজেলা আ.লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি গাজী দেলখোশ আলী প্রামানিক ঢাকা পোস্টকে বলেন, এমপি আব্দুল মমিন মন্ডলের সহযোগিতায় এবং সাবেক মন্ত্রী আব্দুল লতিফ বিশ্বাসের আন্তরিকতায় যোগ্যরাই দায়িত্ব পেয়েছেন বলে আমি মনে করি। এছাড়া প্রতিটি কমিটির শুধুমাত্র সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচন করা হয়েছে। ৫০ সদস্যের কমিটির এখনো ৪৮ জনকে নিয়ে পূর্ণাঙ্গ কমিটি করা হবে। ফলে এখনই বঞ্চিত হওয়ার প্রশ্ন আসে না। তাছাড়া অভ্যন্তরীণ গ্রুপিংয়ের কারণে এমন করে কান্না করা অনেকটা নাটকীয়তা ছাড়া আর কিছু না।

এ বিষয়ে কথা বলার জন্য বেলকুচি পৌরসভার মেয়র সাজ্জাদুউল রেজা এবং স্থানীয় সংসদ সদস্য মমিন মন্ডলের মুঠোফোনে একাধিকবার কল দিলেও সাড়া মেলেনি। এদিকে সাবেক মন্ত্রী লতিফ বিশ্বাসের মুঠোফোনে একাধিকবার চেষ্টা করা হলেও তার নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়।

শুভ কুমার ঘোষ/এসপি