সরকারি উন্নয়ন প্রকল্পে বেধে দেওয়া রডের দাম পুনর্বিবেচনার আহ্বান জানিয়েছেন এফবিসিসিআইয়ের আয়রন, কার্বন স্টিল, স্টেইনলেস স্টিল অ্যান্ড রি-রোলিং ইন্ডাস্ট্রিজ বিষয়ক স্ট্যান্ডিং কমিটি।

রোববার (৫ জুন) এফবিসিসিআই কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত কমিটির প্রথম বৈঠকে এ আহ্বান জানান কমিটির চেয়ারম্যান ও বাংলাদেশ স্টিল ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মানোয়ার হোসেন।

তিনি জানান, গণপূর্ত অধিদপ্তরের নতুন দর অনুযায়ী সরকারি প্রকল্পে প্রতি টন রডের দাম ৭২ হাজার টাকা করে নির্ধারণ করা হয়েছে। কিন্তু বর্তমানের প্রতি টন স্ক্র্যাপের দাম ৬২ হাজার টাকা। এর সঙ্গে ভ্যাট ও অন্যান্য কর এবং বিদ্যুৎ-গ্যাসের খরচসহ আনুষঙ্গিক অন্যান্য ব্যয় হিসাব করলে রডের উৎপাদন মূল্য সরকারের বেধে দেওয়া দামের চেয়ে বেশি। তাই নির্ধারিত দাম পুনর্বিবেচনা করার আহ্বান জানান তিনি।

এছাড়াও মেয়াদী ঋণের সময়সীমা ১০ বছর ও রডের ক্ষেত্রে ডেফার পেমেন্টের সময় ৩৬০ দিনের পরিবর্তে ৭২০ দিন ও মেশিনের ক্ষেত্রে ৩ বছরের পরিবর্তে ৫ বছর করার দাবি জানান মানোয়ার হোসেন।

দেশে রড ও সিমেন্ট খাতে উৎপাদন সক্ষমতা চাহিদার তুলনায় বেশি। তাই আগামী দুই বছরের জন্য ব্যাংক ঋণ নিয়ে এ খাতে নতুন বিনিয়োগের বিপক্ষে মত দেন তিনি।

বৈঠকে কমিটির ডিরেক্টর ইন চার্জ মো. জামাল উদ্দিন বলেন, দেশের অবকাঠামো উন্নয়নে স্টিল খাতের গুরুত্ব অনেক। রাষ্ট্রের উন্নয়নের স্বার্থে প্রতি টন রডে ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ লোকসান দিয়েও ব্যবসা পরিচালনা করছেন এ খাতের ব্যবসায়ীরা। তবে রডের দাম বাড়ার কারণে বড় বড় নির্মাণ কোম্পানি আজ তাদের ব্যবসা গুটিয়ে নিতে বাধ্য হচ্ছে।

বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব কনস্ট্রাকশন ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি প্রকৌশলী শফিকুল হক তালুকদার জানান, নির্মাণ সামগ্রীর দাম বাড়লেও চুক্তিতে নির্ধারিত দর অনুযায়ী সরকারি প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে হচ্ছে। এতে লোকসানে পড়ছেন উদ্যোক্তারা। এরইমধ্যে ২৫ শতাংশ ঠিকাদার দেউলিয়া হয়েছেন বলে জানান তিনি। ব্যবসা টিকিয়ে রাখতে সরকারি প্রকল্পে মূল্য সমন্বয়ের দাবি জানান প্রকৌশলী শফিকুল হক তালুকদার।

সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এফবিসিসিআই সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন বলেন, স্টিল ও নির্মাণ খাত বাংলাদেশের অন্যতম একটি শক্তিশালী খাত। কিন্তু এর অভ্যন্তরীণ সংকটও অনেক। কমিটিকে এসব সমস্যাগুলো চিহ্নিত করার তাগিদ দেন সভাপতি। এ খাতকে এগিয়ে নিতে এফবিসিসিআই’র পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ সহযোগিতা দেওয়ারও আশ্বাস দেন তিনি।

এফবিসিসিআইর সিনিয়র সহ সভাপতি মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু বলেন, এ খাতের উন্নয়নে জোরালো তাগিদ থাকতে হবে। এজন্য নির্মাণ ও স্টিল খাতের যৌথভাবে সেমিনার করার পরামর্শ দিয়ে এফবিসিসিআই থেকে সর্বোচ্চ সহযোগীতার আশ্বাস দেন তিনি।

এর আগে দাম সহনীয় পর্যায়ে রেখে স্বল্প মুনাফায় ব্যবসা করার আহ্বান জানান এফবিসিসিআইর সাবেক সিনিয়র সহ সভাপতি মোহাম্মদ আলী।

এসআই/এমএইচএস