রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার বালারহাট ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে সদস্য পদে এক প্রার্থীকে জয়ী করতে গোপন চুক্তির মাধ্যমে সাড়ে ৪ লাখ টাকা ঘুষ নেওয়ার ঘটনা প্রমাণিত হওয়ায় উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আব্দুল হান্নানকে বরখাস্ত করেছে নির্বাচন কমিশন।রোববার (২০ ফেব্রুয়ারি) নির্বাচন কমিশনের এক আদেশে তাকে বরখাস্ত করা হয়।

এর আগে গত ২ ফেব্রুয়ারি ‘ভোটে জেতাতে নির্বাচন কর্মকর্তার গোপন চুক্তির অডিও ফাঁস’ শিরোনামে নিউজ পোর্টাল ঢাকা পোস্টে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। পরে ৩ ফেব্রুয়ারি নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের নির্দেশে ওই কর্মকর্তাকে তাৎক্ষণিক রিলিজড করা হয়।

সাড়ে চার লাখ টাকার বিনিময়ে এক ইউপি সদস্য প্রার্থীকে জেতাতে রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আব্দুল হান্নান গোপন চুক্তি করেন। তার গোপন চুক্তির ফোনালাপ এবং অর্থনৈতিক লেনদেনের অডিওটি ফাঁস হয়। পরে তা ফেসবুক ও বিভিন্ন ইউটিউব চ্যানেলসহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়। ভোটগ্রহণের আগে প্রার্থী ও নির্বাচন কর্মকর্তার এমন গোপন চুক্তির অডিও ক্লিপ ঘিরে সর্বত্র তোলপাড় শুরু হয়।

ওই অডিও ক্লিপে নির্বাচন কর্মকর্তা ও ইউপি সদস্য প্রার্থীর মধ্যে কথোপকথনে শোনা যায়, রফিকুল ইসলাম নামে ইউপি সদস্য পদপ্রার্থীকে জেতাতে ভোটকেন্দ্র থেকে প্রতিপক্ষের লোকজনকে বের করে দেওয়া এবং ভোটের আগেই অন্তত ৩০০ ব্যালট পেপার সরবরাহের বিনিময়ে টাকা চেয়েছেন নির্বাচন কর্মকর্তা।

এ সময় উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ওই ইউপি সদস্য প্রার্থীকে বোঝান, নির্বাচন করতে গেলে পাঁচ থেকে ১০ লাখ টাকা খরচ হওয়ার পাশাপাশি নির্বাচিত হওয়ার কোনো গ্যারান্টিও নেই। তাই তা না করে তার সঙ্গে পাঁচ লাখ টাকার চুক্তি করলে তিনি যেভাবেই হোক জিতিয়ে দেবেন। এক্ষেত্রে তিনি গ্যারান্টি হিসেবে জেতাতে না পারলে টাকা ফেরত দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন।

শুধু তাই নয়, প্রিসাইডিং অফিসার, সহকারী প্রিসাইডিং অফিসার ও পুলিশ প্রশাসনের সহযোগিতায় তাকে জিতিয়ে দেওয়ার কথাও দিয়েছিলেন নির্বাচন কর্মকর্তা আব্দুল হান্নান। 

তবে অভিযুক্ত নির্বাচন কর্মকর্তা আব্দুল হান্নান শুরু থেকেই বিষয়টি অস্বীকার করে গেছেন। ফাঁস হওয়া অডিও ক্লিপটি নির্বাচন কমিশনারের কাছে দিয়ে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ দেওয়ার পরামর্শও দিয়েছিলেন তিনি।

প্রসঙ্গত, গত ৭ ফেব্রুয়ারি সপ্তম ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে মিঠাপুকুর উপজেলার ১৭টি ইউনিয়নে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। 

ফরহাদুজ্জামান ফারুক/এসপি