বাংলাদেশের সব জেলা ও উপজেলায় ৫৬০টি মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র স্থাপনের কাজ চলমান রয়েছে। এর অধীনে চলতি ২০২১-২০২২ অর্থবছরে ১০০টি এবং ২০২২-২০২৩ অর্থবছরে ১০০টি মডেল মসজিদ উদ্বোধনের পরিকল্পনা করা হয়েছে। 

বৃহস্পতিবার (৯ জুন) জাতীয় সংসদে স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেট প্রস্তাব উপস্থাপনের সময় অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের জনগুরুত্বপূর্ণ ও ঐতিহাসিক ২ হাজার ৫৯৫টি মসজিদ, ২ হাজার ৫২৬টি কবরস্থান ও ২ হাজার ৫৬০টি ঈদগাহ সংস্কার ও উন্নয়নে প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। 

হিন্দু, বৌদ্ধ ও খ্রিস্টান কল্যাণ ট্রাস্টগুলোর মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট ধর্মাবলম্বীদের কল্যাণসহ সার্বিক কল্যাণ সাধন, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিপূর্ণ সহাবস্থান এবং শান্তিপূর্ণ সমাজ ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সরকার কাজ করছে বলেও জানান অর্থমন্ত্রী। 

তিনি বলেন, হিন্দুধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের মাধ্যমে অসচ্ছল ব্যক্তিদের বরাদ্দ এবং হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজায় বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে। বৌদ্ধ বিহারের ভিক্ষু বা শ্রমণ ও অসহায় ব্যক্তির চিকিৎসার জন্য অনুদান দেওয়া হচ্ছে। খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের জন্য তাদের ট্রাস্টের এনডাওমেন্ট তহবিলের মুনাফা থেকে চার্চ, সিমেট্রি, উপাসনালয় ইত্যাদি ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের নির্মাণ, সংস্কার, মেরামত ও উন্নয়নের জন্য অনুদান হিসেবে দেওয়া হচ্ছে। শুভ বড়দিন উদযাপনের জন্য প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ ও কল্যাণ তহবিল থেকে আর্থিক অনুদান দেওয়া হচ্ছে।

‘কোভিডের অভিঘাত পেরিয়ে উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় প্রত্যাবর্তন’ স্লোগান নিয়ে ২০২২-২৩ অর্থবছরের জন্য ৬ লাখ ৭৮ হাজার ৬৪ কোটি টাকার বাজেট জাতীয় সংসদে পেশ করা হয়েছে। নতুন এ বাজেটে মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি অর্জনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হচ্ছে ৭ দশমিক ৫ শতাংশ। এতে মূল্যস্ফীতি ৫ দশমিক ৬ শতাংশে রাখার কথা বলা হচ্ছে। প্রস্তাবিত বাজেটের আকার চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের তুলনায় ৭৪ হাজার ৩৮৩ কোটি টাকা বেশি। আর সংশোধিত বাজেটের তুলনায় ৮৪ হাজার ৫৬৪ কোটি টাকা বেশি। নতুন বাজেটে সরকারের আয়ের সম্ভাব্য লক্ষ্যমাত্রা হতে যাচ্ছে ৪ লাখ ৩৬ হাজার ২৭১ কোটি টাকা। অনুদান ছাড়া ঘাটতি ধরা হয়েছে ২ লাখ ৪৫ হাজার ৬৪ কোটি টাকা। আর অনুদানসহ ঘাটতি ২ লাখ ৪১ হাজার ৭৯৩ কোটি টাকা। 

আয়ের লক্ষ্যমাত্রা চলতি ২০২১-২০২২ অর্থবছরের তুলনায় ৪৪ হাজার ৭৯ কোটি টাকা বেশি। কর বাবদ ৩ লাখ ৮৮ হাজার কোটি টাকা আয় করার পরিকল্পনা করছে সরকার। এর মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) মাধ্যমে কর আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৩ লাখ ৭০ হাজার কোটি টাকা। নতুন অর্থবছরে এনবিআরকে আগের বছরের তুলনায় ৪০ হাজার কোটি টাকা বেশি রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা দিচ্ছে সরকার। এনবিআর বহির্ভূত কর থেকে আয় করার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে ১৮ হাজার কোটি টাকা। আর কর ছাড়া আয় ধরা হয়েছে ৪৫ হাজার কোটি। বৈদেশিক অনুদান থেকে আয় ধরা হয়েছে ৩ হাজার ২৭১ কোটি টাকা।

এসএইচআর/জেডএস