শুরু হচ্ছে পবিত্র রমজান মাস। আর এই মাসকে কেন্দ্র করে পুরান ঢাকার ফলের আড়তে ব্যাপক হারে বেড়েছে ফলের আমদানি। তবে বিক্রেতাদের অভিযোগ রমজান উপলক্ষে গতবারের তুলনায় বেড়েছে খেজুরের দাম।

শনিবার (২ এপ্রিল) বিকেলে পুরান ঢাকার সদরঘাট, ওয়াইজঘাট ও বাদামতলীর পাইকারি ফলের বাজার ঘুরে এ চিত্র দেখা যায়।

সরেজমিনে জানা যায়, খুচরা বাজারে কেজি প্রতি আম ২৫০ টাকা, আঙ্গুর ২০০-২২০ টাকা, ফুজি আপেল ১৬০- ১৮০ টাকা, হানিফুজি আপেল ১৪০ টাকা, নাশপাতি ২২০ টাকা, আনার ২২০-২৪০ টাকা, চোষা কমলা ১৫০ টাকা , মাল্টা ১৬০ টাকা, থাই পেয়ারা ৭০ টাকা, লাল ড্রাগন ৪৫০ টাকা। কলা প্রতি হালি ৩০-৪০ টাকা, মনেক্কা কেজি প্রতি ২২০ টাকা, বড় সাইজের আনারস প্রতি জোড়া ১৫০ টাকা, তরমুজ সাইজ অনুযায়ী ১৫০-৩০০ টাকা, বাঙ্গি সাইজ অনুযায়ী ৫০-১৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

ফলের আড়ৎ ঘুরে দেখা গেছে, কমলার কার্টন প্রকার ভেদে ১৩০০ থেকে ১৬০০ টাকা। এক কার্টন গ্রিন আপেল ২৫০০ থেকে ২৬০০ টাকা। লাল আপেল ২০০০ থেকে ২৫০০ টাকা। এক কার্টন মালটা বিক্রি হচ্ছে ১৩০০-১৭০০ টাকা।

খুচরা ফল বিক্রেতা মোহাম্মদ জুয়েল বলেন, ক্রেতা বেশি নেই। আগের মতো স্বাভাবিক আছে। দাম বাড়েনি তবে অন্যান্য ফলের তুলনায় আঙুর এর দাম বেশি আছে।

সদরঘাটের খুচরা বাঙ্গি ও তরমুজ ব্যবসায়ী মাসুদ আলম বলেন, রমজান উপলক্ষে বাঙ্গি বিক্রি হচ্ছে বেশি। আমার আগে একজন ব্যবসায়ী ১ ট্রাক বাঙ্গি বিক্রি করেছে। ভালো চলছে বাঙ্গি বিক্রি। তরমুজের সাইজ অনুযায়ী দাম তবে ভালো বিক্রি হচ্ছে।

খুচরা বাজারে কেজি প্রতি আজোয়া খেজুর ৩৫০ টাকা, ধাপাস খেজুর ২৬০ টাকা, কালমি খেজুর ৩০০ টাকা, ফরিদা খেজুর ২৮০ টাকা, বরই খেজুর ২৪০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে।

ওয়াইজঘাটের খুচরা খেজুর বিক্রেতা মো. আনোয়ার বলেন, রমজান উপলক্ষে খেজুর ভেদে কেজি প্রতি ২০ থেকে ৫০ টাকা করে বেড়েছে। রমজান উপলক্ষে ক্রেতা মোটামুটি আছে, বেচাকেনায় চাপ নেই।

বাদামতলী পাইকারি খেজুর বাজারে দেখা যায়, দাবাস ৫ কেজি ১০০০ টাকা, নাগাল খেজুর ১০ কেজি ১৩০০ টাকা, মরিয়ম খেজুর ৫ কেজি ২৬০০ টাকা, খালাস খেজুর ১০ কেজি ১৭০০ টাকা, রেজিজ খেজুর ৫ কেজি ৯০০ টাকা, লুলু খেজর ১০ কেজি ১৮০০ টাকা, সায়ের ১০ কেজি ১০০০ টাকা, মাবরুম ৫ কেজি ৩০০০ টাকা, কালমি ১২৫০ টাকা, সাহারি ৫ কেজি ১৩০০ টাকা, মরিয়ম খেজুর ২৪০০ টাকা, মরিয়ম ক্রাফট খেজুর ২৭০০ টাকা, তিউনিসিয়ান খেজুর ১২৫০ টাকা, বারণি ১০ কেজি ১৫০০ টাকা, আলজাজিরা বিজা খেজুর ১১৫০ টাকা, ম্যাডজল এক কেজি ১০৫০ টাকা, মাশরুক খেজুর ৫ কেজি ১১৫০ টাকা, আদম খেজুর ১৬০০ টাকা, ম্যাডজল খেজুর ৫ কেজি ৪৫০০ টাকা, বাটি খেজুর ৬ কেজি ১৫০০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে।

বাদামতলী ব্যবসায়ী বাজার সমিতির সভাপতি ও বাংলাদেশ ফ্রেশ ফ্রুটস ইমপোর্টাস অ্যাসোসিয়েশনের সেক্রেটারি মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, রমজান উপলক্ষে বেচাকেনা স্বাভাবিক আছে। তবে শিপিংয়ের ভাড়া বাড়ার কারণে গতবারের তুলনায় এবার ফলের দাম বেড়েছে। আমরা ৮০ শতাংশ যে খেজুর আমদানি করি সেটা কেজি প্রতি ৮০ টাকা। তবে যে খেজুরটা টিসিবি বিক্রি করে সেটা ১০ কেজি ১০০০ টাকা। অন্যান্য খেজুরের দাম বাড়তি থাকার কারণে ইরাকি জাহিদী খেজুর বেশি বিক্রি হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, দ্রব্যের দাম বাড়ার একমাত্র কারণ অতিরিক্ত শিপিংয়ের ভাড়া। সামনে পণ্যের দাম আরও বাড়বে। শিপিংয়ের ভাড়া ৩০০০ ডলার যেখানে ছিল সেখানে এখন ৯০০০ ডলার হয়ে গেছে। অর্থাৎ ভাড়া ৩ গুণ বাড়ছে। বিশ্ব বাজারে শিপিংয়ের ভাড়া যেখানে ১০০০ ডলার ছিল সেখানে ৪০০০ ডলার হয়েছে। মালিকদের সব টাকা শিপিং কোম্পানি নিয়ে যাচ্ছে।

এমটি/আইএসএইচ