প্রস্তাবিত ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেটে প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য ৫ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ রাখার প্রস্তাব করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (৯ জুন) জাতীয় সংসদে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল ‘কোভিডের অভিঘাত পেরিয়ে উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় প্রত্যাবর্তন’ স্লোগান নিয়ে ৬ লাখ ৭৮ হাজার কোটি টাকার বাজেট ঘোষণা করেন।

জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অধিবেশনে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

অর্থমন্ত্রী বলেন, বন্যা, অকাল বন্যা, ঝড়ো হাওয়া, শিলাবৃষ্টি, ঘূর্ণিঝড় ইত্যাদির মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত অথবা অর্থনৈতিক কোনো সংকটে কর্মহীন বা আয় হ্রাস পাওয়া নিম্ন-আয়ের মানুষদের জরুরি ভিত্তিতে আর্থিক সহায়তা দেওয়া বর্তমান সরকারের একটি অগ্রাধিকার। এ লক্ষ্যে আমরা ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেটে ‘অর্থনৈতিক ও প্রাকৃতিক দুর্যোগের অভিঘাত মোকাবিলায় তহবিল’ গঠন করেছিলাম। বিগত বছরের ধারাবাহিকতায় আগামী অর্থবছরেও এ তহবিলে ৫ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ রাখার জন্য প্রস্তাব করছি।

স্বাধীন বাংলাদেশে ১৯৭২ সালে ৭৮৬ কোটি টাকার প্রথম বাজেট ঘোষণা করেন তাজউদ্দীন আহমদ। সেই থেকে যাত্রা শুরু হয়ে আজ ৫১তম বাজেট পেতে যাচ্ছে বাংলাদেশ।

২০২২-২৩ অর্থবছরের জন্য ৬ লাখ ৭৮ হাজার ৬৪ কোটি টাকার বাজেট উপস্থাপন করা হয়েছে জাতীয় সংসদে। নতুন এ বাজেটে মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি অর্জনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হচ্ছে ৭ দশমিক ৫ শতাংশ। এতে মূল্যস্ফীতি ধরা হবে ৫ দশমিক ৫ শতাংশ।

এবারের প্রস্তাবিত বাজেটের আকার চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের তুলনায় ৭৪ হাজার ৩৮৩ কোটি টাকা বেশি। আর সংশোধিত বাজেটের তুলনায় ৮৪ হাজার ৫৬৪ কোটি টাকা বেশি। আগামী অর্থবছরের বাজেটে বড় ব্যয়ের বাজেট বাস্তবায়নে সরকারের আয়ের সম্ভাব্য লক্ষ্যমাত্রা হতে যাচ্ছে ৪ লাখ ৩৬ হাজার ২৭১ কোটি টাকা। যেখানে বাজেটে অনুদান ছাড়া ঘাটতির আকার ধরা হয়েছে ২ লাখ ৪৫ হাজার ৬৪ কোটি টাকা। আর অনুদানসহ ঘাটতি থাকবে ২ লাখ ৪১ হাজার ৭৯৩ কোটি টাকা।

২০২২-২৩ অর্থ বছরের প্রস্তাবিত বাজেটে আয়ের সম্ভাব্য লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৪ লাখ ৩৬ হাজার ২৭১ কোটি টাকা। যা চলতি ২০২১-২০২২ অর্থবছরের তুলনায় ৪৪ হাজার ৭৯ কোটি টাকা বেশি। প্রস্তাবিত বাজেটে সরকারের আয়ের খাতগুলো থেকে কর বাবদ ৩ লাখ ৮৮ হাজার কোটি টাকা আয় করার পরিকল্পনা করছে সরকার। এর মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) মাধ্যমে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে ৩ লাখ ৭০ হাজার কোটি টাকা। নতুন অর্থবছরে এনবিআরকে ৪০ হাজার কোটি টাকা বেশি রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা দিচ্ছে সরকার। এর মধ্যে এনবিআর বহির্ভূত কর থেকে আয় করার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে ১৮ হাজার কোটি টাকা। এছাড়া কর ছাড়া আয় ধরা হয়েছে ৪৫ হাজার কোটি। আর বৈদেশিক অনুদান থেকে আয় ধরা হয়েছে ৩ হাজার ২৭১ কোটি টাকা।

এসআর/এমএইচএস