বৈশ্বিক সংকট মোকাবিলা ও রপ্তানি খাতের কর বৈষম্য নিরসনে রপ্তানিমুখী সব শিল্পের করপোরেট কর তৈরি পোশাক শিল্পের মতো একই হারে ধার্য করা হচ্ছে।

বর্তমানে তৈরি পোশাক খাতে করপোরেট কর সাধারণ গার্মেন্টসের জন্য ১২ শতাংশ এবং সবুজ কারখানার জন্য ১০ শতাংশ রয়েছে।

আগামী ২০২২-২০২৩ অর্থবছরের বাজেটে রপ্তানিমুখী অন্যান্য খাতও একই সুবিধার আওতায় আসার ঘোষণা থাকছে। এর ফলে পাট, হিমায়িত মাছ, প্লাস্টিক ও চামড়া খাতে যে কর বৈষম্য রয়েছে তা আর থাকছে বলে না। অর্থ মন্ত্রণালয় ও এনবিআর সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

সূত্রগুলো জানায়, বর্তমানে তৈরি পোশাক খাতে করপোরেট কর সাধারণ গার্মেন্টসের জন্য ১২ শতাংশ এবং সবুজ কারখানার জন্য ১০ শতাংশ। অথচ পশ্চাৎপদ শিল্প হিসেবে অ্যাক্সেসরিজ শিল্প বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয়ে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখলেও তাদের নিয়মিত হারে (৩০ শতাংশ) আয়কর দিতে হয়।

বৈষম্য আছে পাট, হিমায়িত মাছ, প্লাস্টিক, চামড়া খাতে। আগামী বাজেটে রপ্তানি পণ্যের বৈচিত্র্যকরণকে উৎসাহ দিতে সব ধরনের রপ্তানিমুখী শিল্পের করপোরেট কর তৈরি পোশাক শিল্পের মতো ধার্য করা হচ্ছে। ফলে বৈদেশিক লেনদেনের চলতি হিসাবের ভারসাম্যের পার্থক্য হ্রাস পাবে।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ প্লাস্টিক পণ্য প্রস্ততকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির এক নেতা বলেন, প্লাস্টিক শিল্পের করপোরেট কর কমলে তা বিনিয়োগ বৃদ্ধিতে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে। একজন উদ্যোক্তা দেশি হোক বা বিদেশি, বিনিয়োগের আগে সবাই ওই খাতের করপোরেট কর কত সেটি খোঁজ-খবর নেন। প্লাস্টিক খাতে উচ্চ কর হার থাকায়, এ খাতে অনেক সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও অনেকে বিনিয়োগে আগ্রহ দেখায়নি। বাজেটে কর কমানো হলে এ খাতে নতুন বিনিয়োগ আসবে।

এছাড়া বাজেটে দেশীয় মোটরগাড়ি উৎপাদন শিল্পে ভ্যাট অব্যাহতি সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। ফলে দেশে তৈরি গাড়ি উৎপাদনকারীরা বাড়তি সুবিধা পাবেন। বর্তমান ফ্রিজ, এসি, টিভি, হোম অ্যাপ্লায়েন্স, মোবাইল সংযোজন, লিফট সংযোজন শিল্পে এ সুবিধা দেওয়া আছে।

তবে ফ্রিজ উৎপাদনে ভ্যাট অব্যাহতি সুবিধার মেয়াদ আগামী ৩০ জুন শেষ হওয়ায় বাজেটে ৫ শতাংশ ভ্যাট আরোপ করা হতে পারে।

বাড়ছে না করমুক্ত আয়সীমা

প্রস্তাবিত ২০২২-২০২৩ অর্থ বছরের বাজেটে করমুক্ত আয়সীমা আগের অর্থবছরের মতোই তিন লাখ টাকা রাখা হচ্ছে বলে জানা গেছে। যদিও দেশের ব্যবসায়ী ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলো উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে সাধারণ করদাতাদের একটু স্বস্তি দিতে করমুক্ত আয়সীমা বৃদ্ধির সুপারিশ করেছিল।

বর্তমানে ব্যক্তির আয়ের প্রথম ৩ লাখ টাকা পর্যন্ত মোট আয় করমুক্ত। পরবর্তী ১ লাখ টাকা পর্যন্ত মোট আয়ের ওপর ৫ শতাংশ, পরবর্তী ৩ লাখ টাকা পর্যন্ত মোট আয়ের ওপর ১০ শতাংশ, পরবর্তী ৪ লাখ টাকা পর্যন্ত মোট আয়ের ওপর ১৫ শতাংশ, পরবর্তী ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত মোট আয়ের উপর ২০ শতাংশ এবং অবশিষ্ট আয়ের ওপর ২৫ শতাংশ হারে কর আরোপ করা হচ্ছে।

নারী ও ৬৫ বছর বা তদূর্ধ্ব বয়সের করদাতাদের জন্য ৩ লাখ টাকা থেকে বৃদ্ধি করে ৩ লাখ ৫০ হাজার এবং গেজেটভুক্ত যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য করমুক্ত আয়ের সীমা ৪ লাখ ২৫ হাজার টাকা রাখা হয়েছে।

আরএম/এমএইচএস