চাল-ডাল থেকে শুরু করে নিত্যপ্রয়োজনীয় অধিকাংশ পণ্যের দামই বাড়তি। নতুন করে বাড়তি দামের তালিকায় যুক্ত হয়েছে বাঙালির প্রিয় ইলিশ মাছ। যদিও বহু আগেই এটি গরিব ও নিম্ন মধ্যবিত্তের পাত থেকে উঠে গেছে। চড়া দামের কারণে এবার ইলিশ মধ্যবিত্তের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে।

ইলিশের চড়া দাম নিয়ে মধ্যবিত্ত পরিবারের ক্রেতারা বলছেন, কষ্ট করে হলেও মাসে আগে এক-দুই বার ইলিশ কেনা যেত। কিন্তু এখন ইলিশ মধ্যবিত্তের বাজেটের বাইরে। উচ্চবিত্তের মানুষ ছাড়া এখন আর ইলিশ মাছ কেনা সম্ভব নয়।

ইলিশ ব্যবসায়ীরা বলছেন, জালে পর্যাপ্ত মাছ ধরা পড়ছে না। এ কারণে দাম কিছুটা গত এক মাসের তুলনায় বেশি। এছাড়া বাজারে সব পণ্যের দাম বেশি। এর প্রভাব মাছের বাজারেও পড়ে।

শুক্রবার (৩ জুন) সকালে রাজধানীর শুক্রাবাদ ও হাতিরপুল মাছ বাজারে ঘুরে এসব তথ্য জানা যায়।

সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, খুচরা বাজারে ১২০০-১৩০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ২০০ টাকা করে। ১ কেজি ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৫০০ টাকায়। এছাড়া, ৮০০-৯০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ মাছ বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ২০০ টাকায়।

খুচরা ইলিশ বিক্রেতা মো. ইয়াসিন বলেন, জালে মাছ খুব কম ধরা পড়ছে। ফলে দাম বেশি এখন। দাম বেশি হলেও মাছের মান এখন অনেক ভালো।

শুক্রাবাদ কাঁচাবাজারে এসেছেন ক্রেতা জাব্বার। তিনি বলেন, দেড় থেকে দুই হাজার টাকায় এক কেজি ইলিশ মাছ নেওয়া সম্ভব না। বাজারে এখন এমন কোনো পণ্য নেই, যার দাম বেশি নয়। এর মধ্যে এতো দাম দিয়ে ইলিশ আমাদের পক্ষে কেনা সম্ভব নয়।

এছাড়া বাজার ঘুরে দেখা গেছে কয়েকটি মাছের দাম স্বাভাবিক থাকলে অধিকাংশের দামই বেশি।

খুচরা বাজারের তথ্য অনুযায়ী, বাজারে প্রতি কেজি রুই (আকার ভেদে) ২৫০, ২৭০ ও ৩০০ টাকা, পাবদা ৪০০ টাকা, কাতল ৪০০ টাকা, ছোট আকারের টেংরা ৬৫০ টাকা, চাষের মাগুর ৬০০ টাকা, শিং ৫০০ টাকা, সরপুঁটি ৩২০ টাকা, মাঝারি আকারের চিংড়ি ৬৫০ টাকা ও বড় আকারের চিংড়ি ১২০০-১৪০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

এছাড়া গরিবের মাছখ্যাত তেলাপিয়া ও পাঙাশ আগের থেকে বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে। এক কেজি পাঙাশ মাছ আগে যেখানে ১৩০-১৪০ টাকায় বিক্রি হতো, এখন তা ১৬০ থেকে ১৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অন্যদিকে তেলাপিয়া আগে ১২০-১৩০ টাকা কেজিতে বিক্রি হলেও এখন বিক্রি হচ্ছে ১৭০-১৮০ টাকায়।

শুক্রাবাদ কাঁচাবাজারের খুচরা মাছ ব্যবসায়ী লিটন বলেন, সব পণ্যের দাম বাড়ার প্রভাব মাছের বাজারেও পড়েছে। আমরা আগের চেয়ে অনেক বেশি দামে মাছ কিনছি। এখন খুচরা বাজারে বেশি দামে বিক্রি না করলে, আমরা না খেয়ে মরবো।

হাতিরপুলে বাজারে করতে আসা রিকশাচালক লিমন হোসেন বলেন, আমাগো গরিবের মাছ হইলো তেলাপিয়া ও পাঙাশ। এই দুটি মাছের দামও ২০০ টাকা কেজি হইয়া যাইব মনে হয়। তাইলে তো আমাগো কপালে আর মাছ জুটব না। তাছাড়া দামের কারণে মাংসের বাজারে যাওয়ার সাহসই নাই।

এমএসি/এমএইচএস